
ভাষাসংগ্রামী ও রবীন্দ্র-গবেষক আহমদ রফিক স্মরণে সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মননশীল সংগঠন খামখেয়ালী সভা শনিবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাজধানীর বাংলা মোটরের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক শফি আহমেদের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী, চিত্রশিল্পী আব্দুল মান্নান, আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল সাদি, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লালটু, অন্যপ্রকাশের পরিচালক আবদুল্লাহ নাসের, অনিন্দ্য প্রকাশের প্রকাশক আফজাল হোসেন, খামখেয়ালী সভার সদস্য ও আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ইসরাত রহমান নাদিয়া।
কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ভিডিওবার্তায় শোক ও শ্রদ্ধা জানান অধ্যাপক ড. অভ্র বসু।
কর্মসূত্রে চীন অবস্থানের কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি খামখেয়ালী সভা ট্রাস্টের সভাপতি মাহমুদ হাশিম। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, অতীতের মতো ভবিষ্যতেও আহমদ রফিক জাতির দিশারি হয়ে থাকবেন। আহমদ রফিকের স্মৃতি ধরে রাখতে খামখেয়ালী সভার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ঘোষণা দেন তিনি। খামখেয়ালী সভার রবীন্দ্র গ্রন্থাগারে ‘আহমদ রফিকের রচনা সংগ্রহ’ সংরক্ষণ, আহমদ রফিকের রচনাকে ভিত্তি করে ‘আহমদ রফিক অধ্যয়নসভা’ শুরু এবং রবীন্দ্র গবেষকদের জন্য ‘আহমদ রফিক গবেষণা বৃত্তি’র পরিকল্পনার ঘোষণা দেন। আহমদ রফিকের স্মৃতিরক্ষায় এবং চর্চায় আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন খামখেয়ালী সভা সভাপতি।
স্মরণসভায় বক্তারা বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বধীনতা পরিবর্তী বাংলাদেশে ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে আহমদ রফিকের নিরলস সাধনার কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিকের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর খামখেয়ালী সভার সঙ্গে আহমদ রফিকের স্মৃতি-বিজড়িত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
সহকারী অধ্যাপক ইসমাইল সাদি বলেন, আহমদ রফিকের অনেক রচনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেফারেন্স বই হিসেবে পাঠ্যক্রমে যুক্ত হওয়ার উচিত। কিন্তু সেটি হয়নি।
অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী বলেন, আহমদ রফিক সবসময় ঐক্যবদ্ধ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কথা বলতেন। আমাদের তার দিকনির্দেশনা মনে রাখতে হবে।
অধ্যাপক শফি আহমেদ তার বক্তব্যে আহমদ রফিককে ‘সবচেয়ে বড় রবীন্দ্র গবেষক’ হিসেবে অভিহিত করেন।
আলোচনা ফাঁকে আহমদ রফিকের রচনা থেকে পাঠ করেন মুক্তিযুদ্ধের শব্দসৈনিক প্রখ্যাত আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম ও নায়লা তারান্নুম চৌধুরী। সংগীত পরিবেশন করেন জাকির হোসেন তপন, মঞ্জু-আরা রশিদ ও নাঈমা বিন্তি।
স্মরণসভা শেষ হয় শিল্পীদের ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
উল্লেখ্য রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানিক রবীন্দ্রচর্চায় পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন আহমদ রফিক। কিন্তু, নানা কারণে রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্রের কার্যক্রম একটা সময়ের পর আর চালু রাখা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে তাঁর গভীর দুঃখ ছিল। তারুণ্য-নির্ভর খামখেয়ালী সভার কার্যক্রমে খুব খুশি ছিলেন আহমদ রফিক। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর খামখেয়ালী সভা তাঁকে প্রথম রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা দেয়। আমৃত্যু তিনি খামখেয়ালী সভার প্রধান উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
বিবার্তা/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]