শিরোনাম
পরকীয়া অপরাধ নয়: রায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৪১
পরকীয়া অপরাধ নয়: রায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
ফাইল ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পরকীয়া অপরাধ নয়। ভারতীয় দণ্ডবিধির পরকীয়া সংক্রান্ত ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।


শীর্ষ আদালত বলেছে, নিছক পরকীয়া কখনো অপরাধ হতে পারে না। তবে পরকীয়া সম্পর্কের কারণে যদি জীবনসঙ্গী আত্মহত্যা করে এবং আদালতে যদি তার প্রমাণ দাখিল করা যায়, তবেই এটি অপরাধে প্ররোচণা হিসেবে গণ্য হবে।


ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে আইনটি বাতিলের রায় ঘোষণা করেন।


রায়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই আইন স্বেচ্ছাচারীতার নামান্তর। নারীদের স্বাতন্ত্র্য খর্ব করে। ইংরেজ শাসনকালে তৈরি আইন চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতেই এই রায় শীর্ষ আদালতের।


১৮৬০ সালের ওই আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি কোনো নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করলে এবং ওই নারীর স্বামীর অনুমতি না থাকলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা বা উভয়ই হতে পারে।


বিবাহিত নারীকে ‘অপরাধের শিকার’ বিবেচনা করে আইনে সম্পর্ক স্থাপনকারী পুরুষকেই দোষী হিসেবে গণ্য করার বিধান ছিল।


এই আইনকেই চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীদের দাবি ছিল, ঔপনিবেশিক শাসনকালে পুরুষদের সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা হত নারীদের। তার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছিল এই আইন। কিন্তু বর্তমান সমাজ ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে এই আইন বাতিল করা হোক।


আরো দাবি ছিল, একই অপরাধে পুরুষকে দোষী করলে নারীদেরও দোষী করতে হবে। সেই মামালতেই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।


প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি এএম খানউইলকর বলেন, পরকীয়া বিবাহবিচ্ছেদের কারণ হতে পারে। তবে এটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে না।


দীপক মিশ্র বলেন, যদি কোনো পুরুষ কোনো বিবাহিত নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। যে আইন ব্যক্তিগত মর্যাদায় আঘাত করে, নারীদের সমানাধিকারে বাধা দেয়, তা সম্পূর্ণভাবে সংবিধানবিরোধী।


তিনি বলেন, নারীর ব্যক্তিগত সম্ভ্রম রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বামী তার প্রভূ নন। আইনগতভাবে এক লিঙ্গের থেকে অন্য লিঙ্গকে খাটো করে দেখানোটা ভুল।


একই মত জানিয়ে বিচারপতি আরএফ নরিম্যানও বলেন, ৪৯৭ ধারা একটা সেকেলে আইন। এটা অসাংবিধানিক এবং এটি বাতিল করা উচিত।


বেঞ্চের আর এক বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, এই ধারা নারীদের সম্ভ্রম ও আত্মসম্মানের পক্ষে ধ্বংসাত্মক। কারণ এই আইন নারীকে স্বামীর ভূমিদাস হিসেবে বিবেচনা করে।


শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের একমাত্র নারী বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রাও একই মত পোষণ করেন। তিনিও ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রী কখনোই স্বামীর ছায়া নন। সূত্র: আনন্দবাজার ও এই সময়


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com