দ্বাদশে প্রথম হলেন হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম শাইক
প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:০৬
দ্বাদশে প্রথম হলেন হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম শাইক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে হিজাব আন্দোলনের সেই তাবাসসুম দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কলা বা আর্টস বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন। মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষায় তিনি ৫৯৩ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন। হিন্দি, সমাজবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানে তিনি ১০০ থেকে ১০০ পেয়েছেন। তাবাসসুমের ইচ্ছা, তিনি ‘ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি’ নিয়ে বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন।


গত বছরের জানুয়ারিতে কর্ণাটকের এক স্কুলে হঠাৎ হিজাব নিষিদ্ধ করে নির্দেশনা জারি করে কর্তৃপক্ষ, যেখানে বলা হয়, ‘হিজাব বা কোনো ধর্মীয় পোশাক পরে ক্লাস অংশ নেয়া যাবে না। বোরকা বা হিজাব পরে প্রতিষ্ঠানে এলেও শ্রেণিকক্ষে তা খুলে ফেলতে হবে। সেখানে স্কুল ইউনিফর্মই একমাত্র পোশাক।’


এরপর ক্রমেই রাজ্যের অন্যত্র এমন নির্দেশনা দিতে থাকে নানা প্রতিষ্ঠান। পরে এ নিয়ে ধর্মীয় উত্তেজনা তৈরি হয়। রাজধানী বেঙ্গালুরুতেও সেই ঢেউ আছড়ে পড়ে। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। মুসলিম ছাত্রীরা ওই নির্দেশনা বিরুদ্ধে কর্নাটক হাইকোর্টে মামলা করেন। কিন্তু কর্ণাটিক হাইকোর্ট জানিয়ে দেন, হিজাব ইসলামের অপরিহার্য অঙ্গ নয়। স্কুলের ইউনিফর্মই শেষ কথা। ওই মামলা এখনো সুপ্রিম কোর্টে বিবেচনাধীন রয়েছে।


রাজ্যে হিজাব বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তখন তাবাসসুম ও তার অন্য পাঁচ বান্ধবী বেঙ্গালুরুর স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অনেক দিন বাড়ি বসে ছিলেন। এরপর পরিবারের পরামর্শে তিনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।


দ্য টেলিগ্রাফকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তাবাসসুম বলেন, ‘বাবার কথায় আমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করি। বাবা বলেছিলেন, দেশের আইন মানা জরুরি। তেমনই জরুরি নারীর শিক্ষালাভ। আজ আমাদের নারীরা যদি শিক্ষা লাভ না করে, তবে আমাদের জাতি আরো পিছিয়ে যাবে।’


তাবাসসুম বলেন, ‘কোনো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পোশাকের ওপর সরকারি বিধি-নিষেধ থাকা উচিত নয়। শিক্ষাগ্রহণ ও ধর্মাচরণ দু’টিই আমার অধিকার। এটা খুবই অযৌক্তিক যে শিক্ষা অর্জনের জন্য আমাকে হিজাব পরিত্যাগ করতে হবে।’


তিনি আরো বলেন, ‘বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের পরামর্শে স্কুলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেই। পাঁচ বছর বয়স থেকে হিজাব পরে আসছি। হিজাব পরতে আমার ভালোও লাগে। পোশাকটির প্রতি একটা অধিকারবোধ জন্মে গিয়েছিল।’


তাবাসসুম বলেন, ‘অনেকে টিটকিরি দিয়েছে। কিন্তু সব সহ্য করেছি। মা-বাবা-বড় ভাইয়ের কথা সব সময় মাথায় রাখতাম। তারা বলতেন, প্রতিবাদের নামে পড়াশোনা ছেড়ে দিলে যারা চায় না মেয়েরা শিক্ষা পাক, তাদের উদ্দেশ্যই সফল হবে।’


বিবার্তা/নিলয়

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com