শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২৯
শাওয়াল মাসের ৬ রোজার ফজিলত
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+
পবিত্র রমজানব্যাপী যারা সিয়াম সাধনা করেছেন, শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখলেই মিলবে সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব। এ ছয়টি রোজা রাখা মোস্তাহাব।


শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখলেই মিলবে সারাবছর রোজা রাখার সওয়াব। এ ছয়টি রোজা রাখা মোস্তাহাব।শাওয়াল মাসের ফজিলত বিশুদ্ধ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। হযরত আবু আইয়ুব আনসারি রা. বলেন, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের ফরজ রোজাগুলো রাখল, অতঃপর শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারাবছর ধরেই রোজা রাখল। (মুসলিম ১১৬৪)


এ বিষয়ে কোরআনেও বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, কেউ কোনো নেক আমল করলে, তাকে তার দশ গুণ সওয়াব প্রদান করা হবে। (সুরা আনআম ১৬০)


রমজানের এক মাসের দশগুণ হলো ১০ মাস আর শাওয়াল মাসের ছয়দিনের দশগুণ হলো ৬০ দিন অর্থাৎ দুইমাস। সুতরাং ৩৬টি রোজায় সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।


তবে এরকম শর্ত থাকলেও শরিয়তসম্মত কারণে রমজানের পূর্ণমাস রোজা রাখেননি এমন লোকদের শাওয়াল মাসের ছয় রোজা রাখাতে মানা নেই। বরং সেক্ষেত্রে নফল রোজার সীমাহীন নেকি তিনি পাবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।


কেননা নবীজি সা. বেশি বেশি নফল রোজা নিজে তো রাখতেনই, সাহাবিদেরকেও উত্সাহিত করতেন। নফল রোজার মধ্যে আছে সাপ্তাহিক দুই রোজা (সোমবার ও বৃহস্পতিবার), মাসিক তিন রোজা (আইয়ামে বীজ তথা চন্দ্রমাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা), মহররম ও আশুরার রোজা, শাবান মাসের রোজা, শাওয়ালের ছয় রোজা, জিলহজ মাসের প্রথম দশকের রোজা বিশেষ করে ৯ তারিখের রোজার বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করেছেন প্রিয় নবী সা.।


পবিত্র কোরআনে নফল ইবাদতের সীমাহীন গুরুত্ব বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, যখন তুমি (ফরজ) দায়িত্ব সম্পন্ন করবে তখন উঠে দাঁড়াবে এবং তুমি (নফলের মাধ্যমে) তোমার রবের প্রতি অনুরাগী হবে।’ (সুরা ইনশিরা ৭-৮)।


হযরত উবাইদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন রসুল সা.-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুলুল্লাহ সা. বললেন,তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখো, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে’ (তিরমিজি: ১/১৫৩৪)।


শাওয়ালের রোজা কিভাবে রাখবো


শাওয়ালের রোজা রাখা ফরজ না। এটা নফল ইবাদত। তার রয়েছে অসংখ্য অগণিত সওয়াব। হাদিসে প্রিয় নবী সা. শাওয়াল মাসের প্রথম দিকে, মধ্যভাগে বা শেষাংশে নির্দিষ্ট করে রোজা রাখার কথা বলেননি। আবার রোজা ছয়টি লাগাতার রাখার নির্দেশনাও হাদিসে দেখা যাচ্ছে না। তাই বিজ্ঞ ফিকহবিদ ও আলিমগণের অভিমত হলো শাওয়াল মাসের প্রথম দিন অর্থাত্ ঈদুল ফিতরের দিনটি বাদ দিয়ে মাসের যেকোনো ছয়দিনে রোজা রাখলেই উল্লিখিত সওয়াব লাভ করা যাবে।


শাওয়াল মাসে বিরতি দিয়ে ছয়টি রোজা পূরণ করতে পারলে হাদিসে বর্ণিত সওয়াব পাওয়া যাবে। যাদের ভাংতি রোজা আছে, অসুস্থতা কিংবা নারীদের মাসিক তথা হায়েজ-নেফাসের কারণে রমজানের রোজা অপূর্ণ থাকে, তাদের জন্য নিয়ম ও করণীয় হলো শাওয়াল মাসে তাদের ভাংতি রোজাগুলো আগে পূর্ণ করে নেবে। তারপর তারা শাওয়ালের ৬ রোজা পালন করবে।


হাদিসে আছে, যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহতায়ালা কবুল করেন, তখন তাকে অন্য আরও নেক আমলের তওফিক দেন। এই রোজাগুলো রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার নিদর্শন।


হযরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এই রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদের রাখার নির্দেশ দিতেন। হজরত আবু আইয়ুব আনসারি রা. থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, অতঃপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল।’ (মুসলিম: ২/৮২২)


বিবার্তা/মাসুম
সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com