শিরোনাম
মোদির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব, ভোট শুক্রবার
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০১৮, ০৯:৩৫
মোদির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব, ভোট শুক্রবার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্ট লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনার জন্য গৃহীত হয়েছে। বর্ষা অধিবেশনের প্রথম দিন বুধবার সকালেই লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন গ্রহণ করেন এই প্রস্তাব।


তেলেগু দেশম পার্টির একজন সংসদ সদস্য প্রথম প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। পরে অন্যান্য বিরোধী দল কংগ্রেস, তৃনমূল কংগ্রেস, ন্যাশিওনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার (মার্ক্সিসিস্ট) পার্লামেন্ট সদস্যরাও অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ দেন স্পিকারকে।


স্পিকার সুমিত্রা বিরোধী দলীয় এমপিদের আনীত ওই প্রস্তাব গ্রহণ করে আগামী শুক্রবার আলোচনা ও ভোটাভুটির দিন নির্ধারণ করেছেন।গত ১৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম লোকসভায় কোনো অনাস্থা প্রস্তাব ভোটাভুটির জন্য গৃহীত হলো।


স্পিকারের সিদ্ধান্তে কিছুটা অবাক হয়ে যায় পুরো বিরোধী শিবির। প্রায় প্রতিটি দলই মনে করেছিল খরিজ হবে অনাস্থা প্রস্তাব। বিরোধী দলগুলো চাইছিল আলোচনার দিন পিছিয়ে দেয়া হোক। সবচেয়ে আগে এমন দাবি পেশ করেন তৃণমূল এমপিরা। কারণ ২১ জুলাই, শনিবার তৃণমূলের শহীদ দিবস। তারা বলেছিলেন, যেহেতু ২১ জুলাই তাদেরকে কলকাতায় শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হবে সেহেতু ২০ তারিখে যেন ভোটাভুটির দিন নির্ধারণ করা না হয়।


এদিকে স্পিকার প্রথমে জানিয়েছিলেন, নিয়ম অনুযায়ী ১০ দিনের মধ্যে ভোটাভুটির দিন স্থির করা হবে। কিন্তু বিরতির পরে পার্লামেন্টের কার্যক্রম আবার শুরু হলে তিনি জানিয়ে দেন, ২০ জুলাই প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণ করা হবে।


এরপর তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির দিন তৃণমূল এমপিদের পার্লামেন্টে হাজিরা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়ে দেন।


এদিকে বিজেপির পার্লামেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার বিরোধীদের সমালোচনা করে বলেছেন, অনাস্থা নিয়ে আলোচনা করতে সরকার রাজি কিন্তু বিরোধীরা পিছু হটছে। আসলে এভাবেই বিরোধীদের জবাব দেয়ার পথ ধরেছে বিজেপি। তাদের যুক্তি সারাদিন ধরে হয়ে চলা এই আলোচনায় অংশ নিলে সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের জবাব দেয়া যাবে।


একই সাথে বিজেপি বিরোধী জোট কী অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটাও বোঝা যাবে। আসলে বিজেপি জোট এনডিএ’র বাইরে থাকা সব দল যে কংগ্রেসের সাথে নেই সেটাই দেখাতে চায় বিজেপি। তাছাড়া বড় ব্যবধানে অনাস্থা খারিজ করে বিশেষ বার্তাও দিতে চায় বিজেপি।


এছাড়া বিজেপির এখনো পর্যন্ত পরিকল্পনা, অনাস্থা বিতর্কে মোদি নিজেই যাবতীয় আক্রমণের জবাব দেবেন।


উপনির্বাচনে হারের ফলে লোকসভায় বিজেপির এমপি সংখ্যা কমে ২০১৪ সালের তুলনায় কমে (স্পিকারকে ধরে) ২৭৪-এ নেমে এসেছে। বিজেপির দাবি, তাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে অসুবিধা হবে না। কারণ বিরোধীরা এর ধারেকাছেও পৌঁছতে পারবে না।


লোকসভায় সদস্যের সংখ্যা ৫৪৩। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে দরকার ২৬৮ ভোট। বিজেপির শরিকসহ সদস্য সংখ্যা ৩১৫ আর বিরোধী শিবিরে আছে মাত্র ১৫২ সদস্য।


এদিকে বিরোধীদের সামনে চ্যালেঞ্জ হল, সব বিরোধী ভোটকে এককাট্টা রাখা। বিরোধী জোট ভাঙতে দিতে চান না বলেই ২১ জুলাইয়ের শহীদ দিবস সত্ত্বেও মমতা তার দলের ৩৪ জন এমপিকেই হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।


বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব শেষ উঠেছিল ২০০৩ সালে। অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিরুদ্ধে সোনিয়া গান্ধীর অনাস্থা প্রস্তাব। সেবারও বিরোধীরা হেরে যায়। ২০০৮ সালে মনমোহন সিং সরকারের থেকে বামেরা সমর্থন তুলে নিলে ভোটাভুটি নিয়ে হইচই হয়। তা ছিল সরকারেরই আনা আস্থা ভোট। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি ও জি নিউজ


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com