৭ দিনের রিমান্ডে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ০০:৫৩
৭ দিনের রিমান্ডে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আবগারি দুর্নীতি কেলেঙ্কারির মামলায় গ্রেপ্তার ভারতের নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।


আগামী ২৮ মার্চ পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হেফাজতে থাকবেন তিনি।


২২ মার্চ, শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চায় দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। শুনানি শেষে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


বৃহস্পতিবার রাতে ইডির হাতে গ্রেফতার হন আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান। হাইকোর্টে আগাম জামিনের আর্জি খারিজের পরেই কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়।


গ্রেফতারের পর ইডির সদর দফতরের লকআপে রাত কাটান তিনি। রাতে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি তাকে।


ইডি দাবি করেছে, আবগারি কেলেঙ্কারির ‘মূলহোতা’ হলেন কেজরিওয়াল। এই কেলেঙ্কারিতে ৬০০ কোটিরও বেশি রুপি দুর্নীতি হয়েছে। যারমধ্যে ‘সাউথ গ্রুপ’ ১০০ কোটি রুপি দিয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িত ‘সাউথ গ্রুপ’ এবং অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন কেজরিওয়াল।


ইডি দাবি দুর্নীতির অর্থ নির্বাচনেও কাজে লাগিয়েছে আম আদমি পার্টি। এরমধ্যে তারা গোয়ার নির্বাচনে জয় পেয়েছে। তবে কেজরিওয়াল তার ওপর ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।


ভারতের ইতিহাসে কেজরিওয়ালই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন।


এদিকে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারে ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে দেশটির বিরোধী দলীয় নেতারা। তাদের মধ্যে ইন্ডিয়া জোট থেকে সম্প্রতি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অনেক নেতাও রয়েছেন। এ ঘটনায় দেশটির জনগণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ‘বিপ্লব’ করতে পারেন বলে সতর্কও করেছেন কতিপয় নেতা।


২০১১ সালে আম আদমি পার্টি (এএপি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কেজরিওয়াল। ২০১৫ সালে ২০২০ সালে মোদির শক্তিশালী দল বিজেপির বিরুদ্ধে লড়েই তুমুল নির্বাচনি জয় পেয়েছিলেন তিনি। ৭০ সদস্যের বিধানসভা নির্বাচনে ২০১৫ সালে ৬৭ এবং ২০২০ সালে ৬২টি আসন জিতেছিলেন।


কিছুদিন আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও গ্রেফতার করে ইডি। তবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হননি। জমি দুর্নীতি মামলায় তাকে গত ৩১ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতারের আগে হেমন্ত রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। তারপর ইডি তাকে গ্রেফতার করে। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন হেমন্ত কেজরিওয়ালের মতো হননি।


বিশ্লেষকরা বলছেন, কেজরিওয়ালের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। তিনি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যে স্বাধীন ক্ষমতা ভোগ করেন, দিল্লি কিংবা পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রীর তা নেই।


অন্যদিকে দিল্লিতে কেজরিওয়াল এবং কেন্দ্রের প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মধ্যে ক্ষমতার টানাপড়েন তো আছেই।


সবশেষ গেলো বছরের ১১ মে ভারতের শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। তবে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা এবং ভূমি দফতর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতেই থাকবে।


১৯ মে আদালতের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে অধ্যাদেশ জারি করে মোদি সরকার। অধ্যাদেশে বলা হয়, জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।


এসময় আপসহ অন্য বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে যে, নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা খর্ব করতে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকেও উপেক্ষা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাছাড়া আপ সরকারের যে আবগারি নীতি নিয়ে এত বিতর্ক, এত অভিযোগ, সেই বিষয়ে প্রথম সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর সাক্সেনাই। ফলে কেজরির পথ খুব একটা সহজ হবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com