আগামী শনিবারেই জার্মানির শেষ তিনটি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন৷ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে৷
১৯৬৭ সালে কাজ শুরু হওয়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে শেষ তিনটি ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল বন্ধ করা হবে৷ জ্বালানির উৎস হিসেবে প্রচলিত পরমাণু বিদ্যুৎ চিরকালের জন্য ত্যাগ করছে জার্মানি৷ ছয় মাস আগেই সেই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হলেও ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে অনিশ্চয়তার কারণে সময়সীমা কিছু্টা বাড়িয়ে নেয়া হয়েছিল।
পরমাণু বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ে জার্মানির জোট সরকারের মধ্যেও দ্বন্দ্ব পুরোপুরি কাটেনি৷ পরিবেশবাদী সবুজ দল গত বছরই শেষ তিনটি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও উদারপন্থী এফডিপি দল জ্বালানি সংকট এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেগুলি চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিল৷ শেষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস নিজের বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ এফডিপি সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করলেও শলৎস নিজের সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছেন৷ এমনকি কেন্দ্রগুলি অকেজো করার বদলে রিজার্ভ হিসেবে রেখে দেবার প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছেন তিনি৷ সবুজ দলের নেতৃত্বে পরিবেশ মন্ত্রণালয় মনে করিয়ে দিয়েছে, যে জার্মানির শেষ তিনটি পরমাণু কেন্দ্র রিজার্ভ হিসেবে রাখা বেআইনি পদক্ষেপ হবে৷ তাছাড়া সেগুলি অকেজো করার প্রক্রিয়াটিও বেশ জটিল৷
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাবার পর জার্মানিতে জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু সরকারের তৎপরতায় দ্রুত বিকল্প উৎসের ব্যবস্থা হওয়ায় ব্ল্যাকআউট বা অন্য কোনো অঘটন ঘটেনি৷ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কাও মোটামুটি সামলে নেওয়া গেছে৷ ফলে পরমাণু বিদ্যুতের উপর নির্ভরতার আর কোনো কারণ দেখছেন না বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা, আর তাই পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে চিরতরে বেরিয়ে যেতে আর কোন বাধা রইলো না জার্মানির।
অবশ্য শনিবার বিদ্যুতের গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পরেও তিনটি পরমাণু কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হবে না৷ অনেক দিন ধরে সেই কাজের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ নিরাপদে সেই প্রক্রিয়া চালাতে ধীরে ধীরে চুল্লিগুলি ঠাণ্ডা করতে হবে৷ পানি ভরা চুল্লির মধ্য থেকে ফুয়েল এলিমেন্ট বার করে নিতে হবে৷ কেন্দ্র ভেঙে ফেলার বিভিন্ন পর্যায়ের জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে৷ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশ জটিল ও বিপদজনক হওয়ায় কাজটি যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করেই করতে হবে জার্মানিকে।
বিবার্তা/নিলয়/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]