বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘রক্তঋণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান পালন
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮:৩৬
বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘রক্তঋণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান পালন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘রক্তঋণ’ শীর্ষক এক ব্যতিক্রমী স্মরণ সভার আয়োজন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।


১৪ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।


এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সন্তানেরা সেই সময়ের নির্মম ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন।


এছাড়া দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, গবেষক, কবি, সাহিত্যিকবৃন্দ ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।


সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বাঙালির মূলস্রোত শহিদ বুদ্ধিজীবীদের ধারণ করে এবং হত্যাকারীদের প্রত্যাখ্যান করে। আমি মনে করি, কোনো হত্যাকারীর সন্তান পিতার আত্মপরিচয়ে গর্বিত হতে পারে না বরং ঘৃণা এবং বিক্ষোভে থাকার কথা। অন্যদিকে শহিদ পরিবারের যাঁরা সন্তান তাঁরা আমাদের গৌরব, ভালোবাসা, প্রীতি ও আলিঙ্গন। তাঁরা সবকিছুর মধ্যে বছর জুড়ে থাকেন।


আমরা শহিদদের স্মরণ করি এ কারণে- যেন এর মধ্যে সত্য অনুসন্ধান করতে পারি। নিজেদের শানিত করতে পারি।’


দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের ইতিহাস অবশ্য পাঠ্য করেছে। আমাদের ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস পাঠ করছে। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট চালু করা হয়েছে। এটি একটি সরকারের সময়ে বন্ধ করা হয়েছিল। সেটি আমরা পুনরায় চালু করেছি। কারণ আমার শিক্ষার্থীরা যাতে আলোকিত হয়, বাংলাদেশকে চিনে, জানে।


সে যেন ১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ে উজ্জীবিত হয় এবং ১৪ ডিসেম্বরের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে পারে। নতুন করে বিজয়ী ভাবনাকে আজন্ম লালন করতে পারে।’


অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে শহিদ মুনির চৌধুরীর সন্তান আসিফ মনির তন্ময় বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা যে কাজ রেখে গেছেন সেটিকে সংরক্ষণ এবং ডিজিটাল ডকুমেন্টেশনের আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি। তাঁদের কাজ নিয়ে উচ্চতর গবেষণা করা দরকার।


পাঠ্যসূচিতে বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে পাঠ থাকা আবশ্যক। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা এ বিষয়ে শুধু ১৪ ডিসেম্বর কথা বলতে চাই না। সারাবছর আমরা কথা বলতে চাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই।’


অনুষ্ঠানে শহিদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সন্তানদের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন শহিদ মুনির চৌধুরীর সন্তান আসিফ মনির, আহমেদ মুনীর ভাষণ, শহিদ কাজী শামসুল হকের সন্তান কাজী সাইফুদ্দীন আব্বাস, শহিদ গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সন্তান আলী মোর্তুজা। শহিদ স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন ও বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী শিমুল মুস্তাফা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর- রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নুরুর রহমান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিস্টিংগুইড প্রফেসর ড. এ কে এম নুর-উন-নবী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, শ্যামা রহমান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাস সিংহ রায়, সরকারি সংগীত কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কৃষ্টি হেফাজ প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি স্মরণ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ। স্মৃতিচারণ শেষে সন্ধ্যায় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আগত অতিথিবৃন্দদের সঙ্গে নিয়ে মোমবাতি
প্রজ্বলন করা হয়।


এছাড়া অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদারসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ‘রক্তঋণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com