বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে অপ্রয়োজনীয় সিজার!
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৩১
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে অপ্রয়োজনীয় সিজার!
সানজিদা আক্তার
প্রিন্ট অ-অ+

প্রসবকালীন জটিলতা সহজ করে মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে ভূমিকা রাখা চিকিৎসা পদ্ধতি সিজারিয়ান বা সি-সেকশনকে বিতর্কিত করে তুলেছে বেসরকারি হাসপাতালের একশ্রেণির অসাধু চক্র। এই বিষয়ে সকল জরিপই বলছে, সরকারি হাসপাতালের তুলনায় দ্বিগুণ সিজার বেসরকারি হাসপাতালে সম্পন্ন হয়। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কথা বলে জানা গেছে, সিজার তাদের আয়ের অন্যতম উৎসও বটে। 


বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৩৩ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। সরকারিভাবে এতসংখ্যক নারীর নিয়মিত মাতৃসেবার পরিবেশ তৈরি না হওয়ায় সুযোগ নিচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো। সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরতরা রোগীদের প্রতি যত্নশীল  নয় বলে প্রসূতি মায়েরা নিরুপায় হয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দিকে ঝুঁকছে।


রাজধানী ঢাকার বেশকিছু বেসরকারি হাসপাতালের অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাক্তাররা সিজারিয়ান পদ্ধতিতেই জন্মদানে উৎসাহ দিচ্ছেন। মায়েরা নরমাল ডেলিভারির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলেও ডাক্তাররা শেষের দিকে এমন আবহ তৈরি করে যে, সিজার ছাড়া আর উপায় থাকে না। এ আগ্রহকে আরো তরান্বিত করে মধ্যসত্বভোগী দালাল। পাশাপাশি ডাক্তারদের টার্গেট পূরণের বাধ্যবাধকতা থাকায় তারাও সায় দিচ্ছেন।


বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভয়ংকরভাবে সিজারের হার বাড়ছে এমনটি বলছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (নিপোর্ট)-এর দেশব্যাপী তৃতীয় বাংলাদেশ আরবান হেলথ সার্ভে (বিইউএইচএস) ২০২১ যা প্রকাশিত হয় এই বছরের ৩ জানুয়ারিতে।


তারা বলছে, প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নেওয়ার পরও সরকারি হাসপাতালের তুলনায় সিজারের হার দ্বিগুণ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।


গবেষণায় দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের বস্তি এলাকায় সরকারি ভাবে যেখানে অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসবের হার ৪৪ %, বেসরকারিতে তা ৭৫ %। সিটি করপোরেশনের বস্তির বাইরে সরকারি হাসপাতালে ৫১ %, বেসরকারিতে এই হার ৮৭ % এবং পৌরসভার সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্মদানের হার ৩৭ % হলেও বেসরকারিতে তা ৮৮ %।


এ ছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)-এর আওতাধীন এই তিন শ্রেণির (সিটি করপোরেশনের বস্তি, বস্তির বাইরে ও পৌরসভা) প্রতিষ্ঠানে এই হার যথাক্রমে ২৫ %, ৫১ % ও ৪৭ %। 


বাংলাদেশে এক সময়ে চিকিৎসার অভাবে মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। প্রতি বিশ মিনিটে একজন মা মারা যেত এবং বছরে মারা যেত ২৮,০০০ প্রসূতি। এই অতিরিক্ত মাতৃমৃত্যু রোধে গত শতাব্দীর নব্বই দশকে ইমারজেন্সি অবসটেট্রিক কেয়ার (জরুরী প্রসূতি সেবা)-এর প্রবর্তন করেন অধ্যাপক আব্দুল বায়েছ ভুঁইয়া। যার ফলে গ্রামের প্রসূতিরা কাছাকাছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা পেতে পারেন।


