
আগামী বছর ২৬ জানুয়ারি ভারতের সাধারণতন্ত্র বিদসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। গত এপ্রিলেই সরকারিভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো জবাব দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের প্রথম ভারত সফর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন যদি ভারতের ওই আমন্ত্রণ শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করে তবে কূটনেতিক দিক থেকে এটি হবে মোদি সরকারের বিরাট সাফল্য।
২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১৫ সালেই ভারতের আমন্ত্রণে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হয়েছিলেন, ছিলেন তার স্ত্রী মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। রীতি ভেঙে সে সময় বিমাবন্দরে সস্ত্রীক ওবামাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মোদি।
গত বছরের জুন মাসেই হোয়াইট হাউজে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করে তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ট্রাম্পও মোদির নেতৃত্বে ভারত সরকারের কাজের প্রশংসা করেন। এমনকি মোদিকে ‘সব থেকে ভালো বন্ধু’ বলেও পরিচয় দেন ট্রাম্প। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। গত বছরের শেষের দিকে হায়দরাবাদ সফরে আসেন ট্রাম্প কন্যা ইভাঙ্কা।
তবে এবারের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। ইরান থেকে তেল কেনা ও রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম কেনা নিয়ে ওয়াশিংটনের সাথে সম্প্রতি দূরত্ব তৈরি হয়েছে দিল্লির। এই প্রেক্ষিতেই ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে আমেরিকার সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রণালয়ের মুখোমুখি আলোচনা আপাতত স্থগিত রেখেছে ওয়াশিংটন। কার্যত এই ‘২ প্লাস ২’ আলোচনা স্থগিত রেখে দিল্লির ওপর চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা। তবে অন্য পথেই আমেরিকার সাথে বিভিন্ন মতপার্থক্য দূর করতে সক্রিয় ভারত। এমন এক পরিস্থিতিতে সাধারণতন্ত্র দিসবের অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের উপস্থিতি কূটনৈতিক দিক থেকে মোদি সরকার অনেকটাই স্বস্তিজনক অবস্থায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ২৬ জানুয়ারী তারিখটি একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৫০ সালের এই দিনটিতে সংবিধান কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই দেশ একটি গণপ্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষিত হয়। সেই থেকে এই দিনটি প্রতিবছরই পালিত হয়ে আসছে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে।
দিল্লিতে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান চলে প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আকর্ষণের কেন্দ্রই থাকে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ। প্রধানত ওইদিনই রাজপথে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে দেশটির সেনাবাহিনী। তার সাথেই যোগ হয় সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানদের কসরত। এর পাশাপাশি দেশটির সাংস্কৃতিক বৈচিত্রও এই কুচকাওয়াজে ফুটে ওঠে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরাও উপস্থিত ছিলেন সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে। ২০১৬ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অথিতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদ। ২০১৭ সালে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবু ধাবির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জাভেদ আলি নহিয়ান। চলতি বছরও সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ আশিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দশটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান।
বিবার্তা/ডিডি/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]