
এক এক করে দশটি সুঁচ বের করা হলো ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর গলা থেকে। অপরূপা বিশ্বাস নামে ওই কিশোরীকে জটিল অস্ত্রোপোচারের মাধ্যমে বের করা হয় ওইসব সুঁচ।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের অক্ষয় বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী অপরূপা। তার গলায় আটকে গিয়েছিল ওই সুঁচগুলো।
গত ২১ জুলাই স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পরই গলায় অসহ্য ব্যাথা অনুভব করে অপরূপা। বাবা-মাকে বিষয়টি জানায় সে। তাদের ধারণা ছিল- ঠাণ্ডা লেগেই হয়তো মেয়ের গলায় ব্যথা হয়ে থাকতে পারে। ফলে তারা কেউই বিষয়টিতে খুব একটা পাত্তা দেননি। কিন্তু খেতে বসে হঠাৎ করেই অচেতন হয়ে পড়ার পরই টনক নড়ে বাবা-মায়ের। দেরি না করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে।
সেখানে এক্সরে করে দেখা যায় অপরূপার খাদ্যনালী ভেদ করে বেশ কয়েকটি সুঁচ আটকে আছে! এর পরই গত বৃহস্পতিবার ওই কিশোরীকে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে নেয়া হয়। ভর্তি করা হয় নাক-কাল-গলা (ইএনটি) বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. মনোজ মুখার্জির অধীনে।
মঙ্গলবার ওই হাসপাতালেই জরুরি ভিত্তিতে ওই কিশোরীর অস্ত্রোপচার করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অস্ত্রোপোচার শেষে উদ্ধার করা হয় সুঁচগুলো।
অস্ত্রোপোচার শেষে চিকিৎসক মনোজ মুখার্জি জানান, ‘অপরূপা আপাতত বিপদমুক্ত। তবে আগামী দুই দিন পরে আবার এক্সরে করে দেখতে হবে খাদ্যনালীর মধ্যে কিছু রয়ে গেল কি না। তারপরই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
তবে কী কারণে ওই কিশোরীর শরীরে এতগুলো সুঁচ গিয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অস্ত্রোপোচারের চিকিৎসক মনোজ মুখার্জি জানান, সুঁচগুলো যেভাবে অপরূপার শরীর থেকে বের করা হয়েছে তা কোনওভাবেই গিলে খায়নি ওই কিশোরী। সুঁচগুলো বাইরে থেকে তার গলায় ফুঁটিয়ে দেয়া হয়েছিলো। আর তা থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছে কোনো তান্ত্রিক কিংবা সোশ্যাল সাইটে কোনো ছবি দেখেই মৃত দাদাকে ফিরে আশায় এই কাজ করে থাকতে পারে ওই কিশোরী। কারণ কয়েকদিন আগেই তার দাদার মৃত্যু হয়। আর দাদার মৃত্যুর ঘটনায় মানসিক অবসাদের কারণে ভুগছিল ওই কিশোরী।
তবে প্রকৃত কারণ জানতে মনোবিদের সাহায্য নেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আপাতত ওই কিশোরীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
কয়েকদিন আগেই কলকাতার বাসিন্দা প্রদীপ কুমারের পাকস্থলীতে জমা থাকা ৬৩৯টি পেরেক অস্ত্রোপাচর করে বের করেছিলেন চিকিৎসকরা। মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রদীপ কুমারকে অস্ত্রোপচার করে শাপমুক্ত করেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সার্জনরা।
সম্প্রতি নেহা সাউ নামে ১২ বছর বয়সী এক নাবালিকার পাকস্থলী থেকে আড়াই কেজি চুল মিলেছিল। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরাও ২১ বছর বয়সী রবি দাস নামে এক যযুবকের পাকস্থলী থেকে লোহার রড, চামচ, জিভছোলা, টুথব্রাশ বের করেন।
বিবার্তা/ডিডি/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
৪৬, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
কারওয়ান বাজার (৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১২১৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: bbartanational@gmail.com, info@bbarta24.net