ভারতের বিভিন্ন শহর এবং ঐতিহাসিক স্থানের নাম বদল করতে নতুন কমিশন গঠনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বিজেপি নেতার দায়ের করা মামলার শুনানিতে সোমবার ভারতের শীর্ষ আদালত বলেছে, অতীতকে খুঁড়বেন না। এমন কাজ করবেন না যা বৈষম্য তৈরি করবে। দেশকে উত্তপ্ত করবেন না।
ভারতের বহু ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনা তৈরি করেছেন মুঘলরা। এর বেশিরভাগ নামও তাদের দেয়া। এসব নাম নিয়ে বহুদিন ধরে আপত্তি তুলে আসছে কট্টর হিন্দুত্ববাদিরা। অনেক জায়গার নাম এরই মধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। এ নিয়ে ভারতে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এবার এ বিষয়ে কড়া মন্তব্য করলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায় আদালতে আবেদনে দাবি করেন, ভারতের একাধিক শহর এবং ঐতিহাসিক স্থানের নামকরণ করা হয়েছে ‘আক্রমণকারী’দের নামে। তাই ওই জায়গাগুলোর নাম পরিবর্তন করা হোক। শহর এবং ঐতিহাসিক স্থানের ‘আসল নাম’ খুঁজে বের করা হোক। কারণ ভারত ইতিহাসের দাস হয়ে থাকতে পারে না।
এ জন্য একটি ‘নামবদলের কমিশন’ (রিনেমিং কমিশন) গঠনের আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন ওই বিজেপি নেতা। এই মামলার উদ্দেশ্য নিয়েই সোমবার প্রশ্ন তোলে বিচারপতি কেএম জোসেফ এবং বিভি নাগারত্নের বেঞ্চ।
মামলার শুনানিতে ভারতের শীর্ষ আদালত বলেন, ‘ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। হিন্দু শুধু একটা ধর্ম নয়। এটা একটা জীবনধারা। হিন্দু ধর্মে কোনও গোঁড়ামি নেই।’
বিজেপি নেতার উদ্দেশে আদালতের মন্তব্য, অতীতকে খুঁড়বেন না। এমন কাজ করবেন না, যা বৈষম্য তৈরি করবে। দেশকে উত্তপ্ত করবেন না। আদালত আরও বলেছে যে, দেশের ইতিহাস কখনই বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয় ধরাতে পারে না।
সম্প্রতি মুঘল গার্ডেনের নাম বদলেছে ভারত সরকার। নতুন নাম দেয়া হয়েছে ‘অমৃত উদ্যান’। এর আগে বহু ইমারত, রাস্তা, স্টেশন এমনকি শহরের নাম বদলেছে বিজেপি সরকার। সেগুলোর পুরনো নামের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল মুঘলরা। উত্তরপ্রদেশের মুঘলসরাই স্টেশনের নাম বদলে হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়।
দিল্লির রাজপথের নাম হয়েছে কর্তব্যপথ। ইলাহাবাদের নাম হয়েছে প্রয়াগরাজ। এই নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে বিজেপি সরকার। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতার নামবদল সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত।
সূত্র: আনন্দবাজার
বিবার্তা/সোহেল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]