গরমে অস্থির হয়ে পড়েন অনেকেই। শরীরের শক্তিক্ষয় কমাতে আর সতেজ থাকতে কত কিছুই না খেয়ে থাকেন। গরমে সুস্থ থাকার পাশাপাশি শক্তি সঞ্চয়ে তরল পানীয়র মধ্যে এনার্জি ড্রিঙ্ক পান করেন অনেকে। কেউ কেউ এতে মিশিয়ে নেন বরফ, আবার কেউ বা দিনে দুই-তিন বার বরফ ছাড়াই খাচ্ছেন এনার্জি ড্রিঙ্ক।
ক্লান্তি কমে কিছুটা শক্তিও আসছে বটে। এ অভ্যাসের দাস একা এ দেশ নয়, বরং গোটা বিশ্বেই ছবিটা কমবেশি একই। পানিতে অরুচি এলে সঙ্গে থাকা এই পানীয়ের বোতলটিই ভরসা জোগাচ্ছে তরুণ প্রজন্মকে। ক্লান্তি কমিয়ে শরীরে কিছুটা শক্তির জোগান দিলেও এ অভ্যাস বয়ে আনছে মারাত্নক সব বিপদ।
এই অভ্যাসকে অসুখবাহী বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মেও এই পানীয়জনিত বিপদ সম্পর্কে অভিভাবকদের সতর্ক করেছেন। শুধু ছোটরা নয়, সব বয়সের জন্যই এই পানীয় ক্ষতিকর।
পুষ্টিবিদদের হিসাব অনুযায়ী, একটি ৩৩০ গ্রাম এনার্জি ড্রিঙ্কের বোতলে প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে থাকে সুগার ও ক্যাফিন। এর জেরে ওবেসিটি, টাইপ ২ ডায়াবিটিস ও মানসিক অস্থিরতার সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ সব ছাড়াও রয়েছে আরও কিছু ভয়ের কারণ।
‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোশিয়েশন’-এর নতুন সমীক্ষা শঙ্কা জাগানোর জন্য যথেষ্ট। ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সি ৩৪ জন সুস্থ মানুষের উপর তিন দিন গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন এক লিটার বা তার বেশি এই ধরনের পানীয় যারা খান, তাদের রক্তচাপ সুস্থ মানুষের থেকে বেড়ে যায়। একই সঙ্গে হৃদস্পন্দনের গতিও স্বাভাবিক থাকে না।
প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসির অধ্যাপক সচিন এ শাহ একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, শুধু ক্যাফিন নয়, এই ধরনের পানীয়তে টাওরিন (এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড), গ্লুকুরোনোল্যাকটোন জাতীয় বহুবিধ উপাদান থাকে। এই পানীয়গুলি যত কম খাওয়া যায় ততই মঙ্গল।
চিকিৎসকরা বলেছেন, এনার্জি ড্রিঙ্ক থেকে শরীরে অতিরিক্ত চিনি প্রবেশ করে। এই ধরনের পানীয় অনেক ক্ষেত্রেই কৃত্রিম চিনি বা অ্যাসপার্টেম মজুত থাকে, যা ডায়াবিটিস ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট। তার সঙ্গে প্রিজারভেটিভ যুক্ত থাকার দরুণ শরীরে বাসা বাঁধে নানা চর্মরোগের জীবাণু, লিভারের উপরেও সরাসরি কুপ্রভাব বিস্তার করে এই সব উপাদান। তাই এই গরমে পানি, ডাবের পানি, লবণ-মধুর পানি, লেবু-মধু পানি এ সব খেয়েই নিজেকে একবারে ফুরফুরে রাখা যায়।
বিভিন্ন দেশে বিক্রি হওয়া বেশ কিছু এনার্জি ড্রিঙ্ক ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ করেছে নরওয়ে ও ডেনমার্কের মতো দেশ। ব্রিটেনে শিশুদের কাছে এই ধরনের পানীয় বিক্রি রীতিমতো নিষিদ্ধ। চিকিৎসকেরা সতর্ক করে বলছেন, বিলম্বিত হলেও দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সূত্র: আনন্দবাজার
বিবার্তা/শারমিন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]