শিরোনাম
মোদির কাছেই শিখেছি কী করা উচিত নয়: রাহুল
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:৩৫
মোদির কাছেই শিখেছি কী করা উচিত নয়: রাহুল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল তখন সবে স্পষ্ট হচ্ছে। বিজেপি হারছে সব রাজ্যেই। দশ জনপথে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর দিকে তাকিয়ে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন মা সোনিয়া গান্ধী। দলের নেতাদের বললেন, এটি রাহুলের মেহনতের ফসল।


রাহুল সংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন রাতে। বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বললেন, ২০১৯ সালে আর ফিরছেন না মোদি। প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছেই শিখেছি, কী করা উচিত নয়। ২০১৯-এর লড়াইয়ের জন্য দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে ‘বব্বর শের’ (সিংহ) বললেন তাদের।


মধ্যপ্রদেশের ফল ঘোষণা দেরি হওয়ায় রাহুল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অনেক রাতে। পরের পর বাক্যবাণে বিঁধে থাকেন মোদিকে।


রাহুল বলেন, এক, ভারতের হৃৎস্পন্দন শুনতে অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দুই, দুর্নীতির মতো বিষয়কে সামনে রেখে ক্ষমতায় এসেছেন মোদি। মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে। তারা বুঝে ফেলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত। তিন, ২০১৪-তে মানুষ বিশাল সুযোগ দিয়েছিলেন মোদিকে। যুবক, কৃষক, দেশের কথা শুনলেনই না। চার, ঔদ্ধত্য এসে গেছে। আমি তার থেকেই শিখেছি, মানুষের কথা শুনে কাজ করতে। বিনয়ী হতে। পাঁচ, একুশ শতকের দিশা দেখাতে পারবেন না মোদি। আমরা কোনো আক্রমণ না করেই তা দেব।


চোখা বাক্যবাণ বুনে চলার ফাঁকে গল্পও জুড়লেন রাহুল। তিনি বলেন, মাকে বলছিলাম, ২০১৪ সালের ভোট আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। নরেন্দ্র মোদিও শিখিয়েছেন, কী করতে নেই। প্রধানমন্ত্রী পঙ্গু হয়ে পড়েছেন। বিরোধীদের জবাব দেবেন কী, সেই চাপই তো নিতে পারছেন না। জবাবও দিতে পারছেন না। তার জন্য সত্যিই খারাপ লাগে।


রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশে দু’জন করে, ছত্তিশগড়ে অন্তত তিনজন মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। কী ভাবে সামলাবেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী রাহুল বলেন, এটা বড় বিষয় নয়। মসৃণভাবে মিটে যাবে।


এদিকে মধ্যপ্রদেশের ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই কংগ্রেসকে সমর্থন জানালেন মায়াবতী। পাশে দাঁড়িয়েছেন অখিলেশ যাদবও। ফলে মধ্যপ্রদেশে সরকার গঠনে কংগ্রেসের সামনে আর কোনো বাধা রইল না। নিজেদের ১১৪টি আসনের সঙ্গে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) দু’টি আসন এবং সমাজবাদী পার্টির (এসপি) একটি মিলিয়ে নিয়ে মোট আসন সংখ্যা দাঁড়াল ১১৭। ২৩০ আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১১৬। উত্তরপ্রদেশের দুই দল কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ানোয় ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও গো-বলয়ে নয়া সমীকরণের সূত্রপাত হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।


রাহুলের সংবাদ সম্মেলন শেষে দলের নেতারা বলেন, আজ বিজেপির ফল ভাল হলে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের দাপাদাপি, ঔদ্ধত্য দেখতেন! রাহুল জয়ের পরেও বিনয়ী।


এ কথা বলার কারণ, রাহুল এ দিন শুরুতেই বলেছেন, মিজোরাম ও তেলেঙ্গানায় জিততে পারিনি। আফসোস আছে। কিন্তু বাকি তিন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীরা জনতার জন্য যা কাজ করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। সময় বদলের, সেই কাজকেই আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব।


বিজেপির কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার ডাক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ তাদের হারিয়েছি। ২০১৯ সালেও হারাব। কিন্তু কাউকে দেশ থেকে মুছে ফেলা আমাদের লক্ষ্য নয়।


ভোটে বিপর্যয়ের পরে মোদি-অমিত, কেউই প্রকাশ্যে আসেননি। মুখোমুখি হননি সাংবাদিক বা দলের নেতা-কর্মীদের। টুইট করেই দায় সেরেছেন রাতে।


ভোটের ফল জানার পরে উত্তরের অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে দক্ষিণের এম কে স্ট্যালিনের মতো বহু নেতাই অভিনন্দন জানিয়েছেন রাহুলকে। মোদি সমালোচনা করার এমন সুযোগ ছাড়েননি শিবসেনা প্রধান রাজ ঠাকরে। রাহুলকে নিয়ে টুইট করেছেন তিনিও।


বেকারি ও কৃষক অসন্তোষ দূর করাকে কেন্দ্রে রেখে বিরোধীদের অভিন্ন রোডম্যাপও বলেছেন রাহুল। তুলেছেন রাফাল প্রসঙ্গও। সংবাদ সম্মেলন শেষ করেছেন দলের কর্মীদের একরাশ অভিনন্দন জানিয়ে। কঠিন পরিস্থিতিতেও ‘বব্বর শের’-এর মতো লড়ে বিজেপিকে হারানোর জন্য। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com