
মত প্রকাশের জন্য কোনো সাংবাদিক হয়রানির শিকার হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
১২ জুলাই, শনিবার সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব ছাড়াও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত থেকে সাংবাদিক ও অতিথিদের প্রশ্নের জবাব দেন।
এক সাংবাদিকের প্রশ্ন, গত ১৬ বছরে গণমাধ্যম সূচকে আমরা ৪৪ ধাপ পিছিয়েছি, এক বছরে সরকারের অর্জন কী? এ প্রশ্নের জবাবে উপ-প্রেস সচিব বলেন, গত এক বছরে গণমাধ্যম সূচকে ১৬ ধাপ উন্নতি হয়েছে। সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক আইন বন্ধ করা হয়েছে। গুরুতর সাইবার হ্যাকিং ছাড়া অন্য অপরাধগুলো জামিনযোগ্য করা হয়েছে। বন্ধ হওয়া গণমাধ্যমগুলো পুনরায় প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। টেলিভিশন সম্প্রচারের জন্য নতুন অনেক কর্মসূচিও শুরু হয়েছে।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে প্রেস উইং থেকে বলা হয়, কমিশনের বেশ কিছু প্রস্তাব তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় নিয়ে কাজ করছে। কিছুদিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা মতবিনিময় করবেন। সেখানে সুপারিশগুলো পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না, মাদক নির্মূল হচ্ছে না এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা কঠিন হচ্ছে— এমন মন্তব্যের জবাবে আজাদ মজুমদার বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল ছিল। সরকার পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা হলেও সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত একটি ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা মতবিনিময় করে পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
নির্বাচনের আগে ভোটকেন্দ্রে বাধা ও হয়রানির আশঙ্কা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে সভা করেছেন। প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং মিডিয়ার জন্য আচরণবিধি প্রস্তুত করা হবে। বাধা পেলে কোথায় অভিযোগ করবেন, তা নির্ধারণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো দলকে প্রতিনিধিত্ব করে না। সব দল যেন সমানভাবে অংশ নিতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে বাধ্য করা হবে। নির্বাচনে অনিয়ম হলে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করতে পারবেন। দায়িত্বপ্রাপ্তরা নিবিড় প্রশিক্ষণ পাবেন যাতে ভোটার ভোটে সন্তুষ্ট থাকে।
সুধীজনদের রাজশাহীর খেলাধুলার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের জন্য স্টেডিয়াম ও হোটেলের প্রয়োজন। শুধু স্টেডিয়াম নয়, এখানে একাডেমি প্রতিষ্ঠারও পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে তরুণ ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
কৃষি বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী কৃষি ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত। প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি চীন ও জাপান সফর করেছেন, যেখানে বাংলাদেশের আম আমদানির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
সাংবাদিক ও সুধীজনদের উত্থাপিত অন্যান্য বিষয় যেমন শিক্ষা উপদেষ্টার সাথে মতবিনিময়, শিক্ষা কারিকুলামের সংস্কার, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট সমস্যা, ট্যাক্স বৃদ্ধি, মূলধারার গণমাধ্যম সাংবাদিকদের নির্বাচনী পাশ সমস্যা, রাজশাহীর প্রতিনিধিত্বহীনতা, হাইটেক পার্ক, শিশু হাসপাতাল, নভোথিয়েটার কার্যকরী ব্যবহার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং’র কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার আশ্বাস দিয়েছেন। সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে বেশি লেখালেখি করার আহ্বান জানান।
বিবার্তা/মোস্তাফিজুর/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]