
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক স্কুল থেকে বের করে নিয়ে মানববন্ধন করার অভিযোগ উঠেছে। ১৭ নভেম্বর, রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে তৎকালীন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার স্কুলের ভবন দখল করে তিনতলা বিশিষ্ট দলীয় কার্যালয় বানায়। গত ৫ আগস্টের পর কার্যালয়টি অযথা পড়ে আছে এবং স্কুলকে কোন প্রকার ভাড়াও প্রদান করেন না। পরিত্যক্ত আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিবেটিং ক্লাব করার জন্য সুপারিশ করেন ওই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আজিবর রহমান। এর বিরোধিতা করেন আরেক জুনিয়র শিক্ষক শামীম উদ্দিন। এ নিয়ে দুই শিক্ষকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। যা ওই দিনই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সকলকে ডেকে মীমাংসা করে দেন।
কিন্তু পরে শিক্ষক শামীম উদ্দিন স্থানীয় কয়েকজন যুবককে ডেকে আজিবর রহমানের বিরুদ্ধে ভিডিও বক্তব্য দিয়ে দোষারোপ করেন। হঠাৎ রবিবার সকালে বহিরাগতরা স্কুল চলাকালীন সময়ে প্রবেশ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মানববন্ধনে নিয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী মোবারক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও এ মানববন্ধনে নিয়ে আসে তারা। এ সময় এক স্যারের সাথে বাকবিতণ্ডা হয় বহিরাগতদের। এতে নেতৃত্ব দেন সদ্য ঘোষিত উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহবায়ক জালাল উদ্দিন ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শিপুল আহমেদ। তবে কী কারণে মানববন্ধন সেটিও শিক্ষার্থীরা জানে না। এ নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া পাশ্ববর্তী মোবরক আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ক দাস জানায়, সে কী কারণে মানববন্ধনে এসেছে জানে না। এক বড় ভাইয়ের ডাকে এখানে এসেছে।
সরকারি ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন জানান, তাদেরকে জোরপূর্বক হুমকি দিয়ে মানববন্ধনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা তারা মেনে নিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়টির এক শিক্ষক জানায়, এক জায়গায় থাকলে অনেক কিছুই হয়। তাছাড়া দুই শিক্ষকের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়েছিল। এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু এটা নিয়ে মানববন্ধন করিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছে। এতে স্কুলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাইরের স্কুলের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা এসে আমাদের শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বায়েজীদ হোসেনের বাবা বলেন, এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব শিক্ষকদের। এখানে শিক্ষকদের মধ্যে ঝামেলা হলে প্রধান শিক্ষক আছে, ইউএনও আছে। কিন্তু বহিরাগতরা এসে কেন তার ছেলেকে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হলো। তিনি এ ঘটনার বিচার চান।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন তোতা বলেন, মানববন্ধন কেন হয়েছে সেটি আমরা জানি না। গত বৃহস্পতিবার দুই শিক্ষকের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছিল। সেটি জানার পর স্কুল ছুটি শেষে ওইদিনই নিরসন করা হয়েছে। হঠাৎ রবিবার সকাল ১০ টার দিকে একটা মিছিল নিয়ে আসে। তারা জোরপূর্বক স্কুলের মেইন গেটের তালা খুলতে বাধ্য করে। আমাদের শিক্ষার্থীরা কেউ সেভাবে যায়নি। যারা করেছে তারা বহিরাগত।
বিবার্তা/রায়হান/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]