
নাফনদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্ত এলাকা থেকে ১২ বাংলাদেশী জেলেকে অপহরণের পর ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টার পর তাদের ছেড়ে দেন। রাত ৮ টার দিকে ১২ বাংলাদেশিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, উদ্ধার হওয়া জেলেরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন।
তিনি জানান, আরকান আর্মি আমাদেরকে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে ধরে নিয়ে গেছিল। জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করে বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুরের দিকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে সন্ধ্যা ৭ টায় সীমান্তের নাফনদীর বাংলাদেশ অংশের বালুখালীর একটি এলাকায় ১২ জনকে ছেড়ে দিয়ে তারা চলে যায়। আমরা সবাই সুস্থ আছি।
গত বুধবার সকাল ৮ টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্তে নাফনদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়।
অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, জেলেরা নাফনদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
এম গফুর উদ্দিন বলেন, আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল। কারণ রহমতেরবিল সীমান্তে মিয়ানমার অংশে এখন সেদেশের কোনো সরকারী বাহিনী নেই। যারা ছিলো তাঁরা সবাই সংঘাতের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিলো। এখন রহমতেরবিল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমানের ওই এলাকাটি আরাকান আর্মির দখলেই আছে। এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে এম গফুর উদ্দিন খবর পেয়েছেন আরাকান আর্মিই জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান।
ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন, পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জানে আলম (৩৫), মৃত আবদুস ছালামের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০), মৃত জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৭) ও সাইফুল ইসলাম (৩০), মৃত আলী আহমদের ছেলে আয়ুবুল ইসলাম (৩০), আবু তাহেরের ছেলে শাহীন (২০), গৌজঘোনা এলাকার আলী আহমদের ছেলে আবদুর রহিম (৫২), পুটিবনিয়া এলাকার মৃত মিয়া হোসেনের ছেলে ওসমান গণী (৩০), মৃত আবুল শামার ছেলে ওসমান (৩৫), আয়ুব ইসলামের ছেলে আবুল হাশিম (৩৫), টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার রোমান আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (৩২) ও দৈংগ্যাকাটা এলাকার হোসাইন আহমদ (৫৫)।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তানভীর হোসেন প্রতিবেদক কে জানান, যেহেতু সীমান্ত এলাকা থেকেই অপহরণের শিকার হয়েছে তাঁরা, তাই গতকালকে রাতেই বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে এবং তাঁদেরকে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছিল।
আরাকান আর্মির নাম সরাসরি না বললেও তানভীর হোসেন বলেন, তিনিও শুনেছেন মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনই জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছিল।
এদিকে ১২ বাংলাদেশি অপহৃতদের পরিবার বুধবার থেকে উৎকণ্ঠায় ছিল। যেকোনো মূল্যে অপহরণের শিকার জেলেদের অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়ে আসছিল তাদের পরিবারের। এবিষয়ে বিজিবির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিবার্তা/ফরহাদ/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]