
কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ মহেশখালীতে পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠেছে ‘আগুন পান’। গোরকঘাটা জেটিঘাটে গেলেই চোখে পড়ে ব্যতিক্রমী এই পানের দোকানগুলোর সামনে ভিড়। কেউ ভিডিও করছেন, কেউ আবার আগুন জ্বালানো পান মুখে দিয়ে সেলফি তুলছেন।
প্রায় দেড় যুগ আগে মহেশখালীর মোহাম্মদ সেলিম স্থানীয় মিষ্টি পানকে নানা মশলা মিশিয়ে বিক্রি শুরু করেন। পরে ইউটিউব দেখে শিখে নেন আগুন পান তৈরির কৌশল। বর্তমানে তাঁর দোকানের পাশাপাশি আরও দুটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে এই আগুন পান।
এক খিলি আগুন পানে ব্যবহার করা হয় ২০-৩০ ধরনের মশলা। এর মধ্যে রয়েছে নারকেল ও সুপারি গুঁড়া, খেজুর, কিশমিশ, মোরব্বা, নকুল দানা, এলাচ, সেমাই, কালিজিরা ও পান পরাগসহ নানা উপকরণ। বিশেষ স্প্রে (গ্লিসারিন, পটাশিয়াম ও পানির মিশ্রণ) দিয়ে পান জ্বালিয়ে মুখে দেওয়া হয়। প্রতিটি আগুন পান বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক রাজীব নাথ বলেন, ভিডিওতে আগুন পান অনেকবার দেখেছি। খাওয়ার পর ভিন্নরকম স্বাদ পেলাম।
সীতাকুণ্ডের ব্যবসায়ী সাধন বিকাশ বলেন, মহেশখালীর মিষ্টি পানের সুনাম আগেই শুনেছি। খেয়ে না গেলে ভ্রমণটাই অসম্পূর্ণ লাগত।
শেফালী ঘোষের জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান- ‘যদি সুন্দর একটা মন পাইতাম; মহেশখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাওয়াইতাম’-এখনো মহেশখালীর পানকে জনপ্রিয় করে রেখেছে।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোরকঘাটা জেটিঘাটে চলে হরেক রকম পানের জমজমাট বেচাকেনা। তাই মহেশখালীতে আসা পর্যটকরা মিষ্টি পান বা আগুন পান না খেয়ে প্রায় কেউই ফেরেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল গাফফার বলেন, মহেশখালীতে বর্তমানে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে মিষ্টি পানের চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে পান উৎপাদিত হয় ১৮ থেকে ২০ মেট্রিক টন। মহেশখালীর মিষ্টি পান চাষে আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণসহ আমি নিজেই পান চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে এই পান সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দুবাই, মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। দ্বীপের লবণাক্ত আবহাওয়া ও মাটি পান চাষের জন্য উপযোগী।
বিবার্তা/ফরহাদ/এমবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]