শিরোনাম
সামাজিক পরিমণ্ডলে সবাই সমান, এটাই হোক নির্বাচনী অঙ্গীকার
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৫:১৯
সামাজিক পরিমণ্ডলে সবাই সমান, এটাই হোক নির্বাচনী অঙ্গীকার
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সেবার দেশে গিয়েছি। চুল কাটানোর জন্য সেলুনের ভেতর বসে আছি। যে দুই লোক চুল কাটছে, তারা বেশ বিনয়ের সঙ্গে'ই বললেন, আপনাকে অল্প কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। এখন যাদেরটা কাটছি, শেষ হলেই আপনার পালা।


আমি বসে বসে পত্রিকা পড়ছি। খানিক পর দেখি এক ভদ্রলোক ঢুকলেন। তিনি ঢুকেই বললেন, আমি এই এলাকার ওসি। আমার চুলটা কেটে দাও তো। ভদ্রলোককে মিনিট পাঁচেকের মতো বসতে হলো। একজনের চুল কাটা শেষ হবার পরই তিনি চলে গেলেন চুল কাটাতে। অথচ আমি প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে বসে অপেক্ষা করছি।


এর চাইতেও অবাক হলাম, যারা চুল কাটছে, তারা ভদ্রলোক'কে স্যার সম্বোধন করে বলছে, আপনি আগে আসেন স্যার! আমি পুরো বিষয়টা স্রেফ চেয়ে চেয়ে দেখলাম।


ওসি মশাই সেলুনে ঢুকে নাপিতদের "তুমি" করে সম্বোধন করে নিজের পরিচয় সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দিলেন। আর আমি কোনো রকম পরিচয় না দিয়ে যারা চুল কাটছে, তাদের " আপনি" করে সম্বোধন করলাম। অথচ ওসি মশাই, স্রেফ তার পেশাগত পরিচয় দেবার কারণে চুল কাটতে এসে'ও আলাদা ফায়দা নিয়ে নিলেন! এবং কি চমৎকার ভাবেই না "স্যার" উপাধি পেয়ে গেলেন!


তিনি খানিক আগে চুল কাটাতে পেরেছেন, এটা তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে-সামান্য চুল কাটাতে গিয়েও তিনি তার পেশাগত পরিচয়ের ফায়দা নিয়েছেন।


আমি সাধারণত যে কোনো ধরনের বিবাহের অনুষ্ঠান কিংবা এই ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান অনেক আগে থেকেই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে আসছি। কারণ, আমি অবাক হয়ে আবিষ্কার করেছি, এই ধরনের অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশিরা একে-অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে গিয়ে প্রথমেই নিজের পেশাগত পরিচয় দিয়ে দেই এবং সেটা জাহির করে বেড়াই!


আমি গিয়েছি এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। এক ভদ্রলোকের সঙ্গে পরিচয়। তিনি প্রথম কথাতেই বললেন, আমি অমুক জেলার ডিসট্রিক্ট জাজ! অর্থাৎ তিনি একজন বিচারক, সেটা তিনি আগেই বলে দিচ্ছেন। তো, তিনি এই পরিচয়টা কেন দিচ্ছেন? তার কাছে তো আমি জানতে চাইনি। কারণটা খুবই সাধারণ। তিনি তার পেশাগত পরিচয়ের মাধ্যমে আলাদা একটা মূল্য কিংবা দাম পেতে চাইছেন অন্যদের কাছে থেকে। আর আমরা অন্যরাও সেটা দিব্যি দিয়ে বেড়াই!


এ এক অদ্ভুত ব্যাপার!


একবার গিয়েছি মাছের বাজার। মাছ বিক্রেতার সঙ্গে সেকি দরাদরি আমার! খানিক পরে দেখি এর চাইতে অনেক কম দামে পাশের এক ভদ্রলোককে তিনি অনেকগুলো মাছ দিয়ে দিলেন! আমার তো চোখ কপালে উঠার জোগাড়!


আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমি এতক্ষণ ধরে আপনার সঙ্গে দরাদরি করছি, আপনি দিচ্ছেন না। আর উনি কিছু না বলতেই তাকে কম দামে মাছগুলো দিয়ে দিলেন!


