
সংসারের অভাব অনাটন গত প্রায় এক বছর আগে বাবা মাকে ছেড়ে সৌদিতে পাড়ি জমায় এনামুল ইসলাম (২৩)। সেখানে বৈদ্যুতিক টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন এনামুল। স্বপ্ন ছিল তার উপার্জনে এক দিন সংসারের অভাব অনাটন দূর হবে। তার পাঠানো টাকায় অভাব কাটিয়ে বাবা-মায়ের শেষ সময়টা কাটবে হাসিখুশিতে। তবে শেষ পর্যন্ত লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলেন এনামুল।
যে বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোঁটাতে গিয়েছিলেন প্রবাসে, সেই বাবা-মায়ের চোখ ভিজছে আজ অশ্রু জলে।
নিহত এনামুল ইসলাম (২৩) দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর (খামার) গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। পরিবারের ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সে ছিল ছোট।
৩১ মে, শুক্রবার রাতে মারা যাওয়ার ২ মাস ১৩ দিন পরে ফ্রিজিং গাড়িতে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী এনামুলের লাশ এসেছে গ্রামের বাড়িতে।
জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এর সহযোগীতায় শুক্রবার বিকেলে বিমানযোগে এনামুলের মৃতদেহ সৌদি থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়। আজ রাত ১১টায় নিজ গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ সৌদি আরবে কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক শর্ট খেয়ে মারা যায় এনামুল। তবে নানা জটিলতায় সেখানেই ছিল মৃতদেহ। অসহায় পরিবার ছেলের লাশ ফেরত পাবার জন্য দিনের পর দিন চোখের পানি ঝরিয়েছেন। ঘুরেছেন বিভিন্ন দফতরের বারান্দায়। তাতেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। তার সহযোগীতায় মারা যাওয়ার ২ মাস ১৩ দিন পর গ্রামের বাড়িতে আসলো এনামুলের লাশ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্সে কফিনে মোড়ানো সন্তানের লাশ বাড়িতে আসার পর শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারটিতে। কান্নায় ভেঙ্গে পরে পুরো গ্রাম। মারা যাওয়ার দীর্ঘদিন পর গ্রামের ছেলের মৃতদেহ দেখতে নিহতের বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন গ্রামবাসী। অপরদিকে গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে চলছে কবর খনন ও জানাজা নামাজের প্রক্রিয়া।
নিহত এনামুলের প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। একদিকে সন্তান হারানোর শোক। অপরদিকে মারা যাওয়া সন্তানের লাশ ফেরত না পাবার শোক। পরিবারটি গত দুই মাসের অধিক সময় ধরে লাশ দেশে আনতে নানা চেষ্টা চালিয়েছে। তবে কোন চেষ্টা কাজে লাগেনি। সর্বশেষ আমাদের এমপির সহযোগীতায় আজ (শুক্রবার) এনামুলের লাশ বাড়িতে এসেছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক মুঠোফোনে বলেন, প্রবাসী এনামুল ইসলামের পরিবার আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল। আমার এলাকার সন্তানের মৃতদেহ সৌদিতে পড়ে আছে শুনে আমি সৌদি আরবে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করে লাশ দ্রুত দেশে ফেরানোর পদক্ষেপ নেই। নিহত প্রবাসী পরিবারের যেকোন সমস্যায় আমি তাদের পাশে আছি এবং থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
বিবার্তা/রব্বানী/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]