পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির কাছে গুলি, নিহত ২
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:৩৫
পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির কাছে গুলি, নিহত ২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ফিলিস্তিনি এক ব্যক্তির গুলিতে এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। পরে ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টা গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ওই ফিলিস্তিনিও। ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি অবৈধ বসতির কাছে বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) এই ঘটনা ঘটে।


শুক্রবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতির কাছে গুলি চালানোর পরে একজন ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর মতে, ওই ব্যক্তি গুলি চালিয়ে একজন ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যা করেছে।


ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বলেছে, চলতি সপ্তাহে জেনিনে ইসরায়েলের দু’দিনের সামরিক আক্রমণের জবাবে বৃহস্পতিবারের এই হামলা চালানো হয়েছে।


ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, আক্রমণকারী যে ব্যক্তি নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় তাকে দখলকৃত পশ্চিম তীরের কেদুমিম বসতির কাছে তার গাড়িটি পরীক্ষা করার জন্য থামাানো হয়েছিল। গুলিবর্ষণের পর ঘটনাস্থলেই ওই সেনাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।


আক্রমণকারী তারপর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এবং পরে তাকে চিহ্নিত করে হত্যা করা হয় বলে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে।


ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা ফিলিস্তিনি ওই বন্দুকধারীকে পশ্চিম তীরের রামাল্লার পশ্চিমে কিবিয়া গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ ইয়াসিন হিলাল গিথান নামে শনাক্ত করেছে।


আল জাজিরা বলছে, যে এলাকায় গোলাগুলি হয়েছে সেখানে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ থাকেন। স্মোট্রিচ পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনার তত্ত্বাবধান করেন, যা আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।


অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শাসন ক্ষমতায় থাকা হামাস ইসরায়েলি সেনাকে গুলি করে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটি বলেছে, তাদের একজন সদস্য এই হামলাটি চালিয়েছে।


হামাস বলেছে, ‘শত্রুরা এটা জানবে যে, জেনিনে চালানো ইসরায়েলি গণহত্যা আমাদের জনগণের প্রতিরোধের প্রতি জেদ বাড়িয়েছে এবং মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের কাজের প্রতি তাদের আনুগত্যও বাড়িয়েছে।’


ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘনবসতিপূর্ণ জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিমান ও স্থল অভিযানে তিন শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া একজন ইসরায়েলি সেনাও নিহত হয়েছেন।


ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওই হামলায় অন্তত ১২০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর। হামলার কারণে প্রায় ৩ হাজার ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়।


ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ মারওয়ান আল-বারঘৌতি বলেছেন, জেনিনে ইসরায়েলি হামলা ‘ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ’ ডেকে এনেছে। দু’দিনের ওই হামলায় বহু বাড়িঘর এবং অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


বারঘৌতি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘তারা আমাদের ক্ষতি করতে চেয়েছিল। এছাড়াও তারা অ্যাম্বুলেন্স, প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী লোকজন এবং সাংবাদিকদের ওপরও গুলিবর্ষণ করেছে। এটি ভয়ঙ্কর আক্রমণ ছিল এবং খুব গভীর দাগ রেখে গেছে।’


বৃহস্পতিবারের হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তাতে ফিলিস্তিনিরা খুব ক্ষুব্ধ এবং আমরা যা দেখছি তা কেবল ফিলিস্তিনি ব্যক্তিদের প্রতিক্রিয়া।’


বারঘৌতি আরও বলেছেন, ইসরায়েলের সাথে নিরাপত্তা সমন্বয় এবং আক্রমণের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়ার অভাবের কারণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) ওপর ফিলিস্তিনিরাও গভীরভাবে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ।


উল্লেখ্য, চলতি বছর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি সহিংসতা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিম তীরে এই বছর এখন পর্যন্ত ১৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ইসরায়েলিদের লক্ষ্য করে চালানো ফিলিস্তিনি হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com