শিরোনাম
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের রোজা
প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৯, ১১:২৭
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের রোজা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বে কোটি কোটি মুসলমান রমজান মাসে রোজা পালন করছেন। তাদের অনেকেরই রয়েছে নানা রোগ, সমস্যা। রোজা পালন করতে গিয়ে তারা অনেক সময় সম্মুখীন হন নানা প্রশ্নের।


বিভিন্ন রোগের কারণে অনেকেই রোজা রাখা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগে। রমজানে অন্যতম একটি সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এ থেকে একটু সতর্ক ও সচেতন হলে শরীর সুস্থ রেখে রোজা রাখা সম্ভব।


খাদ্যতালিকায় আঁশজাতীয় খাবারের ঘাটতি ও অপর্যাপ্ত পানি পান করার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এ ছাড়া মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, অন্ত্রের কোনো গুরুতর সমস্যা, যেমন: টিউমার বা বাধার কারণে এমন হয়। বিষণ্নতা ও মাদকসেবনের কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।


সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারির সময় থেকে সাহরির সময় পর্যন্ত আমরা সাধারণত ‘রিচ ফুড’ অর্থাৎ উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই। আর সারা দিন পানিও খাওয়া হয় না, ফলে প্রায় সব রোজাদারেরই রমজানে একটু একটু কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।


ফলে রমজানে পায়ুপথের বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে পাইলস ও এনাল ফিসার নামক দুটি রোগের প্রাদুর্ভাব এ সময়ে সবচেয়ে বেশি হয়।


কোষ্ঠকাঠিন্য এবং তৎজনিত প্রেসার দিয়ে মলত্যাগের কারণে মলদ্বারের রক্তনালিসমূহ ফুলে গিয়ে ছিড়ে যেতে পারে, এতে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে। এটিই পাইলস। এছাড়া কঠিন মলের কারণে মলদ্বারও ছিড়ে যেতে পারে। এতে অল্প রক্তপাত ও তীব্র ব্যথা শুরু হয়। ব্যথার জন্য রোগী কোনো কাজই করতে পারেন না।


গবেষণায় দেখা গেছে, রমজানে পাইলস ও এনাল ফিসারের সবচেয়ে বেশি নতুন রোগী সৃষ্টি হয়। অপরদিকে পুরনো রোগী যারা আছেন তাদেরও পাইলস ও ফিসারের প্রকোপ এই সময়ে অনেক বেশি বেড়ে যায়। মলত্যাগের সময় রক্তপাত হলে রোজা ভেঙে যায়, আর তীব্র ব্যথা হলে রোগীকেই অনেক সময় রোজা ভেঙে ফেলতে হয় বা এরপর আর রোজা রাখতে পারেন না। ফলে অনেকেই রমজানের নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হন।


এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? প্রথম কথা হচ্ছে রমজানে যথাসম্ভব ফলমূল ও শাক-সবজি খান। ভাজা জিনিস যথাসম্ভব কম খান, আর যাদের পূর্বে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য আছে মল নরম করার বিভিন্ন ওষুধ খান যেমন: মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া বা লেকটুলুজ। সবচাইতে ভালো হয় যদি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে খাদ্যতালিকা তৈরি করা হয়।


দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যাদের পূর্ব থেকেই পায়ুপথের বিভিন্ন রোগ আছে যেমন রক্তপাত, ব্যাথা, ফোলা ইত্যাদি তাদের রমজানের পূর্বেই এর চিকিৎসা করিয়ে নেওয়া। তাহলে সুন্দরভাবে তিনি রমজান মাসের সিয়াম সাধনা পালন করতে পারবেন।


তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যদি রমজান মাসে কোনো সম্মানিত রোজাদারের এই সমস্যা দেখা দেয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই একজন কোলোরেকটাল সার্জনের মাধ্যমে এর চিকিৎসা নেয়া। তাহলে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগের চিকিৎসা হবে এবং তিনি বাকি রোজাগুলো যথাযথভাবে পালন করতে পারবেন।


রোজা রেখে দিনের বেলা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম না করাই উচিত। ইফতারের পর ব্যায়ামের জন্য ভালো সময়। প্রত্যেকে ভালোভাবে পবিত্র রমজান উদযাপন করতে পারুক, এই প্রত্যাশা রইল।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com