রমজানে ক্রেতাদের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:২০
রমজানে ক্রেতাদের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রমজান মাসে চুয়াডাঙ্গাবাসীর অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্যপণ্যের দাম। প্রতিদিনই বাড়ছে কোনো না কোনো পণ্যের দাম। এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ।


জেলায় রোজা শুরুর আগে থেকে বেড়েছে সব ধরনের মাছ-মাংস, ডাল ও মসলার। এরই মধ্যে বেড়েছে সবজির দামও। রোজার মাস শুরু হতে না হতে যেন আগুন লেগেছে নিত্যপণ্যের বাজারে।


রমজানের প্রথম দিন থেকেই চুয়াডাঙ্গার বাজারে কেজি প্রতি ৫০ টাকা বাড়িয়ে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে। গরুর মাংসের দাম বাড়ানোর পিছনে বিক্রেতারা বলছেন, হাটে গরুর দাম বেশি তাই বাজারেও মাংসের দাম চড়া। একইভাবে খাসির মাংসও ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।


এর আগে গত ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনের সঙ্গে মাংস ব্যবসায়ীদের অনুষ্ঠিত সভায় প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকা ও খাশির মাংসের দাম ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে ব্যবসায়ীরা সে দাম মানছেন না। সিন্ডিকেট তৈরি করে বাড়ানো দামেই বিক্রি করছেন গরু ও খাশির মাংস।


মাছের বাজারে সরবরাহ ভালো থাকলেও সব ধরনের মাছের দাম বাড়তি। ২৫০ টাকা কেজির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়, শিং মাছ মাঝারি ধরনের ৪০০ টাকা যা রোজার আগে ছিল ৩৫০ টাকা কেজি।


কেজিতে ৪০ টাকা করে দাম বেড়েছে ব্রয়লার, সোনালি, প্যারিস ও দেশি মুরগির।


ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০ টাকা যা ছিল ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা যা রোজার আগে বিক্রি হচ্ছিল ২৪০ টাকা, আর প্যারেন্ট মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকা কেজি দরে রোজার আগে যা ছিল ৩৩০ টাকা।


অস্বস্তি রয়েছে মসলাসহ সব ধরনের প্যাকেটজাত পণ্যের দামেও। সব ধরনের ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫-৭ টাকা পর্যন্ত।


চিকন মুগের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় যার দাম রোজার আগে ছিল ১৫৫ টাকা, ছোলার ডাল প্রকারভেদে ১২০-১৩০ টাকা রোজার আগে ছিল ৯০-৯৫ টাকা, আর বুটের ডাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা যা রোজার আগে ছিল ৮০-৯০ টাকার মধ্যে।


রোজার মাস উপলক্ষ্যে সবজির দামও বাড়তি। এর মধ্যে বাজারে নতুন আসা গ্রীষ্মকালীন সবজি মোটা সাইজের সজনে ডাটা কেজি ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, আর ছোট সাইজের সজনের ডাটা ৩০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস লেবু বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকায়। যে লেবু এ বাজারে রোজার আগে হালি বিক্রি হত ১০ টাকা।


তেল-পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচ ও আদা-রসুনের দাম কমলেও স্বাভাবিক হয়নি শসার বাজার। প্রতি কেজিতে শসার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। যার দাম রোজার আগে ছিল প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।


রোজার মাসে খাদ্যপণ্যের চাহিদা তুলনামূলক একটু বেশি হয়। সেই সুযোগে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম ইচ্ছা মতো বাড়িয়ে ভোক্তাদের জিম্মি করে রেখেছেন।


বাজার করতে আসা আবদুল্লা আল মামুন বলেন, রোজার আগে জিনিসের দাম এক ছিল। আজ দেখছি বাজারের আরেক দাম। রোজার মাসে মাছ ও মাংসের দামটা স্বাভাবিক থাকলে সবার জন্য ভালো হত। কিন্তু বাজারের সব জিনিসের দাম লাগামহীন।


আরেক ক্রেতা শফিকুল বলেন, বাজারে গরুর মাংস আর সবজি কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু গরুর মাংস, সবজি ও মুরগির দামও বেশি। জিনিসের দাম যদি এইভাবে বেশি থাকে তাহলে রোজার মাস পার করা কঠিন।


জেলা বাজার মনিটরিং অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, রোজায় বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। মাংসের দাম বেশি। এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে। অচিরেই মাংসসহ সব জিনিসের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে।


বিবার্তা/আসিম/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com