‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই নাই’
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৩, ১৫:৫২
‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই নাই’
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বিএনপিকে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের জনক এবং দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিক রূপদাতা বলে আখ্যায়িত করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।


এসময় তিনি বলেন, দুর্নীতিকে যারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করেছে তারাই এখন বলে আমরা দুর্নীতি করি না; ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই নাই’।


১৮ আগস্ট, শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের মাঠে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এ দেশে অর্থপাচারকারী, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ফ্যাসিবাদের জনক ও দুর্নীতির চ্যাম্পিয়ন সাব্যস্ত করেন বিএনপিকে। এ দেশে ভোট চুরির রাজনীতির পেছনে বিএনপির হাত আছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।


এসময় তিনি বলেন, বিএনপি আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছে, ভোট চুরি করেছে, ভুয়া ভোটার তালিকা করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে এই বিএনপি। তারা এখন বলে এটা নাকি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র। ফ্যাসিবাদ কাকে বলে তা বিএনপির শাসন আমল দেখলেই বোঝা যায়, ফ্যাসিবাদের জ্বলন্ত উদাহরণ বিএনপি। তারা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র তৈরি করেছে আর শেখ হাসিনা গণতন্ত্র কায়েম করেছে, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে গণতন্ত্র কায়েম করেছে। গণতন্ত্রকে যারা ধ্বংস করেছে তারা এখন গণতন্ত্রের কথা বলে। দুর্নীতিকে যারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে তারা এখন দুর্নীতির কথা বলে; ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না’।


শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে বিএনপি বাধাগ্রস্ত করছে বলে তাদের উপর আমেরিকার ভিসা নীতি প্রদান করার দাবিও জানান তিনি।


এসময় তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। কিন্তু বিএনপি সেটায় বাধা দিচ্ছ। অপরাধী কারা আমরা নাকি যারা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় না তারা।আমেরিকার নজরে কী এসব আসে না! ভিসা নীতি বিএনপির বিরুদ্ধে তাহলে কেন দেয়া হয় না।যারা আগুন সন্ত্রাসের কাজ করে, গ্রেনেড হামলা করে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কেন নয়।


শেখ হাসিনার সাহস নিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বড় দোষ তিনি সত্য কথা বলেন। তিনি মৃত্যুকে ভয় পান না, কোনো বৃহৎ শক্তির হুমকি ধামকি ভয় পান না। তিনি একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। বড় বড় মোড়লদের তিনি ক্ষেপান কারণ তিনি সব জানেন।


তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরকে নিয়ে বলেন, ফখরুলের এখন চোখের পানিতে বুক ভেসে যায় পানি খেতে খেতে। পানির মধ্যে আবার চোখের পানি চলে যায়, কি যে কান্না। মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করে। গরুর হাটে গোলাপ বাগে তার আন্দোলনের বারোটা বেজেছে।


তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারেক রহমানকে বলেন সাহস থাকলে দেশে আসতে, রাজপথে ফয়সালা হোক। তিনি নিজে আইন ভঙ্গ করে এখন ফরমায়েশ দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে আদালতের রায় আছে তার কোনো বক্তব্য, স্টেটমেন্ট অনলাইনে প্রচার যাবে না। কিন্তু প্রতিদিনই অনলাইনে তিনি বিএনপিকে আন্দোলনের ফরমায়েশ দিয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকা কী এই গণতন্ত্রের লেবাসধারী অপরাধীকে দেখেন না! কানাডার আদালত বলেছে বিএনপি হলো বাংলাসগের টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন।


জনগণকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিপক্ষে। আসুন বাংলাদেশের জনগণ রক্ত দিয়ে যে দেশ স্বাধীন করেছে সে দেশে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিদের পরাজিত করে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ী হয়ে মুক্তিযুদ্ধের পতাকা উড্ডীন করবো।


পলাশীর যুদ্ধে সিরাজ উদ্দৌলার পতনের সাথে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডকে সদৃশ মনে করে তিনি বলেন, মীর জাফর, ইয়ার লতিফ, জগৎশেঠের মতো বিশ্বাসঘাতকদের কারণে সিরাজ উদ্দৌলার পতন হয়েছিল। এতে কি কোনো সন্দেহ আছে যে পলাশীর যুদ্ধের ইয়ার লতিফ আর পঁচাত্তরের জিয়াউর রহমানের মধ্যে কোনো তফাত নেই? কারবালার ময়দানেও তো শিশু আর নারীকে টার্গেট করেনি যেটা পঁচাত্তরে করা হয়েছে। আমি মনে করি পলাশীর যুদ্ধে মোহনলালের ভূমিকা আর পঁচাত্তরে কর্নেল জামিলের ভূমিকা একই। পঁচাত্তরের সময় কেউ এগিয়ে না এলেও এগিয়ে এসেছিলেন কর্নেল জামিল।


বঙ্গবন্ধু যেভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন সেটা ইতিহাসে কেউ করতে পারেনি। আমাদের এ জাতি রাষ্ট্রের নির্ভেজাল স্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


ওবায়দুল কাদের নামাজ -এ জুমার আগে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম রাখার ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জুমার নামাজের আগে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম না রাখলে ভালো হতো। এসব প্রোগ্রাম সমস্যা না হলে বিকেলে রাখলে ভালো হয়। কারণ আমরা যা কিছু জানি তা থেকে কিছু জানানোর জন্য এখানে আসি কিন্তু সেটা হয়ে উঠে না সময়ের কারণে।


বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যে সাধারণ জনগণের উইং তৈরি করেছিলেন সেটা ইতিহাসে বিরল। ওয়ার এগেইন্সট টেরোরিজম বিফল হয়েছে কিন্তু জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা মডেল সফল হয়েছে।


এসময় তিনি আরো বলেন, ‘Love is a treasure for people to share’ এটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর মেসেজ যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।


উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবীর শয়ন।সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।


আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি হোসাইন সাদ্দাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।


বিবার্তা/ছাব্বির/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com