
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শনিবার (৪ জানুয়ারি)। এদিন দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হবে।
ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় জানিয়েছেন, ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। ওই দিন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেকদের নিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানও হবে।
ছাত্রলীগের দেখভালে নিয়োজিত আওয়ামী লীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ছাত্রলীগের পুনর্মিলনীতে উপস্থিত থাকতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। এ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির পদ অলঙ্কৃত করবেন।
এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের পাশাপাশি সারা দেশের ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতারা উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে প্রায় সবার কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এ অনুষ্ঠান সফল করতে নেয়া হচ্ছে সার্বিক প্রস্তুতি। শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে এ নিয়ে বৈঠক করেছেন সংগঠনটি দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত আওয়ামী লীগের চার নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, বাহাউদ্দিন নাছিম ও বি এম মোজাম্মেল হক।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চমক হিসেবে থাকছে পুনর্মিলনী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন। পাশাপাশি সাবেক নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন পায়রা এবং পতাকা উত্তোলন করে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্বোধন করবেন।
বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্ম হয়। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭২তম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সংগঠনটির ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে ৩দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল ৭টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে কেক কাটা হবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগ পুর্ণমিলনীর আয়োজন করেছে। পুর্ণমিলনীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়া, ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাশে বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হবে। ৭ জানুয়ারি সকাল ১০টায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতার সামনে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার পক্ষে গণঅংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা সপরিবারে হত্যার পর ছিনতাই হয়ে যায় স্বাধীনতার চেতনা ও গণতান্ত্রিক ধারা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা (বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) দেশে ফিরে স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের সূচনা করেন। ছাত্রলীগ ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে অনন্য ভূমিকা পালন করে।-বাসস
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]