গত দুই দশকে মৃত্যুহার ব্যাপকহারে কমেছে। ১৯৯০ সালে যেখানে প্রতি লাখে মারা যেত ৫৭৪ জন, সেটা ১৯৯৬ কমে হয়েছিল ৪৬২, ২০০১ সালে  ৩৮৪, ২০১০ সালে ১৯৪, ২০১৫ তে ১৭৬ ও ২০১৭ সালে ১৭২ জনে। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে মৃত্যুহার ১৫০ থেকে ১৬০ মাঝে ওঠানামা করছে।


কিন্তু এখন বিশ্বতো বটেই দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি সিজার পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ বর্ধিত হার নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য বিরাট বাঁধা। 


সারা বিশ্বেই সিজারিয়ান সেকশনের হার বাড়ছে। আমেরিকাতে ২০০০ সালে সিজারের হার ছিল ২৩ % যা বেড়ে ২০১৫ সালে হয়েছে ৩২ %। একই ভাবে যুক্তরাজ্যে ২০০০ সালে ছিল ১৯.৭ % যা বেড়ে ২০১৫ সালে হয়েছে ২৬.২ %।


বিভিন্ন দেশে ২০০০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাড়ার হার- গ্লোবাল ১২.১ % থেকে ২১.১ %, মিডল ইস্ট এবং নর্থ আফ্রিকা ১৯ % থেকে ২৯.৬ %, দক্ষিণ এশিয়া ৭.২ % থেকে ১৮.১ %, পূর্ব এশিয়া এবং প্যাসিফিক ১৩.৪ % থেকে ২৮.৮ %, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারেবিয়ান ৩২.৩ % থেকে ৪৪.৪ %, পূর্ব ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া ১১.৯ % থেকে ২৭.৩ %, নর্থ আমেরিকা ২৪.৩ % থেকে ৩২ %, পশ্চিম ইউরোপ ১৯.৬ % থেকে ২৬.৯ %, বাংলাদেশ ৩ % থেকে ২৪ %।


বাংলাদেশে ২০১০ সালে সিজারের হার ছিল ১২ % যা ২০২২ সালে হয়েছে ৩৩ %। অন্য দেশের সাথে তুলনা করলে এখনও এই হার যে কোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে প্রায় একই কালচারের ভারতের তুলনায়ও কম থাকলেও বর্তমানে তা ছাড়িয়ে গেছে। 


অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী, কোনো দেশেই মোট প্রসবের ১০ থেকে ১৫ ভাগের বেশি সি-সেকশন হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে প্রসূতিদের ভুল বুঝিয়ে অতিরিক্ত অর্থ লাভের আশায় সিজার করানোর ফলে সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।


সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সালে অপ্রয়োজনীয় সিজারের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। ২০১৮ সালে দেশে যত মায়ের সিজার লাগত, তার তিন গুণ মাকেই অপ্রয়োজনীয় অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।


প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সিজারের হার আশঙ্কাজনকহারে বেড়েই চলেছে, যার ৮০ শতাংশই হয় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। সিজারের ফলে মা ও শিশুর জীবন ঝুঁকিতে পড়ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্তান প্রসবে সিজারিয়ান বা সি-সেকশন করতে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে অনুৎসাহিত করা হলেও গত এক দশকে এই হার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।


অপ্রয়োজনীয় সিজারের ভুক্তভোগী সাহেলা বেগম বিবার্তাকে বলেন, আমার প্রথমে ৪টা বাচ্চা নরমাল হয়েছিল। ৫ নম্বর বাচ্চার সময় হাল্কা ব্যথা উঠলে আমি প্রাইভেট হাসপাতালে যাই। ওনারা আমাকে দেখেই বলে সিজার করা লাগবে। আমার কোনো আল্ট্রাসাউন্ড করায়নি। সাথে সাথে অপারেশন রুমে নিয়ে যায়। আমার স্বামীর সাথে কোনো কথাও বলেনি। ওনাকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেনি। কতক্ষণ পর বাচ্চা এনে ওনার কোলে দিলে ওনি জিজ্ঞাস করেন, এই বাচ্চা কার? নার্স বলেন আপনার বাচ্চা। আপনার স্ত্রীকে সিজার করানো হয়েছে। তখন আমার স্বামী বলেন, আমার অনুমতি ছাড়া আপনারা কিভাবে সিজার করলেন? এই নিয়ে অনেক কথা কাটাকাটি হয়।


