ভারত থেকে আমদানিকৃত সাড়ে ৫ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ চাল, ডাল জব্দ
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ১৪:৪৪
ভারত থেকে আমদানিকৃত সাড়ে ৫ কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ চাল, ডাল জব্দ
প্রিন্ট অ-অ+

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি


মেয়াদ উত্তীর্ণ ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল, ডাল ও অবৈধভাবে দেশি ধান মজুত করার অপরাধে দিনাজপুরের হাকিমপুরে (হিলি) বন্দরের মেসার্স মাইক্রো গ্রীন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা করেছেন উপজেলা খাদ্য বিভাগ। অভিযানে জব্দ করা হয়েছে গুদাম থেকে ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকার চাল-ডাল ও ধান।


শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে হাকিমপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (অতিঃদ্বাঃ) মো. সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে খাদ্যশস্য অবৈধভাবে মজুতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেন।


আসামিরা হলেন, হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাইক্রো গ্রীন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল হাকিম মণ্ডল ও প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার হুমায়ুন কবির।


আব্দুল হাকিম মন্ডল জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালপুর মহল্লার বাসিন্দা এবং ম্যানেজার হুমায়ুন কবির হাকিমপুর পৌরসভার উত্তর বাসুদেবপুর মহল্লার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।


মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. সোহেল আহমেদ গোপন সংবাদে জানতে পারে বন্দরের হাকিম মণ্ডলের তিনটি গুদামে অবৈধ ধান ও চাল মজুত রয়েছে এমন সংবাদের সত্যতা প্রমাণ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায়ের নেতৃত্বে গুগাম কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাপী অভিযান চালান।


এসময় গুদামে মেয়াদোত্তীর্ণ ভারত থেকে আমদানিকৃত ৫ হাজার ২৫৮ বস্তায় ১৪৯ দশমিক ৭৭৬ মেট্রিকটন সেদ্ধ চাল, ৬৭০টি বস্তায় ৩২ দশমিক ৮৩০ মেট্রিকটন মসুর ডাল এবং ১৮ হাজার ১৯৪টি বস্তায় ১১৫৫ দশমিক ৭৭৯ মেট্রিকটন ধান জব্দ করা হয়। যার মূল্য ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭ হাজার ২৪৮ টাকা টাকা।


এ ব্যাপারে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩ এর ৪ ধারায় হাকিমপুর থানায় মামলা করেন এই খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা। হাকিমপুর থানার মামলা নং ২৫। তবে গত ২৫ জুন উক্ত গুদামে অভিযান চালানো শেষে তাৎক্ষণিক গণমাধ্যম কর্মীদের সোহেল আহম্মেদ বিবৃতি দেন গুদামে ১৯'শ ৩৩ মে. টন ধান পাওয়া গেছে যার কোন বৈধ কাগজ দেখাতে পারেন নাই কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে মেয়াদ উত্তীর্ণ আমদানিকৃত চাল ২৭১ মে. টন ও মশুরডাল ৪৭ মে. টন পাওয়া গেছে এবং মালামাল গুলো জব্দ করে তিনটি গুদাম সিলগালা করা হয়। এর একদিন পরে মামলার এজাহারে মালামাল কম হলো কেমন করে।
এমন প্রশ্নের জবাবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার (অতিঃ দ্বাঃ) সোহেল আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, অভিযানের দিন তাৎক্ষণিক আমাদের কোন এক্সপার্টার ছিলেন না তাই আমরা অনুমান করে বলেছি।


তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা ও ইউএনও মহোদয়ের সাথে পরামর্শ ক্রমে ইউএনও মহোদয় ও পুলিশ পরিদর্শক ওসি তদন্তের উপস্থিতিতে পরের দিন চার জন এক্সপার্টর নিয়ে গুদামের সিলগালা খুলে জব্দকৃত মালামাল সঠিক আছে কি না তা যাচাই করি। এরপর এক্সপার্টারদের সহযোগিতায় সবার উপস্থিতিতে একটি নির্ভরযোগ্য হিসাব দাড় করায়। তারপরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছি।


হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হক বলেন, গুদামে অবৈধভাবে চাল-ডাল ও ধান মজুত করার অপরাধে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ম্যানেজারের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে মামলা রুজু করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. সোহেল আহমেদ। আসামিদের গ্রেফতার সহ আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।


বিবার্তা/রব্বানী/এমবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com