মুক্তির দূত হে পিতা তোমায় স্মরি
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৫
মুক্তির দূত হে পিতা তোমায় স্মরি
কাজী সালমা সুলতানা
প্রিন্ট অ-অ+

শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলার মানুষের অহংকারের নাম, বিশ্বাসের নাম। বাংলাদেশের স্থপতি তিনি। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।


বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সৃষ্টি এবং বিজয়ের মুখোমুখি অগ্রসর হওয়ার নেতৃত্ব তিনিই দেন। বাঙালির মুক্তি আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ পথযাত্রায় বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের অবদান ছিল অতুলনীয়।’


বাঙালির অধিকার রক্ষায় ব্রিটিশ ভারত থেকে শুরু করে ভারত বিভাজন আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করেন তিনি।


গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। আদর্শবাদী ও আত্মত্যাগী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন স্বাধীনতা।


শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের এদিনে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শেখ লুৎফুর রহমান ও মা সায়রা বেগম। কারাগারের রোজনামচায় তিনি লিখেছেন, “আমার ওপর আমার মা- বাবার টান যে কত বেশি, সে কথা কাহাকেও বোঝাতে পারব না। তারা আমাকে ‘খোকা’ বলে ডাকেন। মনে হয় আজও আমি তাদের ছোট্ট খোকাটি। পারলে কোলে করেই শুয়ে থাকে। এই বয়সেও আমি আমার মা- বাবার গলা ধরে আদর করি।”


কিশোর মুজিব ১৯৩৪ সালে বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসার জন্য দুই বছর পড়াশোনা বন্ধ থাকে। বেরিবেরি থেকে সুস্থ হয়ে উঠলে আক্রান্ত হন চোখের গ্লুকোমায়। চোখের চিকিৎসা শেষে কিছুদিন বিশ্রাম নেন।


এসময় তিনি মাদারীপুরে অবস্থানকালে দেখেন স্বদেশি আন্দোলনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৫ থেকে ১৬ বছরের তরুণরা নাম লেখাচ্ছেন স্বদেশি আন্দোলনে। মুজিব তাদের দলে নাম লেখালেন। কিশোর বয়স থেকেই তার মধ্যে বাঙালি জাতীয়তাবোধ ও রাজনৈতিক প্রতিভার বিকাশ প্রকাশিত হয়।


‘ইংরেজদের বিরুদ্ধেও আমার মনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হলো। ইংরেজদের এদেশে থাকার অধিকার নেই। স্বাধীনতা আনতে হবে। আমিও সুভাষ বাবুর ভক্ত হতে শুরু করলাম।’ (অসমাপ্ত আত্মজীবনী) ১৯৩৭ সালে সুস্থ হয়ে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি
হন। এখানে পড়াশোনা করার সময় ওই স্কুলের শিক্ষক কাজী আবদুল হামিদ মুসলিম সেবা সমিতি গঠন করেছিলেন। তিনি মারা গেলে ওই সমিতির দায়িত্ব নেন শেখ মুজিব, হন সাধারণ সম্পাদক। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে কিশোর শেখ মুজিব প্রথম সাংগঠনিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হন।


পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি তিনি নিয়মিত পত্রিকা পড়তেন। বাসায় আসা আনন্দবাজার, বসুমতী, আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী ও সওগাত পত্রিকা তিনি নিয়মিত পড়তেন। স্কুলবেলায় তিনি ছিলেন ভীষণ বন্ধুপ্রবণ। সেই সাথে একগুয়ে জেদী স্বভাবের।


১৯৩৮ সাল ছিল শেখ মুজিবের জীবনের বাঁক বদলের বছর। গোপালগঞ্জে আসেন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, সঙ্গে আসেন শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। তাদের আগমন উপলক্ষে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর দায়িত্ব পড়ে তাঁর কাঁধে। সে সময় শহীদ সোহরাওয়ার্দীর চোখে পড়েন শেখ মুজিব, তার হাত ধরেই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আসেন মুজিব। ওই বছরই গোপালগঞ্জে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগে। শেখ মুজিব সে দাঙ্গায় আসামি হয়ে সাত দিনের জন্য জেল খাটেন।


১৯৩৮ সালে তৎকালীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী ও শ্রমমন্ত্রীর গোপালগঞ্জ আসা উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করার দায়িত্ব পালন করে তাদের সংবর্ধনা দেয়ার সম্পূর্ণ বন্দোবস্ত করেন তিনি। এর পরপরই বন্ধু মালেককে হিন্দু মহাসভার নেতা সুরেন ব্যনার্জীর বাড়ি থেকে ছাড়াতে গিয়ে মুজিব মারামারি করে ১০ দিন কারাগারে আটক থাকেন।


১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতা গিয়ে শহীদ সাহেবের (হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী) সঙ্গে দেখা করে গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগ গঠনের কথা বলেন।


