জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ১৯:৩৭
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য সর্বমোট ৮৮৭ কোটি ৯০ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।


২৪ জুন, শনিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপে অনুষ্ঠিত ২৫তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে বাজেট ঘোষণা করেন ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার।


প্রস্তাবিত বাজেটের মধ্যে রাজস্ব ৫০৯ কোটি ৬ লক্ষ ১ হাজার টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য ৩৭৮ কোটি ৮৪ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা দীর্ঘ আলোচনা শেষে সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া সিনেট অধিবেশনে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ৪৭৪ কোটি ৪৫ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদিত হয়।


সিনেট চেয়ারম্যানের অভিভাষণে উপাচার্য ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে আমরা ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট। এটি আমাদের পবিত্র অঙ্গীকার। এই প্রিয় দেশমাতৃকার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা আমাদের শ্রেষ্ঠতম দায়িত্ব। আমাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আর নির্যাতিত মা-বোনদের আত্মত্যাগের সঙ্গে রয়েছে গভীর রক্ত ও আত্মিক ঋণ। এ কারণেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, মুক্তবুদ্ধিচর্চার এক অনন্য বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বদ্ধপরিকর। সে লক্ষ্যেই আমাদের নিরন্তর পথচলা। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আগামীর এ পথ চলা হয়ে উঠুক আরো মুক্তির, আরো সুন্দরের, আরো উজ্জ্বলতর নবধারার। আসুন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশকে অগ্রভাগে নিয়ে যাই স্বমহিমায়।’


উপাচার্য সিনেট অভিভাষণে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি হয়ে উঠেছেন গোটা জাতির প্রধান অভিভাবক। তিনি একইসঙ্গে আজ বিশ্ববরেণ্য রাজনৈতিক নেতা। তার সততা, নিষ্ঠা, প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, দক্ষতা আর রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ক্যারিশমেটিক নেতাদের বিরল এক দক্ষতা। বঙ্গবন্ধুকন্যা সেই গুণে গুণান্বিত। সে কারণেই তিনি বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বাইরে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার পদ্মাসেতু নির্মাণের সফল রাষ্ট্রনায়ক। একইভাবে অত্যন্ত বিজ্ঞোচিত বিবেচনায় তিনি অতিসম্প্রতি বাংলাদেশের আত্মমর্যাদার এক সাহসী ও ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হয়েছেন। কূটনীতিতে বিশেষ রাষ্ট্রসমূহকে বিশেষ সুবিধা বা মর্যাদার বদলে তিনি সমতার কূটনীতি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে অন্যান্য সকল রাষ্ট্র্রের কূটনীতিকদের একই মর্যাদায় শামিল করে মূলত: সমতা, সমমূল্যায়ন ও বিশেষ হস্তক্ষেপ নিরোধের যে সাহসিকতা প্রদর্শন করেছেন, তা বাংলাদেশ তথা বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার পরিচায়ক।’


দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন দেশপ্রেমিক, প্রাজ্ঞ, প্রবল সাহসী ও দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আগামী প্রজন্মের হৃদয়ে ঠাঁই করে নেবে। মূলত: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের সবলতার বহুগুণ তাঁর প্রিয় কন্যা শেখ হাসিনার মধ্যে অনুরণিত এবং তিনি তা গৌরবের সঙ্গে চর্চাও করেন বটে। সে কারণেই বঙ্গবন্ধু কঠিন দুঃসময়ও আমাদের চিন্তনে সাহসিকতার অনন্য প্রতীক। মূলত: বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-এই তিন আমাদের সম্মিলনের, একাকার হবার, একাত্ম হবার, বলীয়ান ও অনুপ্রাণিত হবার গভীর শেকড়। এই শেকড় থেকে উৎসারিত সকল শক্তি নিয়েই বাঙালি প্রিয় দেশমাতৃকাকে গড়ে তোলার দৃপ্ত শপথে সর্বদা প্রস্তুত।’


অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পিএসসির সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খানসহ ২৫ জন সিনেট সদস্য।


এছাড়া বিভিন্ন সংসদীয় আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষসহ ৬৯ জন সম্মানিত সিনেট সদস্য ও ৪ জন আমন্ত্রিত সিন্ডিকেট সদস্য অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশনের শুরুতেই সিনেট সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিবর্গের প্রতি শোক জ্ঞাপনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সিনেট অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সিনেট সচিব।


বিবার্তা/রাসেল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com