শিরোনাম
গো-হত্যা নিয়ে উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ, সংঘর্ষে নিহত পুলিশসহ ২
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:১৯
গো-হত্যা নিয়ে উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ, সংঘর্ষে নিহত পুলিশসহ ২
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গো-হত্যার গুজবে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মৃত্যু হয়েছে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুইজনের। গুরুতর আহত আরো দুই পুলিশকর্মী।


বুলন্দশহরে সোমবার সকাল থেকে সারাদিন চলে অবরোধ-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর-গুলি ছোড়া, পাল্টা পুলিশের গুলি ছোড়া, থানায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়া।


পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বুলন্দশহরের স্যানা মহকুমা এলাকায় মাহু গ্রামের বাইরে জঙ্গল লাগোয়া একটি মাঠে প্রায় ২৫টি মৃত গরু পগে থাকতে দেখা যায় বলে গুজব রটে। গো-হত্যার প্রতিবাদে সকাল ১১টা নাগাদ ওই এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। ট্র্যাক্টর-ট্রলি ভরে ওই মৃত গরু নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকে এলাকার চারশতাধিক লোক। খবর পেয়ে অবরোধ সরাতে সেখানে পৌঁছন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংসহ পুলিশকর্মীরা।


বুলন্দশহরের জেলাশাসক অনুজ কুমার ঝা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের অবরোধ তুলতে অনুরোধ করায় কোনো কাজ হয়নি। বরং ওই অবরোধকারীদের মধ্যে থেকে দুষ্কৃতীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। এমনকি এলাকার চিংরাবটি পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালানো ছাড়াও একটি পুলিশ ভ্যানে আগুন লাগিয়ে দেয়া দেয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকে ইট-পাথর ছোড়া হয়। এমনকি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিও চলে।


ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং


বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। গুলিতে জখম হন সুমিত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরের আঘাতে গুরুতর আহত হন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।


অন্যদিকে সুমিতকে গুরুতর আহত অবস্থায় মেরঠের এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি।


ওই পুলিশ কর্মকর্তা এক সময়ে গোরক্ষকদের হাতে দাদরির মোহাম্মদ আকলাখের খুনের ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। পরে অবশ্য তাকে সরানো হয়।


পুলিশের একটি সূত্র বলছে, বিক্ষোভকারীদের গুলিতে মারা যান সুবোধ। পুলিশ ভ্যানসহ বেশ কিছু গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটির সদস্যরা। আশপাশের এলাকা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী আনা হলেও রাত পর্যন্ত পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।


পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় ৫ কোম্পানি র‌্যাফসহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসকসহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা।


উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) আনন্দ কুমার জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এলাকা উত্তপ্ত হলেও এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালীন কী ভাবে সুমিতের গায়ে গুলি এসে লাগল, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে। গোটা ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।



উত্তরপ্রদেশের এই পরিস্থিতির নিন্দা করে সরব হয়েছে সব বিরোধী দল। তাদের বক্তব্য, একের পর এক জায়গার নাম পাল্টে হিন্দুত্বের জিগির তুলছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এতে ধর্মীয় উন্মাদনা বাড়ছে। পাশাপাশি, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ক্রমশ ভেঙে পড়ছে। খুন-ধর্ষণ-ধর্মীয় গোলমালের ঘটনা বেড়েই চলেছে।


বুলন্দশহরে সংখ্যালঘুর সম্প্রদায়ের তিন দিনের একটি ধর্মসভা শুরু হয়েছে। এই ঘটনার ফলে যাতে কোনোভাবে উত্তেজনা না ছড়ায় সে দিকেও লক্ষ্য রাখছে জেলা প্রশাসন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com