'জনগণের সংবিধান চাইলে ভবিষ্যতে নতুন করে লিখতে হবে'
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭
'জনগণের সংবিধান চাইলে ভবিষ্যতে নতুন করে লিখতে হবে'
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রকোনোরকমে রাষ্ট্র ও রাজনীতি চালিয়ে নেওয়ার জন্য বর্তমান সংবিধানের সংশোধন করা যেতে পারে বলে অভিমত দিয়েছেন শিক্ষাবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, জনগণের সংবিধান চাইলে ভবিষ্যতে নতুন করে তা লিখতে হবে। আবেগ নয়, যুক্তি দিয়ে সবকিছু বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে নতুন নতুন বিভ্রান্তি তৈরি হবে।


১৫ নভেম্বর, শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক ক্ষমতায়নের জন্য সংবিধান’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে এ কথা বলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক। সিটিজেন পাওয়ার নামে একটি সংগঠন এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে।


সিম্পোজিয়ামে বর্তমান সংবিধানের নানা অসংগতি, ঘাটতি ও কী কী সংযোজন করা যায়, সে বিষয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহাম্মদ বসিরুল হক সিনহা ও মাসুদ জাকারিয়া। প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত মর্যাদা, নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান লাভের অধিকারকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে নতুন সংবিধানে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলা হয় প্রবন্ধে। এ ছাড়া বাক্‌স্বাধীনতা, ভিন্নমত ও প্রতিবাদ জানানোর অধিকার নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়।


আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দেশ কোনোরকমে চালানোর জন্য এখনকার সংবিধানের সংশোধন করা যেতে পারে। তিনি একটি পুরোনো ইঞ্জিন-যন্ত্রপাতি দিয়ে চলা গাড়ির উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আপনি চট্টগ্রামে যাচ্ছেন। যেকোনো সময় পথে গাড়ি বিকল হবে। মাঝপথে সারাই করে গাড়িটি সচল করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। সংবিধানের সংশোধনটা এমনই। ভবিষ্যতে পরিপূর্ণ সংবিধান তৈরি করতে হলে পুনরায় লিখতে হবে।’


সিম্পোজিয়ামে অধিকাংশ বক্তা নতুন করে সংবিধান প্রণয়নের কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধিও ছিলেন। শিক্ষার্থী জাওয়াদ হাসান বলেন, ‘আমরা যারা জুলাই বিপ্লবে অংশ নিয়েছি, তারা বর্তমান সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রদ্রোহী। তাহলে কেন সেই সংবিধান বহাল থাকবে?’


আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান জনগণের মতামতের (ম্যান্ডেট) নিয়ে হয়নি। পাকিস্তান আমলে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। এখন নতুন সংবিধান করতে হবে। বাংলাদেশকে ‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ করতে হবে। তবে এখানে প্রথম রিপাবলিককে অস্বীকার করা হবে না।


বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, আগামী শীতে নির্বাচন না হলে আন্দোলন শুরু হয়ে যাবে। সুতরাং সংবিধানের পুনর্লিখন না করে মৌলিক কিছু সংশোধন করা যেতে পারে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ১৬ পৃষ্ঠার। চীনের ২৬ পৃষ্ঠার। আর ইরানের সংবিধান ৩৫ পৃষ্ঠার। এই দেশগুলোতে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সংবিধান গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের ২৫০ পৃষ্ঠার সংবিধানের জন্য কেন এত মায়া, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।


অধ্যাপক রুহুল আমিন আরও বলেন, বর্তমান সরকারকে আর বিনা প্রশ্নে (ফ্রি রাইডিং) ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। তিন মাস চলে গেছে; কিন্তু এখনো সংবিধান প্রণয়নের কিছুই হয়নি।


বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার নয়। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই আছে, এটা ভুলে গেলে চলবে না। সংবিধান তৈরির দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com