কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের 'হত্যা'র বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:০৮
কুবি শিক্ষার্থী ও তার মায়ের 'হত্যা'র বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি
কুবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিন বেগমকে 'হত্যা'র ঘটনায় দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করে তারা।


সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পূবালী চত্বর এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।


মানববন্ধনটি কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর থেকে স্লোগান দিতে দিতে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আসে এবং দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থা করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগানে মুখরিত হন। তারা বলেন, “তুমি কে? আমি কে? সুমাইয়া, সুমাইয়া”, “আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাইরে”, “জবাব চাই, জবাব চাই— প্রশাসন জবাব চাই”,“বিচার চাই, বিচার চাই— সুমাইয়া হত্যার বিচার চাই।”


মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সুমাইয়া আফরিন ও তার মায়ের হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত অতি দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।


লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নিহত সুমাইয়া আফরিনের সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, 'আমরা আমাদের সহপাঠীকে হারিয়েছি। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে আমাদের দুটি দাবি প্রথমত, যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত, খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তথা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।'


নিহতের আরেক সহপাঠী মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমাদের সহপাঠী সুমাইয়া আফরিন এবং তার মাকে কুমিল্লা শহরের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’


কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করলে আমরা গিয়ে কথা বলেছি। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পুলিশ দেখছে। এছাড়া, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানান।


এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে শহরে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অতিরিক্ত বাসের দাবি নিয়ে গেলে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন অস্বীকৃতি জানান। ফলে ক্ষোভে শিক্ষার্থীরা প্রথমে রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং এর কিছুক্ষণ বাদে পুরো প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করে। দুপুর ২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের তালা খুললেও সর্বশেষ খবর পাওয়া অবধি রেজিস্ট্রার দপ্তর তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।


এনিয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, একটা বাস ইতিমধ্যে দেওয়া হয়েছে। আর এর আগেই আমাদের প্রশাসন থেকে ঘটনাস্থলে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং প্রক্টর গিয়েছেন। আরেকটি বাস দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। এর মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।


উল্লেখ্য, রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরীতে নিজ বাসা থেকে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিন বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এটি 'পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড' এবং তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।


বিবার্তা/প্রসেনজিত/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com