ভারতের অন্ধ্র উপকূলে মোনথার আঘাত, ১ জনের মৃত্যু
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩১
ভারতের অন্ধ্র উপকূলে মোনথার আঘাত, ১ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের অন্ধ্র উপকূলে তাণ্ডব চালিয়ে অন্তত একজনের মৃত্যু ঘটিয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোনথা।


ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে অন্ধ্র প্রদেশের উত্তর-পশ্চিম উপকূলবর্তী অঞ্চলে আছড়ে পড়ে মোনথা।


প্রবল ঝড়ো হওয়ায় ভারতের এ রাজ্যে বহু গাছপালা ভেঙে পড়ে, বেশ কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পাশের রাজ্য ওড়িশার ১৫টি জেলার জনজীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।


এনডিটিভি লিখেছে, অন্ধ্র প্রদেশের কোনাসীমা জেলায় একটি গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়লে এক বৃদ্ধার প্রাণ যায়। একই জেলায় ঝড়ের মধ্যে নারিকেল গাছ উপড়ে পড়ে আহত হন এক কিশোর এবং এক অটোরিকশা চালক।


ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে অন্ধ্র প্রদেশের মাছিলিপত্তম ও কলিঙ্গপত্তমের মধ্যবর্তী কাকিনাড়া এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে উঠে আসতে শুরু করে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোনথা।


অন্ধ্র প্রদেশের কাকিনাড়া, কৃষ্ণা, এলুরু, পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী, ড. বি আর আম্বেদকর কোনাসীমা, এবং আল্লুরি সিতারামা রাজু জেলার চিন্তুরু ও রামপাচোদাভারাম এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি।


রাজ্য সরকার এই সাত জেলায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।


উপড়ে পড়া গাছ সরাতে ১ হাজার ৪৪৭টি আর্থমুভার, ৩২১টি ড্রোন এবং ১ হাজার ৪০টি চেইন স প্রস্তুত রেখেছিল স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। নিচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্রে।


সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিশাখাপত্তম বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল। অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়ওয়াড়া, রাজামুন্দ্রে, কাকিনাড়া, বিশাখাপত্তম এবং ভীমবরম হয়ে চলাচল করা অন্তত ৬৫টি ট্রেন মঙ্গল এবং বুধবারের জন্য বাতিল করা হয়েছিল আগেই।


স্থলভাগে উঠে আসার পথে প্রচুর বৃষ্টি ঝরিয়েছে মোনথা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নেল্লোর জেলার উলাভাপাডু এলাকায় ১২ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
গত ২৪ অক্টোবর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ধাপে ধাপে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে সেই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র রোববার রাত ৩টায় ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়।


সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী তখন সেই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় ‘মোনথা’। এটি থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম, যার অর্থ সুন্দর বা সুবাসিত ফুল।


সোমবার রাতে মোনথা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করে।


বাংলাদেশে এ ঝড়ের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। কয়েকটি জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হলেও বড় কোনো দুর্যোগ ঘটেনি।


বুধবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের উপকূল অতিক্রম করে মোনথা বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।


ঝুঁকি কেটে যাওয়ায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।


উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে বুধবার বিকাল পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।


বিবার্তা/এসএস


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com