
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। তীব্র ভাঙনের ফলে চিলমারী ইউনিয়নে গত ১ সপ্তাহে গৃহহারা হয়েছে অন্তত ১০টি পরিবার, ভাঙ্গনের মুখে বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন ২০ পরিবার। ভেঙে গেছে স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত ৫০টি গাছের বান্ডাল ও শত শত একর আবাদী জমি। হুমকিতে রয়েছে ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত বৈদ্যুতিক সাবমেরিন ক্যাবল।
জানা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চল চিলমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।এতে গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে ইউনিয়নটির শাখাহাতি,মনতোলা ও কড়াইবরিশাল এলাকাসুমহের ১০টি বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এছাড়াও স্থানীয় উদ্যোগে ২০লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫০টি গাছের বান্ডাল ও শত শত একর আবাদী জমি নদীতে ভেঙে গেছে।
এতে হুমকিতে রয়েছে ইউনিয়নের শাখাহাতি এলাকায় অবস্থিত শাখাহাতি ১নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,শাখাহাতি কমিউনিটি ক্লিনিক,মনতোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বৈদ্যতিক সাবমেরিন ক্যাবল। উজানে ব্রহ্মপুত্র নদের মাঝ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ইউনিয়নটি তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
শনিবার সরেজমিনে ইউনিয়নটি মনতোলা এলাকার শাহিন মিয়া, মোখলেছুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, মুকুল মিয়া, তারা মিয়া, জামাল মিয়াসহ অনেককে তাদের বাড়ি-ঘর এবং দোকান ভেঙে অন্যত্র নিতে দেখা গেছে। অনেকে কেটে নিচ্ছে তাদের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও বাঁশ।
এসময় নুর মোহাম্মদের স্ত্রী রজিনা বেগম বলেন, নদীর ভাঙন এত তীব্র হয়েছে যে, ঘর-বাড়ি ভেঙে নেয়ারও সময় দেয় না। সামনে নদী, তাই আমরা ঘর ভাঙলাম। কিন্তু কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিব তার ঠিকানা নেই। আপাতত ঘরগুলো ভেঙে পাশ্ববর্তী রাস্তায় নিয়ে রাখছি।
এসময় জাইনুদ্দিন মিয়া ও মেহেদী হাসানসহ অনেকে জানান, গত এক সপ্তাহের নদী ভাঙনে এই এলাকায় অন্তত ১০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে হয়তো এক সময় মানচিত্র থেকে চিলমারী ইউনিয়নটি হারিয়ে যাবে। নদী ভাঙন প্রতিরোধ ও সাবমেরিন ক্যাবল পুনঃমেরামতের জন্য জোড় দাবি জানান তারা।
ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যাক্তিগত প্রচেষ্টায় ও স্থানীয়দের সহায়তায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন ঠেকাতে গাছ ও বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ৬০টি বান্ডাল তৈরি করা হয়েছিল। নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারন করায় প্রায় ৫০টি বান্ডাল ছুটে যাওয়ার কথা জানা গেছে।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান মো.আমিনুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে গত ১ সপ্তাহে ভাঙন রক্ষার্থে নির্মিত ৫০টি বান্ডাল ১০টি বাড়ি ও শত শত একর আবাদী জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যায়ে স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলটি ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে গেলেও সংশ্লিষ্ট দফতরের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই।
বিবার্তা/রাফি/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]