অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানোর পর এবার যুক্তরাজ্যের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিরক্ষা বৈঠকও বাতিল করে দিয়েছে ফ্রান্স। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে ঘিরে হওয়া নতুন ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা জোটকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ ফ্রান্স সর্বশেষ এ পদক্ষেপ নিলো। বিবিসি।
চলতি সপ্তাহে ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্লোরেন্স পারলে ও ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেসের মধ্যে দুইদিনব্যাপী এ বৈঠক লন্ডনে হওয়ার কথা ছিলো। নতুন অকাস জোটের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়া পারমাণবিক সাবমেরিন বানানোর সুযোগ পাচ্ছে। এ কারণে তারা ফ্রান্সের সঙ্গে ৫ বছর আগে করা একটি চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে। এতেই ক্ষেপেছে প্যারিস।
ফ্রান্সে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত লর্ড রিকেটস লন্ডনে দুই প্রতিরক্ষমন্ত্রীর বৈঠক বাতিল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই বৈঠকে রিকেটসের কো-চেয়ার থাকার কথা ছিলো। তিনি বলেছেন, বৈঠকটি পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। গত সপ্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এ ত্রিপক্ষীয় জোটের ঘোষণা দেন। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ফ্রান্সকে নতুন জোটের কথা জানানো হয়।
মূলত দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলার জন্যই এ জোটটি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা একটি নিরাপত্তা চুক্তির আওতায় জোটের অংশীদার অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক শক্তিধর সাবমেরিন বানানোর প্রযুক্তি সরবরাহ করবেন।
এ কারণে ১২টি সাবমেরিন বানাতে ফ্রান্সের সঙ্গে ২০১৬ সালে হওয়া প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-যুব লে দ্রিয়ান। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ফ্রান্সের ‘পিঠে ছুরি মেরেছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্স ক্যানবেরা ও ওয়াশিংটন থেকে তাদের দুই রাষ্ট্রদূতকে ডেকেও পাঠায়। মিত্র দেশগুলো থেকে রাষ্ট্রদূত ডেকে পাঠানোর ঘটনা বেশ বিরল। ত্রিপক্ষীয় জোটের দুই সদস্য দেশ থেকে দূত ডেকে পাঠানোর পর এবার অপর সদস্য যুক্তরাজ্যের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শীর্ষ বৈঠকও বাতিল করলো প্যারিস।
তবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে ফ্রান্সের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে ব্রিটিশ এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, অকাস কোনোভাবেই শূন্য যোগ শূন্য সমান শূন্য নয়। তিনি আরো বলেন, এটা এমন কিছু নয় যা নিয়ে কাউকে উদ্বিগ্ন হতে হবে, বিশেষ করে আমাদের ফরাসী বন্ধুদের তো নয়ই।
বিবার্তা/জুয়েল/ওবাইদুল্লাহ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]