শিরোনাম
৭ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:৪৫
৭ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের (জুলাই-জানুয়ারি) সাত মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৩৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে) যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা। সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা, নানা উদ্যোগ ও ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বাড়িয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রথম সাত মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ হাজার ১০৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৬৩৪ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৭০ কোটি ৬ লাখ ডলার।


প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে পাঁচটি হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ। এর মধ্যে গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। চলতি অর্থবছরে দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২২৭ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের ২০ দশমকি ৬০ শতাংশ।


বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হচ্ছে আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।


অর্থবছরের সাত মাসে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৫ কোটি ২৫ লাখ ডলার। তৃতীয় দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার । চতুর্থে থাকা কুয়েত থেকে এসেছে ৮৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে পঠিয়েছে ৮৭ কোটি ৫৭ লাখ ডলার।


মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। এছাড়া ওমান থেকে ৭১ কোটি ৮৪ লাখ, কাতার থেকে ৬৫ কোটি ৫৩ লাখ, ইতালি থেকে ৪৯ কোটি ৩ লাখ এবং বাহরাইন থেকে ২৭ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এসেছে।


রেমিট্যান্সের প্রণোদনার অর্থ যেন সহজে প্রবাসীরা পাঠাতে পারে সেজন্য বেশ কিছু শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি এক সার্কুলারে দেড় লাখ টাকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রকার কাগজপত্র লাগবে না বলে জানিয়েছে। আগে ১৫০০ মার্কিন ডলার বা সমমূল্যের অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে বিনা প্রশ্নে প্রণোদনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্ত প্রবাসীদের বোঝার সুবিধার্ধে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি দেড় লাখ টাকার ওপরে রেমিট্যান্সের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে।


এদিকে দেড় লাখ টাকা বা দেড় হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্স প্রেরণকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। আগে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রেমিট্যান্সের কাগজপত্রাদি দাখিলের সময়সীমা ছিল। এটি বাড়িয়ে ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে।


জানা গেছে, দেড় লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্সের নগদ প্রণোদনা পাওয়ার জন্য রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংকের শাখায় পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতার দেয়া নিয়োগপত্রের কপি জমা দিতে হয়। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ব্যবসায় নিয়োজিত হলে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি দিতে হয়।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়। যা অর্থবছরের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।


তারও আগে বিগত চার বছরের মধ্যে দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। সে সময় রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com