
আপনার সন্তান পড়াশোনা করতে চায় না, অনেক বেশি দুষ্টুমি করে। তাই বলে আপনি তাকে সারাক্ষণ বকাঝকা করবেন? এটা করো না, ওটা করো না—এদিকে যেও না, ওদিকে যেও না; প্রতিনিয়তই শাসনের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেন? অনেক অভিভাবকই মনে করে সুসন্তান তৈরি করতে হলে ছোট থেকেই শাসন করতে হবে!
মনোবিদদের মতে, মোটেও এই ধ্যান-ধারণা সঠিক নয়। আধুনিক প্যারেন্টিংয়ে এই চিন্তাভাবনা বদলাতে হবে। সন্তান ছোট মানে, তার মতামত দেওয়ার অধিকার নেই, তা নয়। তাই শুধু শাসন নয়। প্রথমে সন্তানের বন্ধু হতে শিখুন। তাতেই দেখবেন সন্তান সত্যি মানুষের মতো মানুষ হবে। সন্তানের বন্ধু হতে চাইল কী করবেন, রইল সে টিপস।
>> বাচ্চার সুবিধা-অসুবিধার দিকে গুরুত্ব দিন। সে আপনাকে কিছু বলতে চাইলে মন দিয়ে শুনুন। সবকিছুতে নিজের মতামত চাপিয়ে দেবেন না। প্রয়োজনে সময় নিয়ে সন্তানকে বোঝান। মনে রাখবেন, আপনাকে দেখে সন্তান শেখে, বড় হয়ে ওঠে। আপনি তার অনুপ্রেরণা। তাই আপনি যা করবেন, সে তা-ই শিখবে। আজ যে খুদের ঘাড়ে আপনি নিজের মতামত চাপিয়ে দিচ্ছেন। কাল যখন সে বড় হবে আপনাকে নিজের মতো করে পরিচালনার চেষ্টা করবে।
>> বাচ্চাদের আবেগ সামলানোর ক্ষমতা নেই বললেই চলে। তাই তারা কোনো ঘটনা ঘটামাত্রই প্রতিক্রিয়া দেয়। আনন্দ, কান্না, রাগের বহিঃপ্রকাশ তুলনামূলক অনেক বেশি তাদের। তাই বলে আপনার মেজাজ হারালে চলবে না। সন্তান খুব রেগে গেলে প্রথমে বুঝিয়ে শান্ত করুন। প্রয়োজনে বুকে জড়িয়ে ধরুন। আদর করুন। কান্নাকাটি করলে আগে কান্না থামানোর চেষ্টা করুন। তাতে সে বুঝবে আপনি সবসময় ওর পাশে আছে। আপনার ও সন্তানের সম্পর্কের বাঁধন আরও শক্ত হবে। যদিও অনেক সময় পরিস্থিতি আপনার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তারপরও আপনাকে এটুকু করতে হবে।
>> বকাঝকা করবেন না। তাকে বোঝান সবসময় সমান প্রতিক্রিয়া দেওয়া যায় না। তাই বুঝেশুনে চলতে হবে। আজ হয়তো সে বুঝবে না। দু’দিন পর দেখবেন নিশ্চয়ই বুঝবে। সেদিন আর এমন কোনও আচরণ করবে না, যার জন্য আপনি অপ্রস্তুত বোধ করেন।
>> কিশোর সন্তানের গতিবিধি, বন্ধুবান্ধবদের দিকে নজর রাখুন। তাই বলে তার ব্যক্তিগত পরিসরে সবসময় নাক গলাবেন না। তাতে সে বিরক্ত হবে। আপনার কাছ থেকে সব কিছু গোপন করার প্রবণতা তৈরি হবে। পরিবর্তে তাকে বোঝান যে এমন কিছু করো না, যাতে তোমার ক্ষতি হবে। কিংবা পারিবারিক সম্মানহানি হবে।
>> কোনো বাচ্চা বেশি চালাক। কেউ একটু বোকা। কেউ পড়াশোনায় খুব ভালো তো আবার কেউ আঁকায়। কেউ গান গায়। কারও গান পছন্দ না। তাই কারও সঙ্গে নিজের সন্তানের তুলনা করবেন না। মনে রাখবেন, প্রত্যেক শিশুর কিছু না কিছু বিশেষ গুণ রয়েছে। তুলনা করলে অন্য শিশুর গুণ সে পাবে না বরং তার মনোবল কমবে। একসময় সে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে।
>> সন্তান ও আপনার সম্পর্ককে বন্ধুত্বের রূপ দিতে চাইলে একটি রুটিন তৈরি করুন। সেই রুটিন খুদে যেমন মানবে, মানতে হবে আপনাকেও। তাতে আপনাদের দু’জনের সম্পর্কের বাঁধন শক্ত হবে। সে আপনাকে আলাদা ভাবতে ভুলে যাবে। মনে করবে, আপনি ওর প্রকৃত বন্ধু।
বিবার্তা/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]