মাছ বিক্রেতা হাসতে হাসতে বললেন, আরে ভাই, উনি তো পুলিশের লোক।


আমি এরপর তাকে জিজ্ঞেস করলাম, উনি যে পুলিশের লোক, আপনি কি করে জানলেন? আমি কি করি আপনি কি জানেন?


মাছ বিক্রেতা এইবার ৩২ দাঁত বের করে বললেন, ভাইরে, উনি নিজেই একদিন আমাকে বলেছে উনি পুলিশে চাকরি করে।


এই হচ্ছে অবস্থা! এমনকি মাছ বিক্রেতার কাছে গিয়েও নিজেদের পেশাগত পরিচয় দিয়ে দিতে হচ্ছে, সেই সঙ্গে সম্ভব হলে আলাদা ফায়দা!


এই যে সবাই বিসিএস ক্যাডার হতে চায়। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট হতে চায়। এর কারণ কি?


তখন আমি ঢাকার নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছি। আমার এক সহকর্মী, যিনি নিজেও সেখানকার শিক্ষক; তিনি দেখি দিন-রাত কেবল বিসিএসের গাইড পড়ছেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তো বেশ ভালো একটা চাকরি করছেন। শিক্ষকতা করছেন। আপনার কি দরকার বিসিএস ক্যাডার হবার?


তিনি উত্তরে বলেছেন, আরে ভাই, শিক্ষকদের কি কোনো ক্ষমতা আছে! পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট হবো, পাওয়ার থাকবে। লোকে ভয় পাবে, সম্মান করবে।


আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার সেই সহকর্মী কিন্তু এখন পুলিশ কর্মকর্তা এবং এও জানিয়ে রাখি-দেশের অনেক পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা মন-প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে বিসিএস ক্যাডার হবার!


কেন তাহলে সবাইকে বিসিএস ক্যাডার হতে হবে? কারণ, এতে করে সে তার পেশাগত পরিচয় দিয়ে সমাজের সকল স্তরে প্রভাব খাটাতে পারবে এবং সমাজের মানুষগুলো সেটা স্বাভাবিক ভাবে মেনেও নেবে!


এই যে আজকাল প্রায়ই নানান সব ভিডিও বের হয়, যেখানে লোকজন বলছে, জানিস আমি কে? কিংবা, আমি অমুকের ছেলে অথবা স্ত্রী ইত্যাদি। তো, এরা এইসব কথা কেন বলছে? কারণ, এরাও জানে এতে করে তাদের সমস্যার সমাধান এমনিতেই হয়ে যাবে।


দেশের কথা বাদ দিলাম। এই বিদেশেও আমরা বাংলাদেশিরা পরম মমতায় এইসব প্র্যাকটিস করে যাচ্ছি। ধরুন, আপনি বিদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান কিংবা ভালো একটা চাকরি করেন। অন্যরা হয়ত খুব একটা ভালো চাকরি করে না। তো আপনি আপনার সেই পেশাগত পরিচয়ের কারণে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছ থেকে আলাদা একটা ভাব কিংবা সম্মান পাবার চেষ্টা করবেন।এর চাইতেও অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে- অন্যরাও সেটা মেনে নিচ্ছে!


এ এক অদ্ভুত মানসিকতা!


আমরা বুঝতেই পারছি না- পেশাগত পরিচয় তো স্রেফ আমাদের কাজের জায়গাতে। অন্য আর কোনো প্লাটফর্মে তো সেটা ব্যবহার করার কিংবা জাহির করে বেড়ানোর দরকার নেই।


আমি যেই শহরে থাকি, এখানকার লোকজনও এই সব প্র্যাকটিস করে বেড়াচ্ছে! কেউ একজন ভালো একটা চাকরি করছে- তাকে ক্রমাগত "বাহ", "বাহ" দিয়ে যাচ্ছে!


