ডা. মোহাম্মদ ঘনিম চার সপ্তাহ হলো তার হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় যাননি। তিনি শেষ কবে ঘুমিয়েছিলেন বা খেয়েছিলেন তা মনে করতে পারছেন না। তার বাহুতে মারা যাওয়া রোগীদের রক্তের দাগে পরনে থাকা নীল এপ্রোনটি লাল হয়ে গিয়েছে।
যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে ঘনিমের গলার স্বর ভেঙ্গে গেছে, তার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না। সে মৃত মায়ের গর্ভ হতে বাচ্চা প্রসব হতে দেখেছে, বুকের উপর কংক্রিট পরে শ্বাসনালি ভেঙ্গে যাওয়া শিশুর কষ্ট দেখেছে, নিজের কলিগ- ডক্টর, নার্সদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যেতে দেখেছে।
ঘনিম বলেন, 'আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি, সে জন্য আমরা হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছি না। যুদ্ধের ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অনেকসময় আমি একপাশে গিয়ে কাঁদতে চায়, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কাঁদার মত সময় আমার হাতে নেই।' সিএনএনকে দেওয়া এক ভয়েস মেসেজে এমনটাই বলেছেন ডা. ঘনিম।
ডা. মোহাম্মদ ঘনিম গাজার আলশিফা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক।
বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ, সরবরাহ এবং জ্বালানির তীব্র সংকটে পরেছে আল শিফা হাসপাতালটি। এরই মধ্যে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি (ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে আহত বা বাস্তুচ্যুত) ইসরাইলের উপর্যুপরি বিমান হামলা থেকে বাঁচতে আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছে।
গাজায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডাঃ মুনির আল-বুরশের মতে, শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী শিফাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে যা ভিতরে থাকা লোকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
আল বুরশ বলেন, ইসরায়েলি বিমান হামলা হাসপাতালের জেনারেটর ধ্বংস করে ফেলেছে। বৈদ্যুতিক সংযোগ কেটে ফেলেছে। যেখানে ৩৯টি শিশু এনআইসিইউ তে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ইতোমধ্যে ৩টি শিশু মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছেন বুরশ।
তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হাসপাতালটি ঘিরে রাখার বিষয় অস্বীকার করেছে। তারা সিএনএনকে জানিয়েছে যে ইসরায়েলি বাহিনী শিফার আশেপাশে হামাসের বিরুদ্ধে "চলমান তীব্র লড়াইয়ে" নিয়োজিত ছিল। সামরিক তৎপরতা এখনও চলমান থাকায় হাসপাতালের সাথে ইসরায়েলি বাহিনীর নৈকট্য সম্পর্কে অন্যকোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করে তারা।
এদিকে ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে, তারা (হামাস) হাসপাতালকে যুদ্ধে কভার হিসেবে ব্যবহার করছে। তবে হাসপাতালে কর্মরত একজন ডাক্তার এবং হামাসের সদস্যরা তা অস্বীকার করেছে। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]