শিরোনাম
ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরী অপসারণ
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২০, ১৪:১৫
ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরী অপসারণ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঋণ খেলাপির দায়ে বেসরকারি ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীকে অপসারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি মাসে ওয়ান ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত ১৫ অক্টোবর ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।


সোমবার (৬ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।


তিনি জানান, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ নিয়েছিলেন। নিয়মিত পরিশোধ না করায় পরবর্তীতে তা খেলাপি হয়ে যায়। আইন অনুযায়ী একজন ঋণখেলাপি ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারেন না। এ কারণে চলতি মাসে ওয়ান ব্যাংককে চিঠি দেয়া হয়েছে যে, ১৫ অক্টোবর ২০১৯ সাল থেকে সাঈদ হোসেন চৌধুরী ওই ব্যাংকের পরিচালক নন।


জানা গেছে, ওয়ান ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদ হোসেন চৌধুরী। আর এ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এইচআরসি শিপিং লাইন্সের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে বেসরকারি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা নেন। তবে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার দায়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের খেলাপির তালিকায় রয়েছে তার নাম। তার পাওনা আদায়ে বন্ধকিতে থাকা চট্টগ্রামের সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা।


স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এইচআরসি শিপিং লাইন্সের কাছে সুদসহ মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ১২১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আর এ পাওনা আদায়ে সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন আরেক প্রতিষ্ঠান আরাকান এক্সপ্রেস লিমিটেডের চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ৩১ দশমিক ৮০ ডিসিমেল জমির ওপর নির্মিত বাণিজ্যিক শেড ও সংশ্লিষ্ট সব ধরনের স্থাপনা নিলামে বিক্রির প্রস্তুতি নেয়া হয়।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পারিবারিকভাবেই তাদের শিপিং লাইন্স হানজিন ও পিআইএল বেশ কয়েকটি শিপিং লাইন্সের ব্যবসা ছিল। সে সুবাদে নিজেই এইচআরসি শিপিং লাইন্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য আনা-নেয়ায় প্রায় আটটি জাহাজ ছিল এ কোম্পানির বহরে। তবে বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক কার্যক্রম নেই। এছাড়া বারিধি শিপিং লাইন্স লিমিটেড, এভারগ্রিন, বাংলাদেশ ল্যান্ড লিমিটেড, এইচআরসি সিন্ডিকেট, এইচআরসি ট্রাভেলস, এইচআরসি লাইটিং, এইচআরসি প্রোপার্টিজ, এইচআরসি শিপিং, এইচআরসি মিডিয়া, আরাকান এক্সপ্রেস লিমিটেডসহ মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছেন সাঈদ হোসেন চৌধুরী। তবে সামগ্রিকভাবে এ গ্রুপের ব্যবসায়িক কার্যক্রম অনেকটা কমে এসেছে।


সাঈদ হোসেন চৌধুরী আওয়ামী লীগ নেতা ঢাকার সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর ভাই। তাদের বাবা হেদায়েত হোসেন চৌধুরী ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি পূর্ব পাকিস্তান চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।


এদিকে খেলাপি ঋণ সংশ্লিষ্টতার কারণে পরিচালনা পর্ষদ থেকে বাদ পড়েছেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বর্তমান পরিচালক শিল্পপতি এ এস এম ফিরোজ আলমও। রোববার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠানো হয়।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, এ এস এম ফিরোজ আলমের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে খেলাপি ঋণ থাকায় ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ১৫(৬)(উ) ধারা বিধান অনুযায়ী এ এস এম ফিরোজ আলমকে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিচালক নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নেই।


ওই চিঠিতে এ কে এম সহিদ রেজা, আলহাজ মোশারফ হোসেন এবং এম আমান উল্লাহকে ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com