আমি আজীবন চেষ্টা করেছি এই ব্যাপারগুলো এড়িয়ে চলার। আমি সব সময় যে কারো সঙ্গে অতি সাধারণ ভাবে মেশার চেষ্টা করেছি। নিজের পেশাগত জায়গা টুকু বাদ দিলে; এর বাইরে যে কোনো প্লাটফর্মে কিংবা যে কোনো সামাজিক পরিমণ্ডলে আমার কাছে সব সময়ই মনে হয়েছে- আমরা সবাই সমান। নিজেকে আলাদা ভাবার তো কোনো কারণ নেই।


এখানে'ও আবার সমস্যা আছে। খুব স্বাভাবিকভাবে মিশতে গেলে কিংবা আপনি যদি খুব 'ইজি গোয়িং" হন কিংবা সবার সঙ্গে সহজভাবে মেলামেশা করেন; তাহলে আমরা বাংলাদেশিরা সেটাকেও আবার দুর্বলতা মনে করি।


এই আমাদের শহরেই কিছুদিন এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে ৩০- ৩৫ জন হবো আমরা। এই আয়জনে আমি খানিক কথা বলেছি।


কেউ আমাকে কথা বলার জন্য ডাকেনি। নিজ থেকে উঠে গিয়েই কথা বলেছি। কারণ, আমার মনে হয়েছে- আমার ইচ্ছে করছে বলতে। কথা বলা শেষ হবার পর আমার আবার মনে হলো- আমার তো অল্প কিছু কথা বলা বাকী রয়ে গিয়েছে।


আমি আবার গেলাম কথা বলতে। যে ছেলেটা উপস্থাপনা করছে, ছেলেটা আমি যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াই, সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। বাংলাদেশ থেকে আসা। সে হঠাৎ করে বলে বসেছে, এভাবে বলতে থাকলে তো এবার সবাইকে বলতে হবে। আপনারা সবাই একে একে তাহলে বলতে আসেন!


আমি স্রেফ তার কথাটা শুনেছি। এর আর কোনো উত্তর দেইনি। কারণ, প্রত্যেক মানুষ তার অভিমত জানাবে, মুক্তমত প্রকাশ করবে, আমি সেটাতে বিশ্বাসী! নিজের জীবনের নানান হুমকি উপেক্ষা করে সেই কবে থেকে লিখে যাচ্ছি- স্রেফ মুক্তমত প্রকাশ করার স্বাধীনতাটুকু যেন সবার থাকে এবং সেটা শোনার মানসিকতা যেন আমরা অর্জন করি।


আমি ভাবছিলাম- ছেলেটা আমাকে এই কথা বলে দিয়েছে, এতে কিন্তু আমি একদম কিছু মনে করিনি। কারণ, আমি যে তেমন কিছু মনে করবো না, সে হয়ত সেটা জানে। কারণ, আমি মত প্রকাশে বিশ্বাসী, সেটা যদি ভিন্ন মতও হয়।


যে কেউ যে কারো মত প্রকাশ করবে, তর্ক হবে, বিতর্ক হবে আর এভাবেই আমরা এগুবো। কিন্তু সেটাকে কোনোভাবেই আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে নিয়ে যাবো না। আমি সব সময়ই এটা বিশ্বাস করেছি।


তবে আমার মনে একটা প্রশ্ন এসছে, এই শহরেই থাকে অন্য যাদেরকে এই ছেলেই হয়ত হুজুর হুজুর করে বেড়ায় স্রেফ তাদের পেশাগত পরিচয় কিংবা সামাজিক অবস্থানের জন্য; তাদেরকে কি এই ছেলে এই একই কথা বলতে পারত? উত্তর হচ্ছে - "না!"


সে বরং তার ৩২ দাঁত বের করে হুজুর হুজুর করত। ঠিক যেমনটা উপরে উল্লেখ করা সেলুনের নাপিত কিংবা মাছ বিক্রেতা করেছে।


আমি এই উদাহরণটা দিলাম, কারণ এটাই আমাদের স্বাভাবিক চরিত্র। আমি নিজেকেও এর বাইরের কেউ মনে করছি না। কারণ, আমি তো আর মঙ্গল গ্রহ থেকে উঠে আসিনি। আমিও বাংলাদেশ থেকেই উঠে এসছি।


আপনারা নিশ্চয় এর মাঝে খেয়াল করে দেখেছেন- আজকাল সবাই "এমপি" হতে চায়।


তো, সবাই এমপি হতে চাইছে কেন?


