যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তেজনা ‘পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৫২
যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তেজনা ‘পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ মহড়ার মাধ্যমে এই অঞ্চলে বিদ্যমান উত্তেজনাকে ‘পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে’ নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছে উত্তর কোরিয়া। একইসঙ্গে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জবাব ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের’ মাধ্যমে দেয়ার অঙ্গীকারও করেছে দেশটি।


উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) ৬ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার এ কথা উল্লেখ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার চোয়ে জু হিওন নামে এক ব্যক্তির নিবন্ধ প্রকাশ করেছে কেসিএনএ। রাষ্ট্রীয় এই সংবাদমাধ্যম তাকে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলে অভিহিত করেছে। প্রকাশিত ওই ভাষ্যতে ‘কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতিকে বিস্ফোরণের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়াকে একটি ট্রিগার’ সমালোচনা করেছেন চোয়ে জু।


নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অনুগামীদের বেপরোয়া সামরিক সংঘর্ষের হিস্টিরিয়া কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতিকে একটি অপরিবর্তনীয় বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, মূলত পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে।’


এর আগে গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের ‘ফ্রিডম শিল্ড’ সামরিক মহড়া শুরু করে। ২০১৮ সালের পর থেকে এই প্রথমবারের মতো এতো বড় আকারের সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।


গত মাসে হওয়া এই মহড়ায় একটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরী এবং বি-১ ও বি-৫২ বোমারু বিমান অংশ নেয়। যদিও পাঁচ বছর আগে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণকে আরও এগিয়ে নেয়ার জন্য শুরু হওয়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সমর্থনে এই মহড়া সেসময় স্থগিত করেছিল ওয়াশিংটন ও সিউল।


রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই নিবন্ধে মুখোমুখি সংঘর্ষের লক্ষ্য হিসাবে মহড়ায় বিমানবাহী রণতরীর অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের’ মাধ্যমে এবং যুদ্ধ প্রতিরোধ অনুশীলনের মাধ্যমে এই মহড়ার প্রতিক্রিয়া জানাবে পিয়ংইয়ং।


এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এসব সামরিক মহড়া কোরিয়ান উপদ্বীপকে এক বিশাল পাউডার ম্যাগাজিনে পরিণত করেছে যা যেকোনও মুহূর্তে বিস্ফোরিত হতে পারে।’


অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে এই ধরনের সামরিক মহড়াকে উত্তর কোরিয়া তাদের ওপর আক্রমণের মহড়া হিসাবে দেখে থাকে। আর তাই নিজের আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্রসহ ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি উত্তর কোরিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বলে যুক্তি দিয়ে থাকে পিয়ংইয়ং।


রয়টার্স বলছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নিজেদের সামরিক তৎপরতা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে উত্তর কোরিয়া। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি নতুন ছোট পারমাণবিক ওয়ারহেড উন্মোচন করছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনও জায়গায় আঘাত হানতে সক্ষম একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও নিক্ষেপ করছে পিয়ংইয়ং।


এছাড়া মার্চের শেষ সপ্তাহে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন একটি অ্যাটাক ড্রোনও পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া।


বৃহস্পতিবার সিউলে এক বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন পরমাণু দূতরা ওই পরীক্ষার নিন্দা করেছে এবং উত্তর কোরিয়াকে তাদের উস্কানির মূল্য চোকাতে হবে বলে সতর্ক করেছে।


বৈঠকে দূতরা ভার্চুয়াল মুদ্রা চুরি এবং হ্যাকিংসহ উত্তর কোরিয়ার অবৈধ সাইবার কার্যকলাপ রোধে প্রচেষ্টা বাড়াতে সম্মত হয়েছেন বলেও এতে বলা হয়েছে।


বিবার্তা/মোবারক/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com