পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে
দৌলতপুরে ২৪ কোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কায় কৃষক
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০:৪১
দৌলতপুরে ২৪ কোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কায় কৃষক
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩৫ গ্রামের মানুষ। ডুবছে কৃষকের উঠতি ফসল ও আবাদি ক্ষেত। এতে ২৪ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতির শঙ্কায় পড়েছেন বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের কৃষক। বন্ধ হয়েছে চিলমারীর চরের বেশ কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষের পাঠদান কার্যক্রম। পদ্মার ভাঙন ও বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী চরবাসী।


ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে দৌলতপুরের চার ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। এরমধ্যে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যাকবলিত এসব নিম্নাঞ্চলের জমিতে চাষ করা মাসকলাইয়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে মরিচ, কলা সহ অন্যান্য ফসলেরও।


চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল আহমেদ জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। তাঁরসহ চরের নীচু এলাকার কৃষকদের মাসকলাই ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে বাড়ি ঘরে এখনও পানি উঠেনি।


চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, চরের মাসকলাইয়ের জমি সব ডুবে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ছাড়া মরিচ ও সবজির জমিতেও পানি উঠেছে।


রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চাললের ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে আসায় তারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরের নীচু এলাকায় বসবাসরত শতাধিক বাড়িতে পানি ঢুকেছে। পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাসকলাই চাষিরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এভাবে পানি পাড়তে থাকলে অচিরেই চরের সব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। তবে গতকাল নদীতে পানি স্থিতিশলি ছিল। নতুন করে পানি বাড়েনি বলে তিনি উল্লেখ করেন।


দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুর পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিসে পাওয়া তথ্যে বন্যায় চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমির মাসকলাই পানিতে ডুবেছে। এতে কমপক্ষে ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও মরিচ ৭০ হেক্টর, কলা ৭৩ হেক্টর ও সবজি ১৩ হেক্টরের মতো পানিতে ডুবেছে যার ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে মৌসুমে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকলাইয়ের চাষ হয়েছে।


এদিকে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে যা দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত ছিল। এতে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার যা নিশ্চিত করেছে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ।


তবে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি নিয়ে আশার কথা জানিয়েছেন পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আজকে (বৃহস্পতিবার) থেকে আর পানি বাড়ার শঙ্কা নেই। দু’এক দিন স্থিতিশীল থেকে পানি কমতে শুরু করবে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আর পানি বাড়েনি।


বিবার্তা/শরীফুল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com