কারণ, তারা জানে এমপি হতে পারলে পুরো বাংলাদেশটাই তাদের কাছে স্বর্গ। তারা কি সরকার দলীয় এমপি না বিরোধী দলীয় এমপি, সেটা কোনো ব্যাপার না। ব্যাপার হচ্ছে তারা "এমপি!" সুতরাং তারা তো যে কোনো কিছুতেই প্রভাব বিস্তার করতে পারবে!


দেশ সেবা করতে হলে এমপি হতে হবে, এমন তো কোনো কথা নেই। এরপরও দেখবেন আজকাল সবাই এমপি হতে চায়। আপনি স্রেফ রাজনীতি করুন না, তাহলেও তো চলছে! কিংবা সমাজ সেবা করুন। আপনাকে এমপিই হতে হবে কেন? ব্যাপারটা সোজা। ক্ষমতা এবং সেই ক্ষমতার ব্যবহার!


কিছুদিন আগে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে গিয়েছিলেন একটা মিটিং এ। এখানে যেমনটা হয়, আমরা কোনো ক্লাস কিংবা মিটিং এ যাবার সময় কফি হাতে নিয়েই চলে যাই।


তো নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী কফি হাতে মিটিং এ ঢুকছিলেন, হঠাৎ কফির কাপটা তার হাত থেকে পড়ে গিয়েছে। পরিষ্কার করার জন্য আশপাশে কর্মী ছিল। কিন্তু এই প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে পুরো ফ্লোর পরিস্কার করেছেন এবং দেয়ালও পরিস্কার করেছেন। এরপর তিনি বলেছেন, যেহেতু আমি ফেলেছি, আমাকেই তো পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া এখানে তো আমি প্রধানমন্ত্রী নই।


এই হচ্ছে এদের অবস্থা। অথচ চাইলেই পরিষ্কার না করে মিটিং এ ঢুকে যেতে পারতেন। কারণ, আশপাশে পরিষ্কার করার কর্মীরা ছিলো।


তিনি যে একজন প্রধানমন্ত্রী, অনেক বড় কিছু; সেটা তিনি সেখানে জাহির করতে যাননি কিংবা এর জন্য আলাদা কোনো ফায়দাও তারা তিনি নিতে যাননি। বরং তিনি একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন- আমরা সবাই সমান। নিজের কাজটুকু নিজেকেই করতে হবে।


আজ রাত পোহালেই কাল আমাদের নির্বাচন। আমি জানি, আমাদের মানসিকতা অল্প সময়ে পরিবর্তন করা সম্ভব না। তবে চেষ্টা করতে ক্ষতি কি।


এই নির্বাচনে যারাই জয়ী হন, আপনারা, অন্তত সরকারি আমলাদের আলাদা করে ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেন, যাতে করে তারা নিজেদের পেশাগত জায়গা ছাড়া অন্য কোনো কোথাও আলাদা কোনো ফায়দা না নেয়।


আপনারা নিজেরাও মন্ত্রী-এমপি হয়ে নিজেদের অতি মানব ভাবার জায়গা থেকে বের হয়ে আসুন। সকল বড় বড় পদের মানুষদের ভাবতে সেখান- পদবী আপনাদের পেশাগত, দয়া করে সেটা সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োগ করবেন না।


আমরা হয়ত একদিন অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্র হবো কিন্তু আমরা যদি মানবিক না হই, তাহলে এর কোনো কিছু শেষ পর্যন্ত কাজে আসবে না।


ইউরোপে একজন সুইপার কিন্তু একজন মন্ত্রীর সাথে এক সঙ্গে বার এ বসে ড্রিঙ্ক করে। সেখানে কেউ বলতে যায় না- আমি সুইপার কিংবা আমি মন্ত্রী!


দিনশেষে আমরা সবাই মানুষ। ডাক্তার- ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক- আমলা, পুলিশ- সাংবাদিক কিংবা মন্ত্রী-এমপি নই।


এই সব আমাদের পেশাগত পরিচয়। এই পরিচয় যেন আমরা বিয়ের অনুষ্ঠান, চুল কাটার সেলুন কিংবা বাজারে নিয়ে হাজির না হই!


সামাজিক পরিমণ্ডলে আমরা সবাই সমান; এটাই হোক আমাদের এবারের নির্বাচনী অঙ্গীকার।


আমিনুল ইসলামের ফেসবুক থেকে


বিবার্তা/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com