শিরোনাম
জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের
প্রকাশ : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:১৮
জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ বাংলাদেশ ব্যাংকের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রস্তাবিত ‘আমানত সুরক্ষা আইন, ২০২০’ নিয়ে গুজবে বিভ্রান্ত বা আতঙ্কিত না হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।


আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোনো আমানতকারীর যত টাকাই থাকুক না কেন, এক লাখ টাকার বেশি ফেরত পাবেন না- সোশাল মিডিয়ায় এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানানো হয়| পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফও করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম।


সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান টাকা রাখার পর যদি ওই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সব আমানতকারী মাত্র এক লাখ টাকা পাবে খবরে বলা হচ্ছে, এটা আসলে গুজব। আমানতের সুরক্ষা আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় তাহলে প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে আবেদন ও পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে আমানতের সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ফেরত দেয়া হবে। পরে আমানতের বাকি টাকা ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ফেরত দেয়া হবে। এ বিষয়ে শঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।


ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রক্ষিত আমানত সুরক্ষা প্রসঙ্গে লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সুরক্ষায় ১৯৮৪ সালে অর্ডিন্যান্স হয়। ওই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কোনো ব্যাংক বন্ধ হলে আমানতের অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য বীমা কভারেজের পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা মাত্র। পরে ব্যাংক আমানত বীমা আইন-২০০০ এ আমানতকারীদের সুরক্ষা হিসেবে এটা বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়। আগামীতে এটি বাড়ানোর বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন।


তিনি জানান, কোনো ব্যাংক বন্ধ ঘোষণা দিলে অনধিক ১৮০ দিনের মধ্যে আমানতকারীদের এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল’ থেকে পরিশোধ করা হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বীমা তহবিলে প্রিমিয়াম জমা হয়েছে চার হাজার ৫ কোটি টাকা। এ অর্থ বিনিয়োগ হওয়ায় মুনাফাসহ তহবিলে অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৪৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। তহবিলে যে পরিমাণ টাকা রয়েছে তার ৯২ শতাংশ আমানতকারীর হিসাব সম্পূর্ণ বীমাকৃত। আর বাকি মাত্র ৮ শতাংশ আমানতকারী হিসাব বীমাকৃত নয়।


সিরাজুল ইসলাম জানান, এর আগে শুধু ব্যাংকের আমানতকারীরা বীমা সুবিধা পেতেন। কিন্তু নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সকল আমানতকারী এই সুবিধা পাবেন। প্রথমে ব্যক্তি গ্রাহকের টাকা এবং পর্যায়ক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত দেয়া হবে। সবশেষে টাকা পাবে প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখপাত্র।


তিনি বলেন, কোনো ব্যাংক যদি বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে মোট ১৮০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীকে এক লাখ টাকা দেবে। ৯০ দিনের মধ্যে আমানতকারীরা আবেদন করবেন। পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে। বাকি টাকা পরবর্তীতে বন্ধ হওয়া ব্যাংকের সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীকে পরিশোধ করা হবে।


তিনি আরো বলেন, ১৯৮৪ সালে আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় যে আইন করা হয় সেখানে আমানতের অর্থ ফেরত দেয়ার পরিমাণ ছিল ৬০ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ২০০০ সালে আমানত বীমা আইন প্রবর্তন করে এক লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে এই আইনে আমানতকারীরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। তবে সংশোধিত আইনে এটি বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ অবস্থায় বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জনগণকে বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


বিবার্তা/জাহিদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com