১৯৩৯ সালে গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মধ্য দিয়ে মুজিব রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।


তিনি বিশ্বাস করতেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি ও অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে (অসমাপ্ত আত্মজীবনী)।


মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদান করেন তিনি। ছাত্ররাজনীতি করার মাঝেই ১৯৪১ সালে মুজিব ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অংশ নেন।


পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ভর্তি হন কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে। সে সময় তিনি থাকতেন বেকার হোস্টেলে। সে সময় ইসলামিয়া কলেজ ছিল বাংলাদেশের ছাত্র-আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। শেখ মুজিব এখানে থাকাবস্থায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ সময় ছাত্রলীগের মধ্যে তার একক আধিপত্য গড়ে ওঠে।


পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেবে’ বলে ঘোষণা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে মুজিব এর প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সে অবস্থায় (১১ মার্চ, ১৯৪৮) পাকিস্তানি সেনাশাসক কর্তৃক তিনি গ্রেপ্তার হন।


চার দিন আটক থাকার পর ১৫ মার্চ মুক্তিলাভের পর ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে কর্ডন প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য তিনি আবারও গ্রেপ্তার হন। এবার ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন।


একই বছর ১৯ মার্চ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একটি আন্দোলন পরিচালনা করেন। সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের ছাত্র। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি-দাওয়ার প্রতি সমর্থন দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বহিষ্কার করে।


১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে শেখ মুজিব দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের আগমন উপলক্ষে আওয়ামী মুসলিম লীগ ভুখা মিছিল বের করে। এই মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ১৪ অক্টোবর শেখ মুজিব আবারও গ্রেপ্তার হন। এবার দুই বছর পাঁচ মাস কারাভোগের পর মুক্তিলাভ করেন।


১৯৫২ সালে রাজবন্দি মুক্তি এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি মুজিব জেলখানায় একটানা ১৭ দিন অনশন অব্যাহত রাখেন। ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেল থেকে তিনি মুক্তিলাভ করেন। ১৯৫৩ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগ পায় ১৪৩টি আসন। ১৯৫৫ সালের ৫ জুন তিনি গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২১ অক্টোবর আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের নাম আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ‘মুসলিম’ শব্দ প্রত্যাহার করা হয়।


১৯৫৬, ১৯৫৭, ১৯৫৮ ও ১৯৬১ সালের ধারাবাহিক আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব ক্রমেই বাংলার জনগণের প্রিয় নেতার আসন লাভ করেন।


১৯৬২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশিষ্ট ছাত্রনেতাদের দ্বারা ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’ নামে একটি গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তারা ৬২ থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যায় বঙ্গবন্ধুর আস্থাশীল ছাত্রলীগের মাধ্যমে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, জয়বাংলা বাহিনী গঠন, বাংলাদেশের পতাকা নির্ধারণ, মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব স্লোগান জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে, তা সবই বঙ্গবন্ধুর অনুমোদনক্রমে বিপ্লবী পরিষদের
নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে গৃহীত হয়।


১৯৬২ সালে শরিফ কমিশন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। শেখ মুজিব লাহোরে ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পেশ করেন। একই বছর ২০ মার্চ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু ছয় দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সারা দেশে ৩২টি সভায় গণসংযাগ করেন। এ সময় তিনি সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় চারবার গ্রেপ্তার হন।


১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ বাঙালি সেনা ও সিএসপি অফিসারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে।


১৯৬৯ সালে গঠিত কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলন শুরু করে। এই গণ-আন্দোলনে কেন্দ্রীয় সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে মুজিবসহ অন্যান্য আসামিকে মুক্তিদানে বাধ্য হয়।


পাকিস্তানের ২৩ বছর শাসনামলে মুজিব ১৮ বার কারাবরণ করেন এবং সাড়ে ১১ বছর কারাভোগ করেন।


১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সেই সমাবেশে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।


১৯৭০ সালের ৫ ডিসেম্বর জনগণের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষণা দেন – ‘আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তানের’ পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’।


১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রেসকোর্সের জনসমুদ্র থেকে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার সেই ডাকে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা বাংলা।


তারই ডাকে দেশের সকল শ্রেণির মানুষ জনযুদ্ধে ঝাঁপিড়ে পড়ে। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদ ও ৫ লাখ নারী শিশুর জীবন ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাঙালি।


সেই জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালে ষড়যন্ত্রকারীরা সপরিবারে হত্যা করে সমাহিত করে গোপালগঞ্জের নিভৃত গ্রাম টুঙ্গিপাড়ায়। তারা ভেবেছিল, এই সমাহিত করার মধ্য দিয়ে গোটা বাঙালি জাতিকে নিঃশেষ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাঙালির নেতা মুজিব অক্ষয় অমর। আজও মুজিব দুর্জয় বাঙালিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাচ্ছেন।


লেখক: তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com