
প্রথমে দেখলে মনে হতে পারে এটি কোন বাসা-বাড়ির কক্ষ। কিন্তু না এটি একটি সরকারি কলেজের কক্ষ। সরকারি নির্দেশনা ও প্রশাসনিক নীতিমালা উপেক্ষা করে অধ্যক্ষ কলেজের কক্ষকেই নিজের বসবাসের স্থানে পরিণত করেছেন। কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী জানান, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে কলেজের অফিস কক্ষে অবস্থান করছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের চিলমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজে। অধ্যক্ষকের নাম প্রফেসর ড. মো. মজিবল হায়দার চৌধুরী। তিনি চলতি বছরের এপ্রিল মাস হতে প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিক্ষা কন্ট্রোল কক্ষে তিনি রাতযাপন করছেন।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে, তিনি সপ্তাহের বুধবার রাতে তার নিজ বাড়িতে চলে যান এবং আসেন রবিবার সকালে। এছাড়াও তিনি কয়েকটি শ্রেণি কক্ষের দেয়াল ভেঙে কক্ষ বাড়িয়েছেন।
তবে, ওই অধ্যক্ষের দাবী অভিযোগ গুলো সত্য নয়। কিন্তু কলেজের স্বার্থে তিনি একটি রুমে থাকেন বলে জানান।
সরেজমিনে কলেজটিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিক্ষা কন্ট্রোল কক্ষে বিছানা, আসবাবপত্র রয়েছে। প্রথমের দিকে তিনি ওই খানে রান্না করেও খেতেন। তবে বর্তমানে এক কর্মচারীর বাড়ি হতে নিয়মিত খাবার নিয়ে আসা হয়।
প্রভাষক এ কে এম গোলাম ফারুক বলেন, আমি শিক্ষক প্রতিনিধির সেক্রেটারি কলেজ কক্ষের দেয়াল ভাঙার বিষয়ে আমি অবগত নই। আমাকে জোরপূর্বক ভয় ভীতি দেখিয়ে রেজুলেশন লেখানো হয়েছে। অধ্যক্ষ মহদ্বয় আমাকে বলেছেন আপনার অবসরের কাগজ পত্র কিন্ত আমাকেই সাক্ষর করতে হবে মর্মে আমাকে হুমকির মুখে রাখছেন।
প্রভাষক জিয়াউর রহমান জিয়া জানান, দেয়াল গুলো ভেঙে যে রুম গুলো বড় করা হয়েছে, এতে একাডেমি কাউন্সিলের অনুমতি দরকার কিন্তু সেই অনুমতি নেয়নি। না নিয়ে উপস্থিতির স্বাক্ষরে রেজুলেশন লিখে দেখানো হয়েছে। আসলে ওয়াল ভাঙার বিষয়ে কোনো মিটিংয়েই হয় নাই।
প্রভাষক এটিএম আতিকুর রহমান জানান, কলেজে রাত্রি যাপন করার কোন আইন নাই যেহেতু আমাদের নিজস্ব কোন আবাসিক ভবন নাই। তাছাড়া সরকার প্রতিমাসে বাড়ি ভাড়া বাবদ মুল বেতন থেকে ৩৫% শতাংশ দিচ্ছে। অধ্যক্ষ স্যার যে রুমে অবস্থান করছেন সেটি পরিক্ষার সময় কন্ট্রোল রুম হিসাবে ব্যবহার করা হয়। তিনি রুমে অবস্থান করার পরীক্ষার সময় আমাদের নানান জটিলতায় পরতে হচ্ছে।
কলেজের নাইট গার্ড লালমিয়া জানান, স্যার উপরে একটা রুমে থাকেন। তিনি বুধবার রাতে বাড়িতে যান আর রবিবার সকালে যথা সময়ে এসে কলেজ করেন। আগে তো রুমেই রান্না করে খেতেন। এখন পরে আমি খাবার নিয়ে আসি বাড়ি থেকে।
চিলমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. মজিবল হায়দার চৌধুরী ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে কলেজের স্বার্থে তিনি একটি কক্ষে অনেক কষ্ট করে থাকেন বলে জানিয়েছেন এবং বাকি অভিযোগ গুলো অস্বীকার করেছেন।
বিবার্তা/রাফি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]