
বান্দরবানের লামা উপজেলায় জমি জবর দখলে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক পরিবারের ৬ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভা এলাকার বড় নুনারবিল পাড়ায়।
আহতরা হলেন- নুনারবিল পাড়ার বাসিন্দা মৃত মো. আলতাফ হোসেনের ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম (৭২), তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৬৫), ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৮), এনামুল হক (৪৮), নাতি আরিফুল ইসলাম (৩৫) ও তৌহিদুল ইসলাম (২১)।
২০ নভেম্বর, বুধবার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করেন (সিআর মামলা নং ৩৭৩/২০২৪ইং)।
মামলায় উল্লিখিত বিবাদীরা হলেন- বড় নুনারবিল পাড়ার বাসিন্দা মৃত নুরুল কবিরের ছেলে নাছির উদ্দিন (৪০), জসিম উদ্দিন (৩৫), সাহাব উদ্দিন (২৮), মেয়ে মনোয়ারা বেগম (৩৭), খালেদা বেগম (৪২) ও জেসমিন আক্তার (৩০)।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ২৯৩নং ছাগলখাইয়া মৌজার বিএস ১৪৬নং খতিয়ানের ৬৩৮নং দাগে মো. সিরাজুল ইসলামের ৭৪ শতক বসত-ভিটা জমি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে জায়গা-জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এ জমির উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই এলাকার প্রতিপক্ষ নাসির উদ্দিন গংদের। তারা বেশ কয়েকবার মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার পরিবারের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে জমি দখলে নেওয়ার অপচেষ্টা করেন নাসির উদ্দিন গংরা। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসির উদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে গত ৬ অক্টোবর ১৪৫ ধারা মোতাবেক (মামলা নং ১৯/২০২৪ইং) পিটিশন দায়ের করেন ভুক্তভোগী মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান।
বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন। কিন্তু ভূমিদস্যু নাসির উদ্দিন গংরা আদালত অবমাননা করে গায়ের জোরে মো. সিরাজুল ইসলামের বসতভিটার জায়গা দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে গত ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংঘবদ্ধ হয়ে হাতে ধারালো দা, লোহার রড, হাতুড়ি, লাঠি ইত্যাদি মারাত্মক দেশীয় অবৈধ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মো. সিরাজুল ইসলামের বাড়ির উঠানে প্রবেশ করে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ কাজ করতে যান।
এসময় মো. সিরাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগমসহ পরিবারের অপরাপর সদস্যরা বাঁধা প্রদান করলে নাসির উদ্দিন গংরা ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে সিরাজুল ইসলামদের উপর হামলা করেন নাসির উদ্দিনরা। এতে ১ বৃদ্ধ নারীসহ ৬ জন আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে মো. সিরাজুল ইসলামকে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হলেও আরিফুল ইসলাম ও রোকেয়া বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাদের কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের নাসির উদ্দিনও আহত হয় বলে জানা গেছে।
হামলার শিকার সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রতিপক্ষ নাসির উদ্দিনরা আমার বসত ভিটার জমি জবর দখলের জন্য আসলে আমরা বাঁধা প্রদান করি। এতে নাসির উদ্দিনরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলা করেন। হামলায় আমিসহ আমার স্ত্রী, ছেলে ও নাতিরা গুরুতর আহত হয়। এর আগেও নাসির উদ্দিনরা জমি তাদের দখলে নিতে আমাদের উপর মামলা হামলা ও নানাভাবে হয়রানি করেছে।
তবে নাসির উদ্দিন গংরা বলেন, আমরা আমাদের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়েছিলাম। এতে সিরাজুল ইসলামরা আমাদের উপর হামলা করেন।
জমি নিয়ে মারামারির ঘটনায় ভুক্তভোগী সিরাজুল ইসলাম কর্তৃক বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি অভিযোগ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শাহাদাৎ হোসেন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা মতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিবার্তা/আরমান/রোমেল/এনএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]