বরিশালে বাস-মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৩
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪, ০০:৩৬
বরিশালে বাস-মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৩
বরিশাল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বরিশালে তিন চাকার যানের (মাহিন্দ্রা) শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ তিন চাকার যানের শ্রমিকেরা তিনটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেন।


পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিপেটা এবং পরে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এ সময় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।


৪ মে, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকার সামনে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৫টি মাহিন্দ্রা ও তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় তিন জন মাহিন্দ্রা চালক আহত হয়েছে।


এর আগে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বরিশাল থেকে মাদারীপুরগামী একটি বাস টার্মিনাল এলাকা অতিক্রমের সময় হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই বাসশ্রমিককে মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাসশ্রমিকেরা।


বাসশ্রমিকদের অভিযোগ, দুই বাসশ্রমিককে মারধর করা ব্যক্তিরা জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী কবিরের ঘনিষ্ঠ। এ ঘটনার পর থেকে বাস শ্রমিকেরা অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখে।


বাস চলাচল বন্ধ হওয়ার পর তিন চাকার যানের (মাহিন্দ্রা) চালকেরা অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটে যাত্রী পরিবহন করলে বাসশ্রমিকেরা তাতে বাধা দেন। কিন্তু সেই বাধা উপেক্ষা করেন তিন চাকার যানের শ্রমিকেরা। এতে বাসশ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হন।


এর জের ধরে সন্ধ্যায় নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডের অপর প্রান্তে তিন চাকার যানের স্ট্যান্ডে এসে ক্ষুব্ধ বাসশ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ১৫টি মাহিন্দ্রা ভাঙচুর করেন।


এতে মাহিন্দ্রার চালক রাজু মিয়া, শাকিল আহমেদ ও আবাদুর রহমান আহত হন। তাঁদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


এ ঘটনায় মাহিন্দ্রাচালক ও শ্রমিকেরা সড়কের ওপর ভাঙচুর করা মাহিন্দ্রা রেখে মহাসড়ক অবরোধ করেন। একই সঙ্গে কাশিপুরের দিক থেকে লাঠিসোঁটা হাতে আরেক দল মাহিন্দ্রা শ্রমিক বিক্ষোভ করে নথুল্লাবাদে এসে অবরোধকারী মাহিন্দ্রা শ্রমিকদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনটি বাস ভাঙচুর করেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ সড়কের ওপর থেকে মাহিন্দ্রা ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের সরে যেতে বললে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল, কাচের বোতল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে জড়ান। পরে পুলিশ শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। তবে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ছিল।


বাস শ্রমিকদের দুটি পক্ষ এবং মাহেন্দ্র টেম্পুর (থ্রি-হুইলার) শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে শনিবার দুপুর থেকে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে বরিশাল মহানগর পুলিশের উপ- কমিশনার আলী আশরাফ ভুঞা জানান।


তিনি বলেন, “বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি নিয়ে বেলা ১২টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার দিকে বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ বাঁধে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”


ঘটনাস্থলে থাকা এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, “সন্ধ্যার পর বাস ও থ্রি-হুইলার শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ১৫-২০টি মাহেন্দ্র টেম্পু ও ৩-৪টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।”


পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে বলে জানান পরিদর্শক। নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছাড়েনি।


তবে ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো শহরে এসে আটকা পড়ে। পরে রাতে সেগুলোর চলাচল স্বাভাবিক হয়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com