
বায়ু দূষণ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এই দূষণ অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু গবেষকদের মতে বায়ু দূষণ শুধু শ্বাসকষ্টই নয়, এটি হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ‘জার্নাল অফ ফিজিওলজি’র একটি সমীক্ষায় এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর বহু মানুষের মৃত্যু হয় করোনারি হার্টের অসুখে এবং স্ট্রোকে। যার অন্যতম কারণ হিসেবে এই বায়ু দূষণকে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা। বাতাসে থাকা ‘পার্টিকুলেট ম্যাটার’ (পিএম) বা ভাসমান অতি ক্ষুদ্র কণা এই রোগের অন্যতম কারণ। পিএম ২.৫ হল অতি সূক্ষ্মকণা। এটা আটকানো কঠিন, তবে ব্যবস্থা নিয়ে কমানো সম্ভব।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েট মেডিকেল ডিরেক্টর ও গবেষক জেরেমি পিয়ার্সন বলেছেন, আমাদের সমীক্ষা এই তথ্য পেয়েছে যে, বায়ু দূষণ হার্টের এবং সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
এই গবেষণার জন্য একাধিক মেরুদণ্ডী প্রাণীদের পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। এই বিষয়ে একটি বিশেষ কম্পাউন্ডের উপর তারা জোর দিয়েছেন। তাহলো পলিসাইক্লিক অ্যারোম্যাটিক হাইড্রোকার্বনস (পিএএইচ), যেটি বায়ুর পার্টিকুলেট ম্যাটারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। এই কম্পাউন্ডটি কতটা পার্টিকুলেট ম্যাটারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, সেটির উপর নির্ভর করে হার্টের অসুখের আশঙ্কা কতটা বাড়বে।
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হলি শিলস বলছেন, আমরা যারা এই পৃথিবীতে বাস করছি, দূষণ প্রত্যেককেই প্রভাবিত করছে। পানিতে ‘অয়েল স্পিল’ হলে মাছ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মানুষের ক্ষেত্রে বায়ু দূষণ সেরকমই ক্ষতি করে।
অন্য একটি সমীক্ষা বলছে, ‘১৯৯৯ এক্সন ভ্যালডেজ অয়েল স্পিল’-এর জের দুই দশক পরও পৃথিবী থেকে মিলিয়ে যায়নি। এই গ্রহের বাস্তুতন্ত্রের নেতিবাচক প্রভাব এখনো রয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য বায়ু দূষণ কমানো খুবই জরুরি।
গবেষক পিয়ার্সন বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত বায়ু দূষণ সীমা ঠিকভাবে মেনে চলা জরুরি। সেই জন্যই ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন ব্রিটিশ সরকারকে এই ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।
আমাদের দেশেও বায়ু দূষণ সম্পর্কে মানুষের সচেতন করতে হবে। এর পাশাপাশি সরকারকেও বায়ু দূষণ কমানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ মানব সম্পদ রাষ্ট্রের মূল হাতিয়ার।
বিবার্তা/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]