জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী আজ
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ০৯:৫১
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী আজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। বাঙালির প্রেম, দ্রোহ, সাম্য ও জাতীয় চেতনার কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী। জীবদ্দশায় বাঙালি জাতির হৃদয়ের দহনকে তিনি রূপ দিয়েছিলেন শব্দে। আর মৃত্যুর পর চারপাশে যখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে বিভেদের রেখা, তখন পথ দেখায় তার সৃষ্টি। তাইতো আজও শতাব্দী পেরিয়ে বৈষম্যহীন সমাজ গঠন, নারী মুক্তি কিংবা স্বাধীকার থেকে অভ্যুত্থানে বাঙালির জীবন পথের বাঁকে বাঁকে সঙ্গী হয়ে আছেন নজরুল।


অসীম সৃষ্টির পিপাসা বুকে নিয়ে বহুদ্বার ঘুরে ফিরেছেন শূণ্য হাতে, বঞ্চিত হয়েছেন বারবার, তবু অবিরাম সুর তুলেছেন প্রণয়ে কাব্যে আর দ্রোহে। তিনি সেই অনিবার্য উচ্চারণ, অবহেলায় যাকে এড়ানো যায় না। তাইতো সংকটের মেঘ যত ঘন হয়, ততোই স্পষ্ট হয় উঠে- চেতনার সব ভেদ রেখা মুছে দিয়ে তারই রচিত সাম্যবাদের/ সমতার সেতু।


নজরুলের সমগ্র জীবনের সৃষ্টি আর চিন্তার গভীরে মানুষই ছিল মূলমন্ত্র। সমাজের কল্যাণ বলতে তিনি বুঝেছেন মানবের কল্যাণ, তাইতো আজও সাম্যের পৃথিবী গড়ার সকল নিরব কিংবা সরব সংগ্রামে এক অদৃশ্য ছায়া হয়ে তিনি যেন হাত রাখেন বঞ্চিত মানুষের কাঁধে।


তিনি কেবল শ্রেণী বিভাজন দূর করা নয়, গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকা নারীদের আলোর দিকে যাত্রায় শত বছরের প্রথা ভেঙে প্রেম, বিরহ, সুন্দর ও মায়ার প্রতীক ছিন্ন করে নারীকে দাঁড় করিয়েছেন সংগ্রামের মঞ্চে। তার নিরব হওয়ার পর কেটে গেছে বহু বছর, তবু জীবনের সকল স্থবিরতার কালে, সংকটে কিংবা গোপন নিশিথে তার কাছেই আশ্রয়।


তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক। সাহিত্যের সব শাখায় তার বিচরণ থাকলেও তিনি মূলত কবি হিসাবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। কাজী নজরুল ইসলামের ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। তিনি গ্রামের স্থানীয় মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন। মক্তবে কুরআন, ইসলাম ধর্ম, দর্শন এবং ইসলামি ধর্মতত্ত্ব অধ্যয়ন শুরু করেন। ১৯১৭ সালের শেষদিকে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসাবে যোগ দেন। ১৯২১ সালের ডিসেম্বর মাসে কুমিল্লা থেকে কলকাতা ফেরার পথে নজরুল দুটি বৈপ্লবিক সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করেন। এই দুটি হচ্ছে বিদ্রোহী কবিতা ও ভাঙার গান সংগীত। একই সময় তিনি লিখেছিলেন আরেকটি বিখ্যাত কবিতা কামাল পাশা। ১৯২২ সালে তার বিখ্যাত কবিতা-সংকলন অগ্নিবীণা প্রকাশিত হয়।


স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে কবিকে সপরিবার বাংলাদেশে নিয়ে আসেন তৎকালীন সরকার। বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্রোহী কবি নজরুলকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে তৎকালীন সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।


চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাঙালির চেতনার কবি নজরুল।


বিবার্তা/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com