লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে বিক্ষোভে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিক্ষোভকারীরা দেশটির একটি বিমানবন্দরে হামলার চেষ্টা করে। এসময় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
এক মাস ধরেই দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেরুর পুনো অঞ্চলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জুলিয়াকাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে রক্তপাতের নতুন এই ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় ন্যায়পাল অফিসের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন।
গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় দেশটির সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্টিলোকে। পরে অল্প সময়ের ব্যবধানে তাকে বন্দি করা হয়। আর এরপর থেকেই কার্যত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে রয়েছে পেরু।
অবশ্য অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই মেক্সিকোর আশ্রয়ে চলে যেতে চেয়েছিলেন পেদ্রো। তবে তার দেহরক্ষীরা তাকে রাজধানী লিমার মেক্সিকান দূতাবাসে আশ্রয় নিতে বাধা দেয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিনা বোলোয়ার্তে।
পেরুর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ৬০ বছর বয়সী দিনা। তবে কাস্টিলোকে ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তারের পর দায়িত্ব গ্রহণ করা দিনা বোলোয়ার্তের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এএফপি বলছে, বামপন্থি কাস্টিলোকে অপসারণে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা বোলোয়ার্তের পদত্যাগ এবং অবিলম্বে নতুন নির্বাচন দাবি করেছেন। পেরুর একটি টিভি চ্যানেলকে ক্যালোস মঙ্গে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সোমবার জুলিয়াকাতে নিহত ব্যক্তিদের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
সোমবারের প্রাণহানিসহ সামগ্রিকভাবে কাস্টিলোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জেরে সৃষ্ট বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে এখন লাতিন আমেরিকার এই দেশজুড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে।
জুলিয়াকার মেয়র অস্কার ক্যাসেরেস শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মরিয়া আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘পেরুভিয়ানরা একে অপরকে হত্যা করছে। আমি সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’
বিক্ষোভকারীরা অবশ্য গত শনিবার জুলিয়াকা বিমানবন্দর দখল করার চেষ্টা করে। সেসময় বিমানবন্দরটি পুলিশ এবং সৈন্যদের পাহারায় সুরক্ষিত ছিল।
এএফপি বলছে, বলিভিয়া সীমান্তের পুনো অঞ্চলে জুলিয়াকা শহরটি অবস্থিত। এই অঞ্চলটি আয়মারা আদিবাসী গোষ্ঠীর অনেক লোকের বাসস্থান। মাসখানেক আগে রাজনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে পুনো অঞ্চলটি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।
বিবার্তা/বর্ষা/কেআর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]