আরেক ভুক্তভোগী পপি আক্তার বিবার্তাকে বলেন, ডেলিভারি ডেটের কিছুদিন আগে আমার অনেক পেট ব্যথা হয়। তাই আমি সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখাতে যাই। দায়িত্বরত গাইনি ডাক্তার আমাকে দেখে বলেন সব ঠিক আছে। বাবু হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। এটা ফলস পেইন। 


আমি ভাবলাম ডেট কাছাকাছি চলে আসছে একটা আল্ট্রাসাউন্ড করে সর্বশেষ অবস্থাটা জেনে যাই। তাই একটি প্রাইভেট হাসপাতালে যাই। আল্ট্রা রুমে গিয়ে দেখি সরকারি হাসপাতালের ওই চিকিৎসক এই হাসপাতালেও বসেন। উনি আল্ট্রা করে বলেন, আমাকে বলেন বাচ্চা নাকি অক্সিজেন পাচ্ছে না। ২ ঘন্টার মধ্যে সিজার না করালে না-কি বাবুকে বাঁচানোই যাবে না। নার্স আমাকে ইঞ্জেকশন আর ঔষধ খাওয়ানোর অনেক চেষ্টা করে কিন্তু আমি নেইনি।


কিছুক্ষণ পরে আমি আর আমার স্বামী অন্য আরেকটা হাসপাতালে গিয়ে আল্ট্রা করি। ওই ডাক্তার জানান বাবু সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। আমরা অপেক্ষা করতে পারি নরমাল ডেলিভারির জন্য। ১২ দিন পরে আমার নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সুস্থ মেয়ে বাবুর জন্ম হয়।


জটিল সমস্যা নিয়ে যারা আসেন, সিজার তাদের জন্য আশীর্বাদ। তেমনি একজন সুমাইয়া ঝিলিক বিবার্তাকে বলেন, আল্ট্রাসাউন্ড করে তিনি জানতে পারেন বাচ্চার গলায় নাড় পেচানো। তাছাড়া  বাচ্চাটা অপরিপক্ক অবস্থায় আছে বলে জানতে পারেন। 


এই অবস্থায় নরমাল ডেলিভারির জন্য বসে থাকা ছিল আমার আর বাবুর জন্য ঝুকিপূর্ণ। তাই আমি সিজার করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সিজারের মাধ্যমে সুস্থ সন্তান জন্ম দিয়েছিলাম। এখন আমরা দু’জনেই ভালো আছি।


করোনাতে কমেছে সিজার, বেড়েছে মাতৃমৃত্যুর হার:


এক দশকে অপ্রয়োজনীয় সিজারের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের মধ্যে করোনার সময় দেখা গেছে এর উল্টো চিত্র।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ২০২০ সালের  জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সিজারের মাধ্যমে ৮৭ হাজার ৩২১টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এর মধ্যে মার্চ থেকে দেখা দেয় করোনা সংক্রমণ। কিন্তু মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কত শিশুর জন্ম হয়েছে, সেই তথ্য আলাদাভাবে নেই। তবে আগের বছরের সঙ্গে ‍তুলনা করলে একটি ধারণা পাওয়া যায় সিজার কমার বিষয়ে।


২০১৯ সালে সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন এক লাখ ১৫ হাজার ৭৬৩ জন মা। অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে সিজার কমেছে ২৪.৫ শতাংশ। ডিজিএফপি দেয়া তথ্যমতে, হাসপাতালগুলোতে ২০১৯ সালে এক লাখ ৭৮ হাজার ৭৮১টি স্বাভাবিক প্রসব হয়, অস্ত্রোপচার হয় ৯ হাজার ৩৭৮টি।


২০২০ সালে সেই সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নামে। এসময় এক লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৫টি নরমাল ডেলিভারি হলেও সিজার হয়েছে মাত্র ৫ হাজার ৩৭০টি।


