শিরোনাম
নাম আছে তো তালিকায়! শঙ্কায় দেড় কোটি মানুষ
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০১৮, ০৯:১৮
নাম আছে তো তালিকায়! শঙ্কায় দেড় কোটি মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত খসড়া সোমবার সকাল পৌনে ১০টায় প্রকাশিত হবে। কড়া নিরাপত্তায় মোড়া হয়েছে পুরো রাজ্য। প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর সীমানাতেও চলছে কড়া নজরদারি।


রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি উত্তেজনা কমাতে ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। দিসপুর ও সব জেলায় তৈরি হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এনআরসির সমন্বয়রক্ষাকারী আমলা প্রতীক হাজেলা জানিয়েছেন, এনআরসি কেন্দ্রের পাশাপাশি ৭৮৯৯৪০৫৪৪৪ নম্বরে এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপ করে, অনলাইনে ও ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন নম্বর ০৩৬১-২৪৬৩৩০৩-এ ফোন করে তালিকায় নাম উঠেছে কি না জানা যাবে।


১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ মধ্যরাতের আগে আসামে আসা ব্যক্তি ও তাদের বংশধরদের নামই এনআরসিতে উঠবে। ২০১৫ সালে রাজ্যে এনআরসি নবীকরণের কাজ শুরু হয়েছিল। কয়েক দফায় তারিখ পিছোনোর পরে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম খসড়া প্রকাশিত হয়। ৬৮ লাখ ২৭ হাজার পরিবারের তিন কোটি ২৯ লাখ আবেদনকারীর মধ্যে প্রথম খসড়ায় ১ কোটি ৯০ হাজারের নাম উঠেছিল।


কিন্তু তথ্যে গরমিল, ৪৮ হাজারের বেশি বিবাহিত নারীর জমা দেয়া পঞ্চায়েতের প্রমাণপত্র গ্রাহ্য না হওয়া মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখ নাম প্রথম তালিকা থেকে বাদ পড়বে বলে জানিয়েছেন হাজেলা।


এনআরসির আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা পড়েছিল সাড়ে ৬ কোটির বেশি নথি। অনেকের ‘লিগ্যাসি ডেটা’ ও বংশবৃক্ষ যাচাই করার জন্য ভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হলেও পশ্চিমবঙ্গসহ অনেক রাজ্য যাচাই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করেনি বলে আগেই দাবি করেছেন হাজেলা। ফলে তথ্য যাচাই অসম্পূর্ণ থেকেছে।


আসাম পাবলিক ওয়ার্কসের দায়ের করা বৈধ নাগরিকত্ব সংক্রান্ত মামলার জেরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও তদারকিতে এনআরসির কাজ চলছে।


হাজেলা জানান, এনআরসি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশের পরে ফের নতুন করে আবেদনপত্র জমা নেয়া হবে।



চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি প্রকাশের এক সপ্তাহ পরে ৭ আগস্ট থেকে ফের আবেদনের সুযোগ মিলবে। রাজ্যের এনআরসি কেন্দ্রগুলোতে তিন ধরনের ফর্ম দেয়া হবে। এই ফর্ম দিয়ে নাম বাদ পড়া পরিবারগুলো নতুন করে আবেদন করতে পারবে। তালিকায় নাম, ঠিকানা, ছবিতে কোনো সংশোধনী থাকলে তার জন্যও আবেদন করা যাবে। অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও ফর্ম পাওয়া যাবে।


প্রথম খসড়ায় বরাক ও ব্রহ্মপু্ত্র উপত্যকায় বাঙালিদের নাম কম ওঠায় বাংলাভাষীদের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সংখ্যালঘুদের মনেও নাম বাদ পড়ার তীব্র আশঙ্কা। গৌহাটি হাইকোর্টের নির্দেশে ডি-ভোটার (সন্দেহজনক ভোটার) ও তাদের বংশধরদের নামও তালিকার বাইরে রাখা হচ্ছে।


আসামের মু্খ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের কথায়, ৮৫৫ জন শহীদের প্রাণের বিনিময়ে হওয়া আসাম চুক্তির ফলশ্রুতি এনআরসি। সোমবারের তালিকা চূড়ান্ত খসড়া মাত্র। শেষ তালিকা নয়। নাম বাদ পড়লেই আটক শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে না বা বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হবে না।


তিনি বলেণ, প্রকৃত ভারতীয়েরা আবেদন জানানো ও নাম ওঠানোর পর্যাপ্ত সুযোগ পাবেন। ৭ আগস্ট থেকে এনআরসি কেন্দ্র ও অনলাইনে তিন ধরনের আবেদনপত্র মিলবে।


প্রদেশ কংগ্রেসের অভিযোগ, এনআরসি প্রক্রিয়াকে বিভেদনীতির হাতিয়ার করতে চাইছে শাসক বিজেপি। ভাষাগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত চলছে। তাই নাম বাদ পড়া ভারতীয়দের সাহায্য করতে প্রত্যেক জেলায় আইনি সাহায্যকেন্দ্র খুলবে দল।


এ দিকে রাজ্যের আটক শিবিরে বন্দি ৫২ জন বাংলাদেশীকে সোমবার বাংলাদেশে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু সোমবার পরিস্থিতি সংবেদনশীল থাকবে আঁচ করে দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর সীমান্ত দিয়ে রবিবারই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়।


এখন আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে এক হাজারেরও বেশি বিদেশি বন্দি রয়েছে। সর্বশেষ সরকারি হিসেব বলছে, আসামে ডি ভোটারের সংখ্যা ১,২৫,৩৩৩। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন আদালত ২০ হাজার ৫৭৮ জনকে ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com