রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জাতিসংঘে প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৮:০২
রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জাতিসংঘে প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রাশিয়া-ইউক্রেনের মাঝে চলমান যুদ্ধে সংঘটিত হওয়া যুদ্ধাপরাধ তদন্তের মেয়াদের বিষয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তানসহ মোট ১৭ টি দেশ এই ভোটদান থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে।


৪ এপ্রিল, মঙ্গলবার এই ভোটাভোটি হয় এবং প্রস্তাবটি পাস হয়েছে।


মূলত রাশিয়ান আক্রমণের জের ধরে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ইউক্রেনে সংঘটিত হওয়া যুদ্ধাপরাধ তদন্তের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য এই ভোটাভোটি হয়। এই ভোটাভোটির প্রস্তাব করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি)।


ভোটাভোটিতে জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবটি পাস হয়। ভোটাভোটিতে ২৮টি দেশ খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানসহ ১৭টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল। আর মাত্র দু’টি দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এই দু’টি দেশ হচ্ছে চীন ও ইরিত্রিয়া।


ভোটাভোটির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইউক্রেনের স্থায়ী প্রতিনিধি সের্গি কিসলিৎসিয়া টুইট করে ধন্যবাদ জানান। সেখানে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের জেরে উদ্ভূত ইউক্রেনে মানবাধিকার পরিস্থিতির সমর্থনে খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের আমরা অভিবাদন জানাই। মাত্র দু’টি দেশ এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ছিল। এবার যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতা হবে!’


অবশ্য এর আগেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে বিভিন্ন সময় ভোটদান থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশ-ভারত। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোটাভোটির মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ‘বিস্তৃত, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠা এবং ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার ও যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত করে।


ওই প্রস্তাবে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদ মেনে ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। সেসময় ১৪১টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। সাতটি দেশ বিপক্ষে ভোট দেয়। ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানসহ ৩২টি দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল।


তবে ভোটদান থেকে বিরত থাকার কারণ হিসেবে সেসময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, জাতিসংঘের ওই প্রস্তাবে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় টেকসই ও বাস্তবসম্মত পথরেখা না থাকায় ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ।


এছাড়া, একই কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেসময় জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিরা কাম্বোজ বলেছিলেন, ভারত সংলাপ ও কূটনীতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বহুপাক্ষিকতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


অন্যদিকে, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের শুরু থেকে চীনা নানা সময়ই জাতিসংঘে বিভিন্ন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। মঙ্গলবারের ভোটাভোটিতেও তারা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।


মূলত গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য বেইজিং সফর করেছিলেন। তবে ঠিক সেই সময়ই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকগুলো ইউক্রেনের সীমান্তে জড়ো হচ্ছিল।


উভয় নেতা সেসময় চীন-রাশিয়ার অংশীদারিত্বে ‘কোনও সীমা’ না রাখার ব্যাপারে সম্মত হন। এছাড়া, ইউক্রেন আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্কও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।


অবশ্য চীন এখন পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে নিজেকে নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে চিহিৃত করার চেষ্টা করে এসেছে এবং পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে সেটির নিন্দাও জানায়নি বেইজিং। এমনকি রাশিয়ার আগ্রাসনকে ‘আক্রমণ’ বলা থেকেও বিরত রয়েছে চীন।


বিবার্তা/নিলয়/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com