২০২১ সালে এই হার আরও কমেছে। জানুয়ারিতে ১৩ হাজার ৯১৬টি স্বাভাবিক প্রসবের বিপরীতে সিজার হয়েছে ৪০৮টি, ফেব্রুয়ারিতে ১৩ হাজার ৭৮৪টি স্বাভাবিক প্রসবের বিপরীতে সিজার হয়েছে ৪৩৪টি, মার্চে ১৩ হাজার ৯৭৯টি স্বাভাবিক প্রসবের বিপরীতে সিজার হয়েছে ৫৫৫টি এবং এপ্রিলে ১২ হাজার ৯৯৯টি স্বাভাবিক প্রসবের বিপরীতে সিজার হয়েছে ৪৬৭টি।


২০১৯ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছিল, বাংলাদেশে দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ান হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। এতে বলা হয় ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সিজার ৪ থেকে ৩১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।


পরে বিষয়টি আমলে নেয় আদালতও। সে সময় জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনে অস্ত্রোপচার রোধে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা দেন। তবে এটি এখনো পুরোপুরি বাস্তাবায়ন করতে পারেনি সরকার।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, করোনাকালে সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে প্রসবপূর্ব সেবা আগের বছরের তুলনায় কম নিয়েছে মায়েরা। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে এ সেবা নেওয়ার হার এক–চতুর্থাংশ কমেছে। আর এ সময়ে মাতৃমৃত্যু বেড়েছে ১৭ শতাংশ।


পেশাজীবী সংগঠন অবসটেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম বিবার্তাকে বলেন, যাদের প্রথম বাচ্চা সিজারে হয়েছিল তাদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সিজার হচ্ছে। কারণ তাদের দ্বিতীয় সিজার যদি সময়মতো না হয় তাহলে পেট ফেটে অনেক ক্ষেত্রে মায়ের ও মৃত্যু হতে পারে। 


তিনি আরো বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার বেশি হচ্ছে। রোগি যেই ডাক্তারকে দেখান তিনি প্রাইভেট হাসপাতালই রেফার করেন। যার জন্য ডেলিভারি ব্যথা উঠলে রোগি প্রাইভেট হাসপাতালেই যায়। আর সেখানে নরমাল ডেলিভারির জন্য লেবার রুম নেই। নরমাল ডেলিভারির জন্য অনেক সময় ১২/১৬ ঘন্টা রোগিকে দেখাশোনা করা লাগে। দেখাশোনার জন্য কিন্তু সব সময় ডাক্তার  থাকেন না। নার্সরাই দেখাশোনা করেন। প্রাইভেট হাসপাতালে তাদের পর্যাপ্ত নার্স নেই। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিজারের জন্যই উৎসাহিত করেন।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরিন কিরণ বিবার্তাকে বলেন, সিজার চিকিৎসা পদ্ধতিরই একটি অংশ। আমরা সকল ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই সুপারিশ করি। প্রসবকালীন সময়ে সব প্রসূতি মা নরমাল ডেলিভারির জন্য উপযুক্ত থাকে না। অনেকে নানা ধরণের জটিলতার মুখোমুখি হয়। জটিল সমস্যা নিয়ে যারা আসেন শুধু তাদেরকেই সিজারের জন্য রেফার করি। 


স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, আমরা দেখছি গর্ভবতী নারীদের প্রথম সেবা নেয়ার হার কিছুটা আশা দেখালেও চতুর্থ ধাপে খুবই হতাশাজনক। করোনা মহামারিতে কম বয়সে গর্ভধারণ বেড়েছে এটা ঠিক, কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে যে খুব একেবারে ভালো তা নয়। উপজেলা ও জেলা শহরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বড় একটি গ্যাপ রয়েছে। এটির উন্নতি জরুরি। এটাকে আলাদা অপারেশন প্ল্যানে নেয়া হচ্ছে। এসব সেবায় আরও গুরুত্ব বাড়াতে এটি করতে হচ্ছে।


স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার বাড়লেও সিজার বাড়ছে। এটি কমাতে হবে। এ জন্য প্রান্তিক পর্যায় থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়া গেলে এটি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।


বিবার্তা/সানজিদা/রোমেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com