আম খেয়ে কমানো যায় ওজন! খেতে পারেন ডায়াবেটিকেরাও
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৫, ০৯:২৯
আম খেয়ে কমানো যায় ওজন! খেতে পারেন ডায়াবেটিকেরাও
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গ্রীষ্মের পাকা মিষ্টি ফল আম নিয়ে যত হইচই থাকুক না কেন, মনের সুখে এ ফল খেতে পারার সুখ থেকে বঞ্চিতই রয়ে যান ডায়াবেটিকেরা। এই ফলের ক্যালোরির পরিমাণও নেহাত কম নয়। ১০০ গ্রাম ফলে মেলে ৬০-৬৫ ক্যালোরি। একটি আমের ওজন যদি ২৫০ গ্রামও হয়, তা হলে ক্যালোরির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫০।


সে কারণেই ওজন ঝরানোর চেষ্টা করছেন যাঁরা, তাঁরাও এ ফল সরিয়েই রাখেন। কিন্তু এই যে প্রচলিত ধারণা, ডায়াবিটিস হলে আম বাদ, ওজন বশে রাখতে হলেও রসালো ফলটি উপযোগী নয়, তা কি আদৌ ঠিক?


এখনকার পুষ্টিবিদেরা কিন্তু সে কথা বলছেন না। তাঁদের মতে, ওজন কমা বা বৃদ্ধির সঙ্গে দৈনন্দিন ক্যালোরি গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। কী খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, কী ভাবে খাচ্ছেন এই সব বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। তাই শুধু আম খেলে ওজন বাড়বে তা যেমন ঠিক নয়, তেমনই ওজন বশে রাখতে হলে আম খাওয়া যাবে না, সে তথ্যও সঠিক নয়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ‘‘ডায়াবেটিকরাও আম খেতে পারেন। স্ন্যাক হিসেবে আম আমরা খেতেই বলি। তবে তার মাত্রা থাকা দরকার। একটা আম, ঠিক আছে। তার বেশি নয়।’’


আসলে আম শুধু স্বাদের জন্য 'ফলের রাজা'র তকমা পায়নি, এই ফলের গুণ অনেক। আমে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফোলেন (বি৯), ভিটামিন ই, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাসের মতো খনিজ। আমে যে শর্করা রয়েছে, তা প্রাকৃতিক। এমন শর্করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর নয়। আবার আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যথেষ্ট বেশি, কিন্তু খেলেই রক্তে শর্করার মাত্রা চড়চড়িয়ে বৃদ্ধি পাবে, সে কথাও ঠিক নয়।


তবে পুষ্টিবিদদের বক্তব্য, আম খাওয়ারও নিয়ম আছে। ভাত, রুটি, ভরপেট খেয়ে আম খেলে এক ধাক্কায় শরীরে অনেক ক্যালোরি ঢুকবে। এ ক্ষেত্রে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। সে কারণে অনন্যা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা বা সকালে স্ন্যাক্স হিসেবে আম খাওয়া যেতে পারে। জলখাবার এবং দুপুরের খাওয়ার মাঝের সময় কিংবা সন্ধ্যায় অন্য কিছু না খেয়ে একটা আম খাওয়া চলতে পারে।


পুষ্টিবিদদের বক্তব্য ওজন বশে রাখতে হলে দৈনন্দিন কাজের জন্য যতটা শক্তি খরচ হয়, ততটাই খেতে হবে। আবার যিনি ওজন কমাতে চাইছেন, তাঁর শরীরে ক্যালোরির ঘাটতি জরুরি। অর্থাৎ, হাঁটাচলা, বসা, ঘুম, বিপাকক্রিয়ায় কারও ১৮০০ কিলোক্যালোরি খরচ হলে তাঁকে তার চেয়ে একটু কম খেতে হবে। কিম্বা যদি তিনি সেই পরিমাণ খাবার খানও, তা হলে তাঁকে শরীরচর্চা করে অতিরিক্ত ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে হবে।


তাই গ্রীষ্মের মরসুমি ফল হিসাবে আম খাওয়ায় ডায়াবেটিক বা ওজন যাঁরা কমাতে চাইছেন, তাঁদের কারও কোনও অসুবিধা নেই। তবে দিনে তিন-চারটি আম খেলে বা অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেয়ে আম খেলে সমস্যা হতে পারে।


ফল হিসাবে আম অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ এবং সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে। ফলটিতে থাকা ফাইবার এবং উৎসেচক খাবার হজমে সহায়ক। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের জন্য ভাল। এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে। তাই আম বাদ দেওয়া মানে, এতগুলি উপকার বাদ পড়া।


বিবার্তা/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com